বৈরুতে বন্দরে বিস্ফোরণে দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনার পর বাংলাদেশেও বিস্ফোরক আমদানি ও মজুদের তথ্য চেয়েছে কর্তৃপক্ষ।
Published : 13 Aug 2020, 05:11 PM
দেশের বন্দরগুলোতে কোনো অবস্থায়ই যেন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট গুদামজাত না করা হয় সে বিষয়ে সতর্ক করেছে বিস্ফোরক পরিদপ্তর।
সেই সঙ্গে চলতি বছরে চারটি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কী পরিমাণ বিস্ফোরক মজুদ রয়েছে এবং কী পরিমাণ ব্যবহার হয়েছে তা জানতে চেয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানান।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীনে বিস্ফোরক পরিদপ্তর এ সংক্রান্ত কাজ করে।
প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক জানান, যেসব বন্দরে (সমুদ্র, নৌ ও স্থলবন্দর, বিমানবন্দর) বিস্ফোরক জাতীয় দ্রব্য আমদানি হয়, কোনো অবস্থাতেই যেন অনুমোদনবিহীন গুদামে তা রাখা না হয়। উন্মুক্ত কোনো স্থানে বা শেডে যেন এগুলো রাখা না হয় সে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
“আমাদের তো কিছু কিছু তো আমদানি করা হয়ে থাকে। মেডিকেল ও খনি পারপাসে এখানে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ব্যবহার হয়। তাই বন্দরগুলোয় বিশেষভাবে নজর দিয়েছি। বন্দরে নির্দেশের পাশাপাশি এ নির্দেশনার অনুলিপি জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনারের কাযালয়ে, কাস্টমস অফিসে পাঠানো হয়েছে।”
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের বন্দর এলাকায় বিস্ফোরকের গুদামে গত ৪ অগাস্ট ভয়াবহ বিস্ফোরণে বহু মানুষ হতাহত হয়। বিবিসির তথ্য মতে, এই বিস্ফোরণে ২২০ জন নিহত এবং কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। ওই ঘটনার জেরে জনরোষের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে লেবানন সরকার।
ওই প্রসঙ্গ টেনে মো. মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, “এটা আমাদের রুটিন কাজ। তবে বৈরুতের ঘটনার পরে এটা হয়েছে- এটাও একটা বিষয়। ওই ঘটনাটা আমাদেরকে আরেকটু তাড়া দিয়েছে- যেন দুর্ঘটনা হলে বা ঘটলে তো জবাব দেওয়া যাবে না। এজন্য সতর্ক থাকতে বলেছি।”
বন্দরে কোনোভাবেই এ ধরনের বিস্ফোরক রাখার অনুমোদন নেই বলে জানান তিনি।
চিঠিতে বন্দর কর্তৃপক্ষকে কী বলা হয়েছে জানতে চাইলে প্রধান প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক বলেন, “অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট জাতীয় জিনিস কোনো অবস্থাতেই সরাসরি খালাসের পরে বাইরে রাখার সুযোগ নেই। অনুমোদনবিহীন কোনো মজুদাগারে রাখার সুযোগ নেই। সরাসরি যেখানে রাখার অনুমোদন রয়েছে সেখানে রাখা নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।”
তিনি জানান, পোর্টে রাখার কোনো অনুমোদন দেওয়া নেই। এজন্য বলা হয়েছে, যেহেতু পোর্টে অনুমোদন দেওয়া নেই তাই পোর্টে যেন রাখা না হয়।
চার প্রতিষ্ঠানের কাছে মজুদ কত?
দেশে চারটি প্রতিষ্ঠান অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট আমদানি করে উল্লেখ করে প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক জানান, তাদের কাছে কী পরিমাণ মুজুদ রয়েছে এবং কী পরিমাণ আমদানি করা হয়েছে সে সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে।
“স্পেক্ট্রা, ইসলাম অক্সিজেন, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস লিমিটেড এবং কয়লা ও পাথরখনি- এ চারটি প্রতিষ্ঠানকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।”
কী পরিমাণ আমদানি ও কী পরিমাণ মজুদ রয়েছে- সে সংক্রান্ত প্রতিবেদন শিগগির পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী মঞ্জুরুল হাফিজ।
তিনি জানান, মেডিকেল সংক্রান্ত কাজে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বিভিন্ন ফরমে তিনটি প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে। এছাড়া দিনাজপুরে খনি এলাকায় ব্যবহার হয়। এজন্য চলতি অর্থবছরের তথ্য চারটি প্রতিষ্ঠানের কাছে চাওয়া হয়েছে।