ক্রিকেট ক্যারিয়ারে তিনি কিংবদন্তি; কিন্তু কোচিং ক্যারিয়ারের কেবলই শুরু। বোলিং কোচ হিসেবে কেমন হবেন কোর্টনি ওয়ালশ? কতটা শিখতে পারবে বাংলাদেশের পেসাররা? কতটা উপকৃত হবে বাংলাদেশের ক্রিকেট? নতুন বোলিং কোচকে নিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে কথা বললেন দুই প্রজন্মের দুই পেসার মাশরাফি বিন মুর্তজা ও তাসকিন আহমেদ।
Published : 01 Sep 2016, 06:14 PM
ওয়ালশকে নিয়ে দুই পেসারের ভাবনাগুলো তুলে দেওয়া হলো তাদের জবানিতেই:
মাশরাফি বিন মুর্তজা:
প্রথমত আমি রোমাঞ্চিত কারণ আমার ক্রিকেটিং আইডল বরাবরই কোর্টনি ওয়ালশ। অনেকবারই আমি বলেছি। ওর সঙ্গে এক ড্রেসিং রুমে থাকাই আমার জন্য অনেক বড় ব্যাপার।
ওয়ালশের ব্যাপারটাই আমার কাছে অন্যরকম; বলে বোঝানোর মত নয়। আমার প্রচণ্ড আবেগ জড়িয়ে এখানে। ছোটবেলা থেকেই ওকে আলাদা চোখে দেখে আসছি। আমাদের সময়ে আমরা ওয়াসিম-ওয়াকারদেরও দেখেছি। কিন্তু ওয়ালশকে আমার সবসময় আলাদা মনে হতো। অ্যাকশনটা ছিল দারুণ, মসৃণ। আমার মনে হতো, ও বল ডেলিভারির সময় আম্পায়ারও বুঝতে পারত না যে কেউ দৌড়ে এসে বল করত, এতটা স্মুথ ছিল।
শুধু বোলার হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে, ক্যারেক্টার হিসেবে বল করার পর ওর হাসি…যতটুকু টিভিতে দেখেছি বা নানা জায়গায় পড়েছি, সব মিলিয়েই সবসময় সবচেয়ে ভালো লাগত। ওর কাছে শিখতে চাইব অনেক। তার চেয়ে বেশি উপভোগ করব ওর সঙ্গে ড্রেসিং রুমে থাকা।
টেস্ট ক্রিকেটে আমাদের তো ডেল স্টেইন নেই, বিধ্বংসী কোনো পেসার নেই। আমাদের দলের জন্য প্রয়োজন এমন একজন পেসার যে ধারাবাহিকভাবে ভালো করে যেতে পারে। এক দিন হয়ত সেই ধারাবাহিকতায় ৩০০ টেস্ট উইকেট নিয়ে নেবে। সেভাবে কাউকে তৈরি করে দেওয়ায় সাহায্য করতে পারে ওয়ালশ।
আমাদের কন্ডিশন একটা বড় সমস্যা। ফাস্ট বোলারদের উপযোগী নয়। কিন্তু নিশ্চয়ই এই কন্ডিশনেও কিছু করার আছে। সেই পথটা বা নতুন কিছু বাতলে দিতে পারেন ওয়ালশ।
আগে কখনও কোচিং করায়নি, এটাকে বড় সমস্যা মনে হয় না। ওর যে অভিজ্ঞতা আছে, সেটা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করলেই অনেক বড় ব্যাপার। যে প্যাশন নিয়ে ফাস্ট বোলিং করেছে, বিভিন্ন পরিস্থিতি যেভাবে সামলেছে, এগুলো জানতে পারাও অনেক বড়। কোচিং তো কেউ না কেউ কখনো প্রথমবার শুরু করে। ভালো কোচ হওয়ার জন্য ভালো কোচিং ব্যাকগ্রাউন্ড সবসময় জরুরি নয়। ওয়ালশ যে ধরণের ক্রিকেটার ছিল, আমাদের মাঝে ওর উপস্থিতিই আলাদা ভূমিকা রাখতে পারে।
ওকে পছন্দ করার এটা একটা কারণ যে সে ১৩২টা টেস্ট খেলেছে। ফাস্ট বোলার হয়েও ১৭ বছর সার্ভিস দিয়েছে দলকে। নিজেকে কিভাবে ফিট রাখা যায়, এটাও শেখার ব্যাপার।
ব্যক্তিগতভাবে ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে আমি চাইব, যে কদিন আছে আমার ক্যারিয়ারের, নতুন কিছু শিখতে চাইব। যে কদিন খেলি, ওর কাছ থেকে শিখে কাজে লাগাতে চাইব।
ওয়ালশ আসছেন, এখন বাকিটা আমাদের সবার হাতে। নির্ভর করবে আমরা কে কতটা শিখতে চাই। সবাই যদি শিখতে চায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে, তাহলে শেখার আছে অনেক। কোচ সবসময় সাহায্য করবে, তবে সেটা তো নিতে হবে। সেটা পারলে আমাদের ক্রিকেটের একটা টার্নিং পয়েন্ট হবে।
তাসকিন আহমেদ
ছোটবেলা থেকেই বাবার মুখে অনেক শুনেছি ওয়ালশ-অ্যামব্রোসের কথা। খেলা শুরুর পর তো আরও ভালোভাবে জেনেছি। এতদিন শুধু নাম শুনেছি, টিভিতে বা ইউটিউবে দেখেছি। শেষবার ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে দেখা হয়েছিল। কথা সেভাবে হয়নি। এবার কোচ হিসেবে পাচ্ছি। রোমাঞ্চকর ব্যাপার।
অবশ্যই অনেক কিছু শিখতে পারব ওর কাছ থেকে। ওর অভিজ্ঞতা যদি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে এবং আমরা যদি সেটা কাজে লাগাতে পারি, আশা করি ভালো কিছুই হবে।
১৩২টি টেস্ট খেলেছেন তিনি, সোজা কথা নয়। ১৩২টি ওয়ানডে খেলাই কঠিন। তো কিভাবে ফিট থাকা যায়, ইনজুরি মুক্ত থাকা যায়, লম্বা স্পেলে বল করা যায়, এসব ব্যাপার শেখার চেষ্টা করব।