একটি সুন্দর সকালের জন্য

দিনের প্রথম প্রহর খুব গুরুত্বপূর্ণ। সকাল যদি ঠিকভাবে শুরু না করা যায় তবে সারাটা দিনই মাটি হয়ে যায়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 April 2016, 10:23 AM
Updated : 12 April 2016, 10:30 AM

কে কীভাবে দিন শুরু করে এর কোনো সাধারণ নীতি নেই। সব মানুষের সকালের ঘুম থেকে ওঠার সময়ও এক নয়। কেউ হয়ত সকালে উঠে ব্যায়াম করেন, কেউ পেপার নিয়ে নাস্তার টেবিলে যান, কেউ সূর্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামেন কে কতো আগে উঠতে পারে আর কেউ কেউ তো সূর্য মাঝ আকাশে না পৌঁছানোর আগে চোখই খুলতে পারেন না।

দিন যে যেভাবেই শুরু করুন না কেনো, দিনের শুরুতে করা কাজগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষজ্ঞরা বলেন এই সময়ে করা যে কোনো ভুল কাজ নষ্ট করে দিতে পারে পুরো দিন। একটি লাইফস্টাইল ওয়েবসাইট সেরকম দিনের শুরুতেই নষ্টের গোড়া কাজগুলোর তালিকা প্রকাশ করেছে—

অ্যালার্মের তন্ত্রা বোতামে চাপ দেওয়া: অ্যালার্ম বাজলেই ‘স্নুজ বাটন’য়ে একটা চাপ দিয়ে আর ১০টা মিনিট ঘুমিয়ে থাকতে সবারই মন চায়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন এটা শরীরের পক্ষে খুব ক্ষতিকর। একবার ঘুম ভাঙার পরে আবার অল্প একটু ঘুমাতে যেতে চাইলে সেটা ঘুমের একটা নতুন চক্রকে শুরু করা হয়। ১০ মিনিটে এই চক্রের পরিসমাপ্তি ঘটা সম্ভব নয়। যার ফলে সারাটা দিন বেশ ঝিমুনি ভাব লেগেই থাকে।

এই সমস্যা সমাধান করতে চাইলে অ্যালার্ম বাজা মাত্র বিছানা ছাড়তে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় ঘুমের একটা নির্দিষ্ট সময় বেছে নিলে এবং ঠিক সময়মতো ঘুমিয়ে পরলে। এতে সকালে ঘুমটা পূর্ণ চক্র পূরণ করার সুযোগ পাবে আর দ্বিতীয় কোনো চক্রে অযথাই ঢুকতে হবে না। 

ইমেইল না দেখা: ঘুম থেকে উঠে নিজের মতো সুন্দর করে দিনের শুরু উপভোগ করা উচিত। সকালে উঠেই যদি ইমেইল দেখে শুরু করা হয় তবে নিজের শুরুটাই কেজো হয়। ইমেইলে থাকা সমস্যা, চাপ দিনের প্রথম প্রহরেই মাথায় চেপে বসে। বিশেষজ্ঞদের মতে কোনো ইমেইলই এত জরুরি হয় না যে সকাল হতেই সেগুলোর উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। অন্তত ৪৫ মিনিট ইমেইলগুলো অপেক্ষা করতেই পারে।

বিছানা না গুছিয়ে ওঠা: সকালে ঘুম থেকে উঠে অনেকেই সঙ্গে সঙ্গে বিছানা গোছান না। এটা নিঃসন্দেহে একটা বাজে অভ্যাস। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন সকালে ঘুম থেকে উঠেই বিছানা গোছালে সারাদিন পরিপাটি থাকার একটা সংকেত মস্তিষ্কে যায়। এই সংকেত সারাদিন সব কাজ গুছিয়ে করার একটা আবেশ তৈরি করে। বিছানা না গুছিয়ে উঠলে ঠিক বিপরীত ঘটনাটাই ঘটে।

এক কাপ কফি: সকাল সকাল চোখ খুলেই এক কাপ কফি খায় এমন লোকের সংখ্যা নেহায়েত কম না। সাধারণ একটা বিশ্বাস সবার মধ্যেই রয়েছে যে চাঙ্গা হওয়ার জন্য সকালে এক কাপ কফি খাওয়া দরকার।

বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন সকালে কফি খেলে হিতে বিপরীত হয়। কেননা, ঘুম থেকে ওঠার পরে শরীর নিজের মধ্যেই চাঙ্গা হওয়ার হরমোন তৈরি করে। এর আগেই যদি এক কাপ কফি খেয়ে ফেলা হয় তবে শরীর বিভ্রান্ত হয়ে পরে এবং যা প্রয়োজন তার থেকে কম হরমোন নিঃসরণ ঘটায়। ফলে শরীর দিনের বাকি অংশে সহজেই নিস্তেজ হয়ে যায়। 

অন্ধরকার থেকে শুরু করা: সকালে প্রথমেই উজ্জ্বল আলোর কাছে কেউ কেউ যেতে রাজি হন না। অনেকেই মনে করেন আলোর উপস্থিতি আস্তে আস্তে আসাই ভালো। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুরুটা যদি অন্ধকার থেকে হয় তবে মস্তিষ্কের মধ্যে একটা রাতের স্মৃতি থেকে যায়। তাই শুরুতেই দিনটি আলস্যের দিকে যেতে থাকে।

সকালে ঘুম থেকে উঠেই তীব্র আলোর মুখোমুখি হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এমনকি যদি সূর্য ওঠার আগেই ঘুম ভাঙে তবে ঘরের আলো জ্বালিয়ে চোখকে আলো দেখাতে হবে।

একটির পরে একটি: সকালে উঠে আমরা পানি খাওয়া, গান শোনা এবং বন্ধুর সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ সারার কাজগুলো একই সঙ্গে করতে পারি। তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি এটাকেই রুটিন না বানিয়ে ফেলি। সকালের কাজগুলো খুব গোছানো এবং সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত। তাই কাজগুলো এমন হতে পারে, উঠেই পানি খাওয়া হল, নাস্তা করতে করতে গান শুনে কাজে যাওয়ার পথে বন্ধুর সঙ্গে আলাপ সেরে ফেলা গেল।

বিশেষজ্ঞরা বলেন সকালে আমরা সারাদিনের একটা কাজের তালিকা নিয়ে ঘুম থেকে উঠি। তবে একসঙ্গে সেগুলো করতে গিয়ে সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে হিমশিম খাই। এতে তালিকার অনেক কাজই বাকি পড়ে থাকে। তাই একটার পর একটা কাজ করে দিনটাকে সফল করে তোলা যায়।

ছবি: রয়টার্স।