শরীর ও মনের ক্লান্তি দূর করার জন্য দরকার পর্যাপ্ত ঘুম। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে সর্দিলাগা বা অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়িয়ে দেয়।
Published : 23 Apr 2016, 04:57 PM
গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, যেসব ব্যক্তি রাতে পাঁচ ঘন্টা বা তার কম ঘুমান তাদের ঠাণ্ডা লাগা ও অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি সাত ঘন্টা বা তার বেশি ঘুমানো ব্যক্তিদের চাইতে যথাক্রমে ১৭ শতাংশ ও ৫১ শতাংশ বেশি।
গবেষণাপত্রটির প্রধান লেখক, ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার মনোরোগবিদ্যার সহকারী অধ্যাপক এরিক প্রদার হাফিংটন পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “কার্যকর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে ঘুম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।”
তিনি আরও বলেন, “পূর্ববর্তী গবেষণাগুলোতে দেখা গেছে, সর্দি লাগার প্রবণতা কম ঘুমের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। কয়েক হাজার ব্যক্তির ওপর চালানো নতুন গবেষণাতেও দেখা গেছে ঘুমের কম দৈর্ঘ্য ও অন্যান্য ঘুমের সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের অসুস্থ হওয়ার হার একইভাবে সম্পর্কযুক্ত।”
“গবেষণাটি গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে, ঠাণ্ডার বিরুদ্ধে ঘুম কীভাবে দেহকে প্রস্তুত করে— তা পূর্ববর্তী গবেষণাগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে তার জীববৈজ্ঞানিক একটি ব্যাখ্যা এ থেকে দাঁড় করানো যায়। স্বাস্থ্যপ্রদ অভ্যাসগুলোর মধ্যে ঘুমকে বরাবরই অবহেলা করা হয়েছে।”
গবেষকগণ ২২ হাজার ৭২৬ জন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির অংশগ্রহণে একটি জরিপের ফলাফল ব্যবহার করেন যার সময়কার ছিল ২০০৫ সাল থেকে ২০১২ সাল। সেখানে অংশগ্রহণকারীদের কাছে জানতে চাওয়া হয় বিগত ৩০ দিনের মধ্যে তাদের ঘুমের দৈর্ঘ্য কেমন ছিল এবং বুকে সর্দি লাগা বা সংক্রমণ (ফ্লু, নিউমোনিয়া, কানে সংক্রমণ) হয়েছিল কিনা।
প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, যারা দৈনিক পাঁচ ঘণ্টা বা তার কম সময় ঘুমিয়েছেন, তাদের কানে সংক্রমণের সম্ভাবনা, দৈনিক সাত-আট ঘণ্টা ঘুমানো ব্যক্তিদের তুলনায় ৫১ শতাংশ বেশি। আরও দেখা গেছে, যাদের ঘুমের সমস্যা ছিল, বিগত ৩০ দিনে তাদের সর্দিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ১৮ শতাংশ এবং সংক্রমণের সম্ভাবনা ৮৮ শতাংশ বেশি ছিল। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যারা ঘুমের ব্যাঘাতের কথা উল্লেখ করেছেন, তাদেরও অসুস্থ হয়ে যাওয়ার প্রবণতা ছিল বেশি।
গবেষকরা আরও সিদ্ধান্তে এসেছেন যে, রোগ নির্ণয়ে যেমন প্রথমেই রোগীর রক্তচাপ ও ওজন মাপা হয়, স্বাস্থ্যসেবায় ঠিক সেরকম গুরুত্ব সহকারে ঘুমের মূল্যায়ন করা জরুরি।
প্রদার বলেন, “অন্যান্য স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলোর তুলনায় ঘুমকে বরাবরই অবহেলা করা হয়েছে। ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য মৌলিক একটি বিষয় হতে পারে। এবং আমাদের স্বাস্থ্য ঘুমের ওপর নির্ভরশীল হতে পারে।”
ছবি: রয়টার্স।