লিলি খুব খুশি। বাংলাদেশ থেকে ওর চিঠি এসেছে। চিঠি দিয়েছে ওর কাজিন, মানে চাচাতো বোন।
Published : 11 Jun 2019, 04:11 PM
বোনের নাম মিলি। লিলির সঙ্গেই মিল করে রাখা নাম মিলি।
লিলির বয়স আট। মিলির বয়স ছয়।
লিলি কখনও মিলিকে সামনাসামনি দেখেনি। কারণ মিলি থাকে বাংলাদেশে, লিলি থাকে যুক্তরাষ্ট্রে।
মিলি লিলিকে ছবি এঁকে পাঠায়। আর পাঠায় বাংলাদেশি চুড়ি। লিলিও মিলিকে ছবি পাঠায়। আর পাঠায় যুক্তরাষ্ট্রের চকোলেট।
এবার মিলি ছবির সঙ্গে চিঠিও পাঠিয়েছে। তবে লিলি সে চিঠি পড়তে পারে না। কারণ সে বাংলা পড়তে পারে না। লিলির যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলে বাংলা শেখায় না।
লিলির খুব মন খারাপ হয়। ভাবে, কিভাবে এ চিঠিটা পড়বে সে?
তখন লিলি তার মা সুজানের কাছে যায়। তবে সুজানও চিঠিটা পড়তে পারে না। কারণ সুজান আমেরিকান, তিনি বাংলা জানেন না।
লিলির বাবা বাংলা পড়তে পারেন। তবে তিনি অফিসের কাজে গিয়েছেন শিকাগোতে। দুদিন পর আসবেন।
লিলি দুদিন পর চিঠি পড়তে পারবে ভেবে মন খারাপ করে বসে রইল।
একটু ভাবার পর লিলির মা বললেন, ‘চলো আমরা তোমার ববি খালার বাসায় যাই। উনি চিঠি পড়তে পারবেন।’
লিলি খুশিতে নেচে উঠল। মাকে চুমু দিয়ে বলল, ‘তুমি খুব ভাল, মা!’
উইকডেতে ববি খালা লিলি আর সুজানকে দেখে অবাক হলেন। খুব খুশিও হলেন।
তিনি বললেন, ‘তোমরা আজ রাতে খেয়ে যাবে। কাবাব বানিয়েছি।’
লিলি তো খুব খুশি। কাবাব সে খুব ভালবাসে। চিঠিও পড়া হবে, কাবাবও খাওয়া হবে।
চিঠির কথা বলতেই ববি খালা সাকিবকে ডাক দিলেন।
সাকিব হলো ববি খালার ছেলে। ওর বয়সও আট।
ববি খালা বললেন, ‘সাকিব বাংলা পড়া শিখছে। দেখা যাক ও চিঠিটা পড়তে পারে কিনা!’
লিলি তো অবাক। ভাবে, ‘সাকিবও আমেরিকার স্কুলে পড়ে। ও বাংলা পড়া শিখল কোথায়?’
ববি খালা জানান, সাকিবকে খালাই বাংলা পড়াতেন। তবে কিছুদিন হলো প্রতি রোববার সাকিব বাংলা স্কুলে যায়। ওখানে আরও অনেক ছেলেমেয়ের সঙ্গে বাংলা শিখে সে। সেটা নাকি খুব মজা।
লিলি ভাবল, সেও বাংলা স্কুলে যাবে। তাহলে সে নিজেই মিলির চিঠি পড়তে পারবে। মিলিকে চিঠির জবাবও দিতে পারবে।
অবশেষে, মিলির চিঠি পড়া হলো। কি মন ভাল করা চিঠি!
‘প্রিয় লিলি আপু,
তুমি কেমন আছ? আমি ভাল আছি।
তোমার কথা অনেক মনে হয়। তুমি বাংলাদেশে বেড়াতে এসো।
আমি তোমাকে খুব ভালবাসি। চাচা-চাচীকে আমার সালাম দিও।
ইতি,
মিলি
লেখক পরিচিতি: কাজী প্রিয়াংকা সিলমীর জন্ম ঢাকায়। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াতে জনস্বাস্থ্য বিষয়ে অধ্যায়নরত। বই পড়তে, ভ্রমণ করতে, পাহাড় বাইতে আর নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে ভালবাসেন। ছুটির দিনে প্রবাসী বাঙালি শিশুদের স্কুলে শিক্ষকতা করেন। সেখান থেকেই সহজ ভাষায় প্রবাসী শিশুদের নিয়ে গল্প লেখার আগ্রহ। |
কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা [email protected] । সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |