“এই কয়দিন দেহে জীবন আছিল না,” ছেলেকে পেয়ে করিমন নেসা।
Published : 03 Apr 2023, 11:43 PM
ছেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়েছিল প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসের মা করিমন নেসার। জামিনে মুক্তির পর ছেলেকে কাছে পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে এই মায়ের মনে।
সোমবার রাত ১০টার দিকে শামস ধামরাইয়ে মামার বাড়িতে মায়ের কাছে পৌঁছান বলে জানিয়েছেন এ সাংবাদিকের মামাত ভাই ফারুক হোসেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শামসের বাসায় ফেরার যাত্রায় প্রথম আলোর কয়েকজন কর্মকর্তা ও সাংবাদিক সঙ্গে ছিলেন। শামসকে জড়িয়ে ধরেন তার মা। স্বজন-বন্ধু-প্রতিবেশী মিলে বাসায় এক মিলন মেলা বসেছে।”
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় চার দিন কারাগারে থাকার পর এ দিন দুপুরের পর শামসকে জামিনের আদেশ দেয় আদালত। ইফতারের আগে কারাগার থেকে মুক্তি পান শামস, এরপর ছোটেন তার পত্রিকার প্রধান কার্যালয়ে। সেখান থেকে ধামরাইয়ে মামার বাড়িতে মায়ের কাছে ফিরেছেন তিনি।
গত বুধবার ভোরে শামসকে সাভারে তার বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল সিআইডি। শামসের মা তখন তাদের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার কাটিগ্রামে ছিলেন। সকাল ১০টায় ছেলেকে তুলে নেওয়ার খবরপাওয়ার পর থেকে তার আর কান্না থামছিল না।
১ এপ্রিল শামসের মুক্তির দাবিতে ধামরাইয়ে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নিলেও কথা বলতে পারেননি, শুধুই কাঁদছিলেন।
করিমন স্বামীকে হারান ২০০৬ সালে,দুই ছেলে তখনও লেখাপড়া করছিল। তাদের ঘিরেই জীবন চালিয়ে নিচ্ছিলেন এই মা। বড় ছেলে রবিউল সহকারী পুলিশ সুপার হওয়ার পর কিছুটা স্বস্তি ফেরে তার জীবনে। কিন্তু ২০১৬ সালে হলি আর্টিজান হামলায় রবিউল মারা যাওয়ার পর শামসই তার জীবনের একমাত্র অবলম্বন।
কাটিগ্রামের প্রতিবেশীরা বলেন, করিমনকে এমন কাঁদতে তারা দেখেছিলেন রবিউলের মৃত্যুর পর। তাই তারা ভয় পেয়ে যান।এরপর তারাই শামসের মামাদের ফোন করে ঘটনা জানান। ঘটনার দিন দুপুরে শামসের মামা এসে তাকে ধামরাইয়ে নিয়ে যান। এখনো সেখানেই আছেন শামসের মা।
বুধবার ধামরাইয়ের ওই বাড়িতে ঢোকার আগে থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল শামসের মায়ের বিলাপ আর কান্নার শব্দ। আর সোমবার রাতে শামস মামার বাড়ি পৌঁছার আগে ফোন করে পরিচয় দিতেই করিমন নেসা বললেন, “কেমন থাকবো বুঝতেই তো পারতেছো। আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।”
স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে তিনি বললেন, “আমি ভাষাহীন হয়ে পড়ছি। আল্লার কাছে অনেক শুকরিয়া। সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার নাই। এই কয়দিন দেহে জীবন আছিল না।
“ইফতারের সময় শামসের সঙ্গে কথা হইল। বলল ‘মা ভাত-টাত খাও, আমার আসতে একটু দেরি হবে।’ তারপরে সবাই ধইরা খাওয়াইলো।”
চার দিন পর জামিন হল সাংবাদিক শামসের