রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ পাঠানোর পর বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর টেলিফোন আসে বলে প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেসসচিব এম নজরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
তিনি বলেন,বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে ভারত সরকারের পূর্ণ সমর্থনের কথা জানিযেছেন সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সুষমা স্বরাজকে উদ্ধৃত করে নজরুল বলেন, “রোহিঙ্গা নিয়ে বাংলাদেশের যে অবস্থান, ভারতেরও একই অবস্থান।”
“তারা (মিয়ানমার) যেন তাদের শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়, সেজন্য ভারতের পক্ষ থেকে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক চাপ সৃষ্টির কথাও বলেছেন উনি (সুষমা)।”
“সুষমা স্বরাজ বলেছেন,রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন বন্ধ করতে হবে,” বলেন উপ প্রেস সচিব।
ত্রাণ সামগ্রী হস্তান্তর করে ভারতের হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলাও সঙ্কট মোকাবেলায় বাংলাদেশের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন।
সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মিয়ানমার সফরে গেলেও রোহিঙ্গা বিষয়ে কিছু বলেননি, যা নিয়ে আলোচনা ছিল।
শরণার্থীদের ফেরত নিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে ভারত ও চীনের মাধ্যমে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর জন্যও বাংলাদেশের অনেকে সরকারকে পরামর্শ দিচ্ছেন।
ভারতের বাংলাদেশের পাশে থাকার বক্তব্যের দিনই মিয়ানমারে চীনের রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে সে দেশের সরকারি সংবাদপত্র নিউ লাইট অব মিয়ানমার বলেছে, রাখাইনের সমস্যার বিষয়টি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে দেখছে বেইজিং।
এই নতুন ও পুরনো মিলিয়ে আট লাখ শরণার্থীকে নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে তাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ। বিষয়টি আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনেও তুলতে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা।
সুষমা স্বরাজ বলেন, রোহিঙ্গা আর বাংলাদেশের একার নয়, এটা এখন আন্তর্জাতিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে শেখ হাসিনা বলেন,“মিয়ানমাকে বুঝতে হবে যে রোহিঙ্গারা তাদের নাগরিক। বাংলাদেশ শুধু মানবিক কারণে মিয়ানমার এই নাগরিকদের আশ্রয় দিয়েছে।”
নতুন করে আসা চার লাখ শরণার্থীদের জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে কক্সবাজারে দুই হাজার একর জায়গার ব্যবস্থাও করেছে বাংলাদেশ সরকার।
এই শরণার্থীদের আশ্রয়,খাদ্য ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সার্বক্ষণিক কাজ করার কথাও বলেন শেখ হাসিনা।
সুষমা স্বরাজকে শেখ হাসিনা বলেন, শরণার্থীরা দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশে থাকলে একটা বড় সমস্যার সৃষ্টি হবে।
শেখ হাসিনার সঙ্গে সুষমা স্বরাজের ফোনালাপের সময় হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলাও গণভবনে ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভীও।