নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে ঢাকা-১০ আসনের উপ-নির্বাচনের সরঞ্জামাদি বিতরণ করা হল।
Published : 20 Mar 2020, 07:54 PM
শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর শত সদস্য ঢাকা টিটার্স ট্রেনিং কলেজ কেন্দ্র থেকে ইভিএম ও নির্বাচনী সামগ্রী সংগ্রহ করেন।
করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে ভোট নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে এ নির্বাচন হচ্ছে।
রিটার্নিং অফিসার ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জি এম সাহতাবউদ্দিন বলেন, সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে ভোটের। নির্বাচনী সামগ্রী কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে। নির্বাচন কর্মকর্তাদের করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে হাত ধোয়া, মাস্ক পরার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
স্বাস্থ্য সচেতনতার কেন্দ্রে কেন্দ্রে করোনাভাইরাস মোকাবেলা সংক্রান্ত তথ্য সম্বলিত ব্যানার থাকবে বলে জানান তিনি।
শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হবে এখানে।
একই দিন গাইবান্ধা-৩ ও বাগেরহাট-৪ সংসদীয় আসনে উপ-নির্বাচন হবে। এ দুই আসনে ব্যালট পেপারে ভোট হবে।
নভেল করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ রোধে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সমাবেশ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে শনিবারের তিনটি উপ-নির্বাচন করায় অনড় রয়েছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি।
এ নিয়ে কমিশনের যুক্তি তুলে ধরে ইসি সচিব মো. আলমগীর বৃহস্পতিবার বলেন, “করোনাভাইরাসের কারণে ভোটার উপস্থিতি কম হবে ধরে নিয়েই আমরা শনিবারের নির্বাচন করছি। চট্টগ্রামে ভোট নিয়ে শনিবারই সিদ্ধান্ত হবে।”
আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিধি মেনে ভোট দেওয়ার অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, “আমি সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে কলাবাগান লেক সার্কাস এলাকায় নিজ কেন্দ্রে ভোট দেব। এর আগে সকালে ঢাকা সিটি কলেজ কেন্দ্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভোট দেবেন, আমি সেখান থেকে নিজের কেন্দ্রে ভোট দিতে আসব।”
এ প্রার্থী জানান, নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রের ভেতরে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখবেন। কেন্দ্রের বাইরে প্রার্থীর পক্ষ থেকেও হাত ধোয়ার সব ব্যবস্থা থাকবে।
“সচেতনতার সঙ্গে সার্বিক প্রস্তুতি আমাদের। সবাই যেন স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলি।”
বিএনপির প্রার্থী শেখ রবিউল আলম জানান, করোনাভাইরাস আতঙ্ক উপেক্ষা করে মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাবে, সেক্ষেত্রে ইসি যেন যার ভোট তার দেওয়ার ব্যবস্থা রাখে। একজনের ভোট যদি অন্যজন দিয়ে দেন তাহলে গণতন্ত্রের ঝুঁকি আরও বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, “আমরা প্রচারণা করেছি। ইসি ভোট স্থগিত করেনি, আমার দল বিএনপি ভোট বর্জন করেনি। আমিও তাই ভোটে থাকছি। এখনও জনজীবন স্থবির হয়নি। সেক্ষেত্রে সচেতন ও সতর্কভাবে নাগরিকদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাই।”
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে হাত ধুয়ে ভোট দেওয়ার অনুরোধ জানান রবিউল।
“ইসির মতো আমিও বলছি, আপনারা কেন্দ্রে আসুন, হাত ধুয়ে ভোট দেবেন। আবার ভোট দিয়ে হাত ধুয়ে বাড়ি ফিরবেন।”
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৪ থেকে ১৮ নম্বর ওয়ার্ড ও ২২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে এই সংসদীয় আসন।
মোট ভোটার ৩ লাখ ১২ হাজার ২৮১জন।
ভোটকেন্দ্র ১১৭
ভোটকক্ষ ৭৭৬
কেন্দ্রপ্রতি অন্তত ১৮ জন করে নিরাপত্তা সদস্য।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ছাড়া ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা রয়েছেন প্রায় আড়াই হাজার।
প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ১১৭, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ৭৭৬ জন, পোলিং অফিসার ১৫৫২ জন।
ছয় প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট থাকবেন কেন্দ্রে কেন্দ্রে। ইভিএম পরিচালনায় প্রশিক্ষিত লোকবলও থাকবে।
উপ নির্বাচনে ছয় প্রার্থী
আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ‘নৌকা’, বিএনপির শেখ রবিউল আলম ‘ধানের শীষ’, জাতীয় পার্টির হাজী মো. শাহজাহান ‘লাঙ্গল’ এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের মিজানুর রহমান চৌধুরী ‘ডাব’; বাংলাদেশ মুসলিম লীগের নবাব খাজা আলী হাসান আসকারী ‘হারিকেন’ এবং প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) কাজী আব্দুর রহীম ‘বাঘ’ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ইসি সচিব মো. আলমগীর বৃহস্পতিবার বলেছেন, ভোটকেন্দ্রে হ্যান্ড স্যানিটাইজার থাকবে। ভোট দেওয়ার আগে-পরে এটা ব্যবহার করবেন। হাত ধুয়ে ভোট দেবেন। ভোট দিয়ে আবার হাত ধুয়ে ফেলবেন।
করোনাভাইরাস সংক্রমিত সন্দেহভাজনদের কেন্দ্রে না আসার পরামর্শ দেন তিনি।