আশরাফুলের কীর্তি ছাপিয়ে নায়ক শুভাগত

হালকা বাঁক নিয়ে নিচু হয়ে যাওয়া বল আঘাত হানল মোহাম্মদ হাফিজের প্যাডে। উল্লাসে মাতলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। আরও চার উইকেট নিয়ে লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে প্রথম পাঁচ উইকেটের কীর্তি গড়লেন তিনি। পরে সব আলো যদিও কেড়ে নিলেন শুভাগত হোম চৌধুরি। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে মোহামেডানের জয়ের নায়ক এই অফ স্পিনার।

বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে মঙ্গলবার মোহামেডান জিতেছে ৫৪ রানে। ২০৬ রানের পুঁজি নিয়ে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে তারা থামিয়ে দিয়েছে ১৫২ রানে।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা মোহামেডানকে অল্পতে আটকানোয় বড় অবদান আশরাফুলের। অফ স্পিনে ২৩ রান দিয়ে তিনি নেন পাঁচ উইকেট।

লক্ষ্য ছোট পাওয়ার স্বস্তি অবশ্য ব্রাদার্সের মিলিয়ে যায় রান তাড়ার শুরুতেই। শুভাগতর স্পিনে দলটির কেউই তেমন কোনো ইনিংস খেলতে পারেননি। ২৫ রানে ৫ উইকেট নিয়ে তিনি ম্যাচের সেরা। তার আগের সেরা ছিল ৪৭ রানে ৫টি।

ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটে ব্যাটিংয়ে নেমে পারভেজ হোসেনকে দ্রুত হারায় মোহামেডান। সৌম্য সরকার ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। দুইজনই শিকার আবু হায়দার রনির।

২৫ রানে ২ উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন হাফিজ ও রনি তালুকদার। হাফিজকে বিদায় করে ৭৯ বলে ৭২ রানের জুটি ভাঙেন আশরাফুল।

আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৪৫ বলে ফিফটি করা রনিকে নিজের পরের ওভারেই বিদায় করেন আশরাফুল। ১০ চার ও এক ছক্কায় ৫৮ রান করে বোল্ড হন মোহামেডান ওপেনার। একটু পরই ফিরে যান আরিফুল ইসলাম।

এরপর একে একে সোহারাওয়ার্দী শুভ, শুভাগত ও ইয়াসিন আরাফাতকে ফিরিয়ে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন আশরাফুল।

ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া মোহামেডান দুইশ পার করে মূলত জাহিদউজ্জামানের অপরাজিত ৪১ রানের ইনিংসে।

রান তাড়ায় ব্রাদার্স শিবিরে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ছোবল দেন শুভাগত। তাকে বেরিয়ে এসে মারার চেষ্টায় ক্যাচ দেন সাদিকুর রহমান। পরের ওভারে এই স্পিনারের শিকার মাইশুকুর রহমান।

বল হাতে আলো ছড়ালেও ব্যাটিংয়ে নিষ্প্রভ ছিলেন আশরাফুল। নাজমুল অপুর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন কেবল ১ রানে।

৮ রানে ৩ উইকেট হারানো দলকে এগিয়ে নেন ইমতিয়াজ হোসেন ও আমিনুল ইসলাম। গড়েন ৫৭ রানের জুটি। ৪২ রান করা ইমতিয়াজকে ফিরিয়ে তাদের প্রতিরোধ ভাঙেন সোহরাওয়ার্দী।

আমিনুল ও ধিমান ঘোষ দলের হাল ধরার চেষ্টায় হন ব্যর্থ। তাদের জুটি ভাঙার পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ব্রাদার্স। শেষ পাঁচ উইকেট হারায় তারা ২৮ রানে। সাকলাইন সজিবকে ফিরিয়ে লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় পাঁচ উইকেট পূর্ণ করার পাশাপাশি ব্রাদার্সের ইনিংস গুটিয়ে দেন শুভাগত।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব: ৪৯.৪ ওভারে ২০৬ (রনি ৫৮, পারভেজ ১, সৌম্য ৭, হাফিজ ২৮, সোহরাওয়ার্দী ১৬, আরিফুল ১০, শুভাগত ৮, জাহিদউজ্জামান ৪১*, ইয়াসিন ৪, মাহমুদ ৩, নাজমুল ১৪; আবু হায়দার ১০-১-৩৪-২, সজিব ৫-০-৩১-০, ইফরান ৮-০-৪৪-১, নাঈম ৪-০-১৭-০, আশরাফুল ১০-২-২৩-৫, বিপ্লব ৮-০-২৪-১, মইন ৪.৪-০-২১-১)

ব্রাদার্স ইউনিয়ন: ৪৩.৩ ওভারে ১৫২ (ইমতিয়াজ ৪২, সাদিকুর ২, মাইশুকুর ০, আশরাফুল ১, আমিনুল ৩৬, ধিমান ৩২, আবু হায়দার ৭, মইন ১১*, নাঈম জুনি. ৬, ইফরান ৭, সজিব ০; নাজমুল ৮-২-২৮-২, শুভাগত ৮.৩-০-২৫-৫, সোহরাওয়ার্দী ৫-০-২৩-১, মাহমুদ ৬-০-২৫-১, হাফিজ ৭-০-২১-০, ইয়াসিন ৫-০-১৩-০, আরিফুল ৪-১-১৪-১)

ফল: মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ৫৪ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: শুভাগত হোম চৌধুরি