প্রবল পরাক্রমশালী নিউ জিল্যান্ডের মুখোমুখি প্রথমবার। সোফি ডিভাইন, সুজি বেটসের মতো তারকাদের সঙ্গে লড়াই। কিন্তু তাদেরকে হতভম্ব করে ৯১ রানেই গুটিয়ে দিল বাংলাদেশ! ব্যাটিং ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি জিততে পারেননি নিগার সুলতানারা। তবে দুই বছর আগে মেলবোর্নে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচ থেকেই এবার ওয়ানডে বিশ্বকাপে অনুপ্রেরণার রসদ খুঁজে নিচ্ছে বাংলাদেশ।
Published : 06 Mar 2022, 10:00 AM
মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ডানেডিনে সোমবার নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে লড়বে বাংলাদেশ। ইউনিভার্সিটি ওভাল মাঠে ম্যাচ শুরু বাংলাদেশ সময় ভোর চারটায়।
এই মাঠেই শনিবার প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩২ রানে হেরে গেছে বাংলাদেশ। ম্যাচের পর নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার ফুরসত খুব একটা মেলেনি। ভুলগুলো নিয়ে কাজ কার সময়ও ততটা নেই। তবে আগের দিনের ক্লান্তি ভুলে রোববার অনুশীলন করেছে দল।
পরে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক নিগার বললেন, এই সময়টুকুই কাজে লাগানোর প্রয়াস তাদের।
“সময় হয়তো কম, তবে আজকে আমরা একটি অনুশীলন সেশন করেছি। যতটুকু সম্ভব হয়েছে, গত ম্যাচের ভুলগুলো নিয়ে কাজ করেছি, কোচরা কথা বলেছেন আমাদের সঙ্গে, নেটে একটু কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি অল্প সময়ের মধ্যে সেগুলো ঠিক করে নিতে।”
“আমরা আবার কথা বলব। ম্যাচের আগে একটা মিটিং আছে আমাদের। দলীয় পরিকল্পনা আবার নতুন করে করার চেষ্টা করব নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে।”
এই পরিকল্পনায় প্রেরণার দোলা দিচ্ছে ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে একবারই কেবল মাঠে নামার অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশ দলের। মেলবোর্নের জাঙ্কশন ওভালে সেই ম্যাচে রিতু মনি (৪/১৮), সালমা খাতুন (৩/৭) আর রুমানা আহমেদের (৩/১৭) দারুণ বোলিংয়ে ৯১ রানে অলআউট হয়ে যায় নিউ জিল্যান্ড। বাংলাদেশের দারুণ জয়ের হাতছানি মিলিয়ে যায় ব্যাটিংয়ে। গুটিয়ে যায় তারা স্রেফ ৭৪ রানে।
সেই রিতু মনি, সালমা, রুমানারা আছেন এখনও। রিতু দারুণ ফর্মেও আছেন। ব্যাটিং ধসের সেই ম্যাচে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ২১ রান করেছিলেন নিগার।
সেই ম্যাচের মতো বোলিং পারফরম্যান্স এবারও দেখতে চান নিগার। সঙ্গে তার চাওয়া ব্যাটিংয়ে উন্নতি।
“আমাদের যে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে অনেক বাজে স্মৃতি আছে, তা কিন্তু নয়। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওদের বিপক্ষে খুব ভালো বোলিং করেছিলাম এবং ৯২ রানে (৯১) অলআউট করে দিয়েছিলাম। আমাদের জন্য এটা ভালো স্মৃতি।”
“ওরা আমাদেরকে হালকাভাবে নেবে না বলেই মনে করি, কারণ আমাদের বোলিং আক্রমণ ভালো। পাশাপাশি ব্যাটিংটা যদি ভালো করতে পারি, যে জুটি গড়তে না পারার কারণে গত ম্যাচে ভালো করতে পারিনি, সেখানে মনোযোগ দিতে পারলে, আমরা ভালো ফল করতে পারব।”
টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডের সমীকরণ অবশ্য আলাদা। ২০ ওভারের ক্রিকেটে দলগুলির মধ্যে ব্যবধান থাকে কম, ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগও কম, অঘটনের সুযোগ তাই বেশি। ওয়ানডেতে চমক উপহার দেওয়া কঠিনই। নিগার জানালেন, নিউ জিল্যান্ডের সঙ্গে কখনও ওয়ানডে না খেললেও ধারণা তাদের যথেষ্টই আছে।
“নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে হয়তো ওয়ানডে আমরা খেলিনি, তবে ওদের অনেক ম্যাচ আমরা দেখেছি। আমাদের অ্যানালিস্ট যতটুকু সম্ভব ওদের সম্পর্কে তথ্য দিয়ে যাচ্ছে। এসবের ওপর ভিত্তি করেই আমরা আমাদের পরিকল্পনায় এগোব।”
প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয়ের খুব কাছে গিয়েও শেষ ওভারের নাটকীয়তায় হেরে যায় নিউ জিল্যান্ড। বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ের জন্য তাই মরিয়া থাকবে তারা। তাদের মূল শক্তি ব্যাটিংয়ে। অধিনায়ক সোফি ডিভাইন প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেছেন। সুজি বেটস নিজের দিনে একাই গড়ে দিতে পারেন পার্থক্য। অভিজ্ঞ অ্যামি স্যাটার্থওয়েট ও তরুণ অ্যামিলিয়া কার হয়ে উঠতে পারেন বিধ্বংসী।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের তিন পেসার ফারিহা তৃষ্ণা, রিতু মনি ও জাহানারা আলমের দারুণ পারফরম্যান্স সামনের লড়াইয়েও ভরসা জোগাচ্ছে অধিনায়ক নিগারকে।
“আমাদের পেস বোলাররা খুব ভালো ছন্দে আছে। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং শক্তিও অনেক বেশি ছিল। তার পরও আমার বোলারা খুব ভালো একটি প্রদর্শনী দেখিয়েছে। আমরা যদি আমাদের পরিকল্পনায় থাকতে পারি, তাহলে গতকালকের ম্যাচর মতোই ভালো পারফর্ম করতে পারবে বোলাররা।”