দুই ওপেনার ফিরেছিলেন বড় স্কোরের সম্ভাবনা জাগিয়ে। তার পরও দিনটি হতে পারত বাংলাদেশের। ওই দুই উইকেট হারিয়েই রান এগিয়ে যাচ্ছিল দুশর দিকে। তখনই দেখা মিলল চিরায়ত বাংলাদেশের, যারা সেশনের শুরু বা শেষে যারা পথ হারায় নিয়মিত। আরও একবার শেষ সময়ে আত্মহত্যার মিছিল। তাতে বদলে গেল দিনের চেহারা। বদলে গেল ম্যাচের চিত্রও।
Published : 16 Mar 2017, 10:14 AM
উৎকণ্ঠা আর শঙ্কায় শেষ
টেস্ট মাচের শেষ বেলা? ধসের পর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা? সাকিবের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিলো বুঝি টি-টোয়েন্টি। যেন চার-ছক্কা চাই প্রতি বলেই!
১১ রানে বেঁচে গেলেন উপুল থারাঙ্গা ক্যাচ মিস করায়। আরেকবার অল্পের জন্য হলেন না ক্যাচ। তার পরও সাকিবের থামাথামি নেই। শেষ পর্যন্ত থামতে বাধ্য হলেন দিনের খেলা শেষ হওয়ায়। শেষ কয়েক মিনিটের প্রবল উৎকণ্ঠাও থামল।
তবে সাকিবের ব্যাটিংয়ের জাগিয়ে রাখল শঙ্কাও। এভাবে খেলতে থাকলে আউট হতে কতক্ষণ?
৮ বলে ১৮ রানের টি-টোয়েন্টি ইনিংসে অপরাজিত সাকিব। মুশফিক অপরাজিত ২ রানে। বাংলাদেশ দিন শেষ করেছে ৫ উইকেটে ২১৪ রানে।
প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কা তুলেছিল ৩৩৮।
শেষ সময়ে শেষ সাব্বিরও!
জোড়া ধাক্কার রেশ কাটতে না কাটতেই আরও একটি বড় ধাক্কা। সাব্বির রহমানও বিলিয়ে এলেন উইকেট!
সাব্বির খেলছিলেন ওয়ানডের গতিতে। খেলছিলেন নিজের সহজাত সব শট। কিন্তু সময়ের দাবি ছিল শেষ ২-৩ ওভার কাটিয়ে দেওয়া। পারলেন না সেটিই। জোড়া ধাক্কার পর যখন আরও সতর্ক হওয়ার কথা, সাব্বির চাইলেন লাকমলের শর্ট বলে পুল করতে। পরাস্ত হলেন গতিতে। লেগ গালিতে ফিল্ডার আনাই হয়েছিল এই শটের জন্য। তার হাতে সহজ ক্যাচ।
৫৪ বলে ৪২ রানে ফিরলেন সাব্বির। বাংলাদেশ ৫ উইকেটে ১৯৮।
শেষ বেলায় এক ওভারে জোড়া ধাক্কা
অপেক্ষা তখন দিনের খেলা শেষ হওয়ার। কিন্তু তার আগেই শেষ ইমরুল কায়েস! এই টেস্টেই দলে ফেরা ব্যাটসম্যান ফিরে গেলেন থিতু হয়েও। সেই ধাক্কা না সামলাতেই বিদায় নাইটওয়াচম্যাচ তাইজুল ইসলামও।
লাকশান সান্দাকানের আগের বলটিতেই দারুণ কাভার ড্রাইভে চার মেরেছিলেন ইমরুল। পরের বলটি শর্ট, রং-ওয়ান, একটু জোরের ওপর। একটু নীচুও ছিল। পুল করার চেষ্টায় ইমরুল করতে পারলেন না ব্যাটে-বলে। বাজে এক শটে এলবিডব্লিউ।
২৫ রানে লাকমলের বলে সহজ ক্যাচ দিয়েও ফিরে গিয়েছিলেন ইমরুল। সুযোগ কাজে না লাগিয়ে আউট হলেন ৩৪ রানে। ভাঙল সাব্বিরের সঙ্গে ৬২ রানের জুটি।
তাইজুল ফিরলেন প্রথম বলেই। আরেকটি রং-ওয়ান, আরেক জন এলবিডব্লিউ। আম্পায়ার আউট দেননি। শ্রীলঙ্কা নেয় রিভিউ। আরও একবার এস রবির সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণ করল ডিআরএস। বাংলাদেশের রান তখন ৪ উইকেটে ১৯২।
সৌম্য, সেঞ্চুরি কত দূর?
Sarkar departs after fifty, Soumya Sarkar b Sandakan 61(121)
BAN 134/2 (41.4 Ovs) trail by 204 runs. #SLvBAN pic.twitter.com/JFtnLRyJy3
— Sri Lanka Cricket (@OfficialSLC) March 16, 2017
সৌম্যর হ্যাটট্রিক ফিফটি
এতটাই মনোযোগে ব্যাট করছিলেন যে নিজের মাইলফলকও খেয়াল করেনি। একটু পর বুঝতে পেরে সৌম্য একটু উঁচিয়ে ধরলেন ব্যাট। আরও একটি অর্ধশতক!
শুরুটা ছিল একটু নড়বড়ে। সময়র সঙ্গে পেয়েছেন আত্মবিশ্বাস। হয়েছেন থিতু। করেছেন রান। সৌম্য সরকার করে ফেললেন আরও একটি পঞ্চাশ। সিরিজে তার টানা তৃতীয়।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ওপেনার হিসেবে করলেন টানা তিন ইনিংসে অর্ধশতক। ২০১০ সালে তামিম করেছিলেন টানা পাঁচ ইনিংস।
এমনিতে স্ট্রোক প্লেয়ার হলেও এই ইনিংসে দেখা গেছে অন্য সৌম্যকে। লড়াই করে আঁকড়ে আছেন উইকেট। পঞ্চাশ করেছেন ৯৬ বলে।
বাংলাদেশ ১ উইকেটে ১১৪। সৌম্যর সঙ্গী ইমরুল কায়েস খেলছেন ৯ রানে।
দুবার রক্ষা, তিনে অক্কা তামিম
দানে দানে তিন দান! দু-দুবার বেঁচে গেছেন শ্রীলঙ্কা রিভিউ না নেওয়ায়। তৃতীয়বারে আর রক্ষা হলো না। আউট হলেন তামিম ইকবাল।
এই ওপেনার তখন পঞ্চাশের দোরেগোড়ায়। দল শতরানের কাছে। আম্পায়ার আলিম দার আউট না দিলেও নিজের বলে এবার রিভিউ নেন হেরাথ। জিতেও যান। ফুল লেংথ বল ক্রস ব্যাটে খেলে ৪৯ রানে এলবিডব্লিউ তামিম।
আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত তামিম খেলছিলেন দারুণ। শুরুর নড়বড়ে ভাবটা কাটিয়ে জমে উঠছেন সৌম্য সরকারও। তামিমের আউটের সঙ্গেই এসেছে চা-বিরতির ঘোষণা।
বাংলাদশের রান ১ উইকেটে ৯৫। ৪০ রানে অপরাজিত সৌম্য।
তামিম-সৌম্যর ‘হ্যাটট্রিক’
Bangladesh openers off to steady start, BAN 81/0 (23 Ovs) trail SL 1st inning by 257 runs. Tamim Iqbal 42*, Soumya Sarkar 33* #SLvBAN pic.twitter.com/6j6NNaCzY2
— Sri Lanka Cricket (@OfficialSLC) March 16, 2017
শুরুর স্বস্তি বাংলাদেশের
বোলিংয়ে শেষদিকের হতাশার পর ব্যাটিংয়ের শুরুটা বাংলাদেশ করেছে স্বস্তিতে। তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার খেলেছেন সতর্কতার সঙ্গে। উইকেট ধরে রাখার পাশাপাশি সুযোগ পেলে রানও করেছেন দুজন। তামিম খেলেছেন দৃষ্টিনন্দন তিনটি চার।
১০ ওভারে বাংলাদেশ কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩১। ১৯ রানে খেলছেন তামিম, ৮ রানে সৌম্য।
২ রানে আউট অবশ্য হতে পারতেন তামিম। লাকমলের বলে এলবিডব্লিউ দেননি আম্পায়ার। শ্রীলঙ্কা নেয়নি রিভিউ। টিভি রিপ্লে দেখিয়েছে, রিভিউ নিলে আউট হতেন তামিম।
বাংলাদেশের হতাশার সকাল
Lunch Day 2, Sri Lanka 338 all out in the 1 st innings of the 2nd Test vs Bangladesh. Dinesh Chandimal 138. #SLvBAN pic.twitter.com/JQxOdKwDqw
— Sri Lanka Cricket (@OfficialSLC) March 16, 2017
অবশেষে ফেরানো গেল চান্দিমালকে
Day 2: 1st Session - SL - 305/9 (106 Ovs) Lakmal 7*, last wicket: Chandimal c Mosaddek b Mehedi Hasan 138(300) #SLvBAN pic.twitter.com/QWbcw3X0B3
— Sri Lanka Cricket (@OfficialSLC) March 16, 2017
আবার রিভিউয়ে রক্ষা চান্দিমালের
দুবার আঙুল তুললেন আম্পায়ার। দুবারই টিকে গেলেন দিনেশ চান্দিমাল। দুবারই আম্পায়ার সুন্দরম রবি!
আগের দিন একবার আম্পায়ার আউট দিলেও রিভিউ নিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন চান্দিমাল। দ্বিতীয় দিন সকালেও পুনরাবৃত্তি। মুস্তাফিজের স্লোয়ার বলটিতে পরাস্ত হয়েছিলেন চান্দিমাল। কিন্তু আম্পায়ার রবি কেন আউট দিলেন, তিনিই ভালো বলতে পারবেন। ব্যাট-বলের মাঝে ব্যবধান ছিল অনেক।
চান্দিমালের রান তখন ১১২। শ্রীলঙ্কা ৮ উইকেটে ২৭৬। নবম জুটির রানও হয়ে গেছে ২৬।
সাকিব ভাঙলেন জুটি
এক-দুই-তিন-চার-পাঁচ … পঞ্চমবারের চেষ্টায় বল জমল সৌম্য সরকারের হাতে। অবশেষে ভাঙল জুটি, ফিরলেন হেরাথ।
সাকিবের ফুল লেংথ বলটিতে ড্রাইভ করেছিলেন হেরাথ। স্লিপে সৌম্যর বুক সমান উচ্চতায় যায় বল। বেশ কয়েকবারের চেষ্টায় সৌম্য হাতে জমান বল। ২৫ রানে ফিরলেন শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক। থামল ৫৫ রানের জুটি। শ্রীলঙ্কার রান ৮ উইকেটে ২৫০।
জুটির পঞ্চাশে এগোচ্ছে শ্রীলঙ্কা
আগের দিন বিকেলে যে জুটি ছিল অস্বস্তি, দ্বিতীয় দিন সকালে সেই জুটি হয়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ। দিনেশ চান্দিমাল ও রঙ্গনা হেরাথ এগিয়ে নেন শ্রীলঙ্কাকে। অষ্টম উইকেট জুটির রান পার হয় পঞ্চাশ।
৭ উইকেটে শ্রীলঙ্কার রান ৭ উইকেটে ২৪৭। চন্দিমাল খেলেছেন ৮৯ রানে, হেরাথ ২৩। জুটির রান ৫২।
বাংলাদেশের জন্য একটি সুখবর। আগের দিন চোট পেয়ে মাঠ ছাড়া ইমরুল কায়েস ফিরেছেন মাঠে।