ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে আট মাসের বেশি সময় ধরে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিয়ে ক্রমেই সুস্থ হয়ে উঠার খবর দিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের গানের অগ্রগণ্য সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর।
Published : 20 May 2020, 03:32 PM
সিঙ্গাপুর থেকে বুধবার দুপুরে টেলিফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সবার প্রার্থনায় আমি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছি; আগের তুলনায় আমার শারীরিক অবস্থা বেশ ভালো হয়েছে। চিকিৎসরা আমাকে দেশে ফেরার অনুমতি দিয়েছেন।”
দেশে ফিরতে যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে রাখলেও করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ফ্লাইট জটিলতায় এখনও ফিরতে পারেননি তিনি।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে জুনের প্রথম সপ্তাহে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরবেন বলে জানালেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এ সংগীতশিল্পী।
এবারের মতো দেশে ফিরলেও চেকআপের জন্য তিন মাস পর পর সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে তাকে যেতে হবে; চিকিৎসকদের পরামর্শে নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে জীবনযাপন করতে হবে।
গত বছরের ৯ সেপ্টেস্বর শরীরের নানা জটিলতা নিয়ে সিঙ্গাপুর চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন তিনি।
শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তার শরীরে ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ার পর থেকেই সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি।
আট মাসেরও বেশি সময় ধরে সিঙ্গাপুর অবস্থান করছেন এন্ড্রু কিশোর; তার সঙ্গে আছেন স্ত্রী লিপিকা এন্ড্রু।
ছয়টি ধাপে তাকে মোট ২৪টি কেমোথেরাপি দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসা শেষে হাসপাতালের পাশে একটি ভাড়া বাসায় উঠেছেন; আপাতত তিনি বিশ্রামে রয়েছেন।
অবসরে বাংলাদেশের ঘনিষ্টজনদের সঙ্গে ফোনে কথা বলছেন; দেশে চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিরও খোঁজখবর নিচ্ছেন বলে জানান এ সংগীতশিল্পী।
তার শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে চিকিৎসার জন্য ১০ লাখ টাকা সহায়তা করেছিলেন।
ক্যানসার ধরা পড়ার পর চিকিৎসা ব্যয় বাড়তে থাকায় এ সংগীতশিল্পীর রাজশাহীর একটি ফ্ল্যাট বিক্রির খবর আসে গণমাধ্যমে।
পাশাপাশি ‘গো ফান্ড মি’ নামে এক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করা হয়। সহশিল্পীদের মধ্যেও অনেকে তার পাশে দাঁড়ান।
গানের মানুষ এন্ড্রু কিশোরের চিকিৎসায় তহবিল সংগ্রহ করতে সৈয়দ আব্দুল হাদী, সাবিনা ইয়াসমীন, মিতালী মুখার্জিসহ আরো কয়েকজন শিল্পীকে নিয়ে কনসার্টেরও আয়োজন করা হয়।
দুর্দিনে পাশে থাকার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।
১৯৭৭ সালে ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে প্লেব্যাকে যাত্রা শুরু করেন এন্ড্রু কিশোর; এরপর আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেও গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যে খানে’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় বাংলা গান উপহার দিয়েছেন শ্রোতাদের।