রোহিঙ্গা সঙ্কট অবসানে মিয়ানমারকে চাপ দিতে চীনকে মানানোর পরামর্শ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ব সংস্থাটিতে বাংলাদেশের সাবেক দূত।
Published : 16 Sep 2017, 12:01 PM
রাখাইনে সহিংসতা বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ চায় নিরাপত্তা পরিষদ
মিয়ানমারে হস্তক্ষেপের বিপক্ষে রাশিয়া
হাসিনাকে ফোন সুষমা স্বরাজের, মিয়ানমারকে ‘চাপ দিচ্ছে’ ভারত
রোহিঙ্গা সঙ্কট: বাংলাদেশের প্রস্তাব নিয়ে জাতিসংঘে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার সফরের আগে নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট তাকেদা আলেমুর সঙ্গে বৈঠকের পর একথা জানান জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি এ কে এ মোমেন।
রাখাইনে সহিংসতা বন্ধে মিয়ানমারকে জরুরি পদক্ষেপ নিতে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাসের জন্য পরিষদের সভাপতিকে ধন্যবাদ জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ভাই মোমেন।
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা ৪ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের জন্যও সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। আগে থেকেই ৪ লাখের বেশি শরণার্থীর ভার বহন করে আসছে বাংলাদেশ।
রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। সহিংসতা বন্ধ করতে মিয়ানমারে প্রতি আহ্বানও জানিয়ে আসছে।
জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে শনিবার নিউ ইয়র্ক রওনা হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা; মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সঙ্কটের মূল কারণগুলো তুলে ধরে তা নিরসনে বাংলাদেশের প্রস্তাব তিনি বিশ্বনেতাদের সামনে তুলে ধরবেন।
জাতিসংঘে নিজের দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা কূটনৈতিক কাজে লাগাতে তার আগে শুক্রবার নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেন মোমেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তার (শেখ হাসিনা) উচিৎ হবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে লবিং জোরদার করা, বিশেষ করে চীনের সহায়তা দরকার। কারণ মিয়ানমারের ব্যাপারে চীন খুবই ‘সেনসেটিভ’।
“কফি আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়নে চীনের সমর্থন দরকার বলে তিনি (তাকেদা) মনে করেন। তিনি আরও বলছেন, একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক অনেক ইস্যুর সঙ্গে মিয়ানমার ইস্যুকে একীভূত করলে সমস্যা সমাধান বিলম্বিত হতে পারে।”
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক এক্ষেত্রে কাজে লাগাতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট পরামর্শ দেন বলে মোমেন জানান।
রোহিঙ্গা প্রশ্নে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করছে। তবে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য দেশ রাশিয়া ও চীন বিষয়টিকে মিয়ানমারের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ হিসেবে দেখছে।
তবে এর মধ্যেও গত সপ্তাহে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে অতিরিক্ত সহিংসতার খবরে উদ্বেগ জানানো হয়। রাখাইনে সহিংসতা বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ, পরিস্থিতির উত্তরণ, আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং বেসামরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
বৈঠকের পর জাতিসংঘে যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত ম্যাথিউ রাইক্রফট বলেন, গত নয় বছরের মধ্যে এই প্রথম মিয়ানমার নিয়ে কোনো বিবৃতিতে একমত হয়েছে নিরাপত্তা পরিষদ।
৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হবে নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান প্রেসিডেন্ট তাকেদার মেয়াদ। ১ অক্টোবর থেকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন ফ্রান্সের স্থায়ী প্রতিনিধি।
তাকেদা আলেমু বলেন, “আগে কখনোই রোহিঙ্গা ইস্যুতে এ কাউন্সিল ঐকমত্যে উপনীত হতে পারেনি। গত বুধবারের বৈঠকে সেটি সম্ভব হয়েছে। এখন আমরা রোহিঙ্গা ইস্যুকে খুবই গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছি।”
তিনি বলেন, সিকিউরিটি কাউন্সিল এখন পর্যন্ত যতটুকু করেছে, তা যথেষ্ট নয়।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ এবং শেখ হাসিনার শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের কথা জানান মোমেন।