জুনের মাঝামাঝি বর্ষার বিস্তার, থাকবে গরমের দাপটও

বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড দিনাজপুরে। আর রংপুর, রাজশাহীতে তীব্র তাপপ্রবাহ ও অন্যত্র মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

এপ্রিলের মতো মে মাসও পার হল তাপপ্রবাহের দাপটে। এর মধ্যে ছিল ঘূর্ণিঝড়ের হানা। তবে বর্ষা মৌসুমেও পিছু ছাড়বে না দাপুটে গরম।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে দেশজুড়ে বিস্তার ঘটবে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর। সেই সঙ্গে মৌসুমী নিম্নচাপ ও ভারি বর্ষণের উত্তর পূর্বাঞ্চলে বন্যার আভাস রয়েছে।

এ মাসের দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান জানান, এ মাসে বঙ্গোপসাগরে ১-২ টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে; এরমধ্যে একটি মৌসুমী নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। দেশে ৪-৬ দিন হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বজ্রঝড় হতে পারে।

“এছাড়া জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে সারাদেশে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু বিস্তার লাভ করবে। তবে সামগ্রিকভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতের আভাস রয়েছে।”

তিনি বলেন, চলতি মাসে দেশে ১-২টি বিচ্ছিন্নভাবে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে এবং দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি থাকতে পারে।

মাঝ জ্যৈষ্ঠে সারাদেশে টানা পাঁচদিন ধরে চলছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে, তাতে রংপুর ও রাজশাহীতে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এদিন রংপুর, দিনাজপুর, সৈয়দপুর, রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০-৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ছিল।

এছাড়া সিলেট, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী জেলাসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা বিভাগ এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের বাকি এলাকাগুলোয় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বইছে। 

আবহাওয়ার পরিভাষায় ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে গেলে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়।

বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে। আর ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দেশের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ঈশ্বরদীতে

বর্ষার আগে ফের তাপপ্রবাহ, থাকতে পারে ৫ দিন

আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন জানান, দেশের উপর দিয়ে চলমান মৃদু থেকে তীব্র ধরনের তাপ প্রবাহ আগামী চার থেকে পাঁচ দিন অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু (বর্ষা) টেকনাফ উপকূল হয়ে আরও অগ্রসর হতে পারে। 

পাশাপাশি ভারি বর্ষণে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের কিছু স্থানে স্বল্প মেয়াদী বন্যা বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

বজ্রঝড়, তাপপ্রবাহময় এপ্রিল-মে মাস

আবহাওয়া অধিপ্তর জানিয়েছে, মে মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪৪ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। ১-৬ মে, ১০-২৭ মে সারাদেশে বিচ্ছিন্নভাবে বজ্রপাত ও কালবৈশাখীর দাপট ছিল। সে মাসে বেশ গরমের মধ্যে ৯ মে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এছাড়া ১৪ মে ঘূর্ণিঝড় মোখা পার হয়েছে বাংলাদেশ-মিয়ানমার উপকূলে।

এর আগে ৪ থেকে ১২ এপ্রিল মৃদু থেকে মাঝারি, ১৩ থেকে ২২ এপ্রিল তীব্র এবং ২৪ এপ্রিল ৩০ এপ্রিল আবারও মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যায় দেশে। ওই মাসে পাবনার ঈশ্বরদীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।