শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছেন।
Published : 14 Nov 2018, 12:20 PM
গত মাসের শেষ দিকে রনিল বিক্রমসিংহকে বরখাস্ত করে বিরোধীদলের নেতা রাজাপাকসেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা।
‘বিতর্কিত’ ওই নিয়োগ নিয়ে বুধবার পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হয়, সেখানেই রাজাপাকসের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাস হয় বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর ওপর সমর্থন তুলে নিয়ে এককালের ঘনিষ্ঠ মিত্র রাজাপাকসেকে ওই পদে বসিয়েছিলেন সিরিসেনা। তার এ পদক্ষেপ পার্লামেন্টে প্রয়োজনীয় সমর্থন পাবে না বুঝতে পেরেই পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে ৫ জানুয়ারি নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে ডিক্রিও জারি করেছিলেন তিনি।
বিরোধী ১০টি রাজনৈতিক দল আদালতে গেলে মঙ্গলবার দেশটির সুপ্রিম কোর্ট প্রেসিডেন্টের ডিক্রিতে স্থগিতাদেশ দেয়। এরপরই বুধবার পার্লামেন্ট বসে। সেখানে রাজাপাকসের বিতর্কিত নিয়োগের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য সম্মতি দিলে স্পিকার কারু জয়সুরিয়া এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেন।
তবে এর মাধ্যমে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনধারী দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) প্রধান রনিল বিক্রমসিংহই ক্ষমতার রেষারেষিতে বিজয়ী হয়েছেন, এমনটা নিশ্চিত হওয়া যাবে না বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী বেছে নেওয়ার ক্ষমতা এখনো প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার হাতেই আছে।
২০০৫ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট থাকা রাজপাকসের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন সিরিসেনা। পরে রাজাপাকসের ছায়া থেকে বেরিয়ে এসে তার বিরুদ্ধেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ান এ ইউপিএফএ নেতা। সেসময় তাকে সমর্থন দেন বিক্রমসিংহ; পরে সংসদ নির্বাচনেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে ইউএনপি।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দিল্লির সঙ্গে ইউএনপির ঘনিষ্ঠতা এবং সিরিসেনাকে হত্যায় ‘ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থার জড়িত থাকার অভিযোগ’ নিয়ে দুই দলের ঘনিষ্ঠতায় ছেদ পড়ে। তারপরই এক সময়ের মিত্র রাজাপাকসের দিকে ঝুঁকে পড়েন সিরিসেনা।
ক্ষমতাকেন্দ্রীক রেষারেষির এক পর্যায়ে গত ২৬ অক্টোবর সিরিসেনার ইউপিএফএ ক্ষমতাসীন জোট সরকার ছেড়ে দিলে বিক্রমসিংহকে বরখাস্ত করেন প্রেসিডেন্ট। যা দেশটিতে রাজনৈতিক সঙ্কট তীব্রতর করে তোলে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ পড়ানো হলেও ক্ষমতা ছাড়তে রাজি হননি বিক্রমসিংহ। নিজেকে ‘বৈধ প্রধানমন্ত্রী’ দাবি করে সিরিসেনার পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি।