কারিগরি ত্রুটিকে কেন্দ্র করে ইসি-বুয়েট দ্বন্দ্বে যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের ব্যবহার থমকে গিয়েছিল, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেই ‘ই-ভোটিং’ চালু করার প্রস্তাব দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
Published : 11 Jan 2017, 07:53 PM
বুধবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে সংলাপে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়। দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল এই সংলাপে অংশ নেন।
বঙ্গভবনের দরবার হলে দেড় ঘণ্টার এই সংলাপের পর রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের সামনে আলোচনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
আওয়ামী লীগের প্রস্তাবে বলা হয়, “সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বর্তমানে বিরাজমান সকল বিধিবিধানের সাথে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার স্বার্থে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ই-ভোটিং’ এর প্রবর্তন করা হোক।”
ই-ভোটিং হল ভোট গ্রহণ ও দ্রুত গণনার ইলেকট্রনিক পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে ছাপানো ব্যালট পেপার, বাক্স আ সিল লাগে না। ভোটার একটি যন্ত্রে বোতাম চেপেই তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন এবং গণনা হয় স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে। ওই যন্ত্রকে বলা হয় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন, সংক্ষেপে ইভিএম।
বাংলাদেশের ভোটারদের সঙ্গে ইভিএমের প্রথম পরিচয় ঘটে ২০১০ সালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে। ওই নির্বাচনে একটি ওয়ার্ডে ইভিএম ব্যবহার করা হয়।
এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন বিগত নির্বাচন কমিশন সাত বছর আগে যখন এ পদ্ধতি চালুর উদ্যোগ নেয়, তখন সন্দেহ থেকে এর বিরোধিতা করেছিল বিএনপি ও সমমনা কয়েকটি দল।
তবে চট্টগ্রামের সাফল্যের পর নায়ায়ণগঞ্জের কয়েকটি ওয়ার্ডে, নরসিংদী পৌরসভা ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের পুরো নির্বাচন ইভিএমে করা হয়।
সে সময় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং গাজীপুরের রাষ্ট্রায়ত্ত মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির সহায়তায় এ প্রযুক্তি চালু হলেও পাঁচ বছরের মাথায় কারিগরি ত্রুটি নিয়ে ইসি-বুয়েট দ্বন্দ্বে ইভিএম অধ্যায়ে ছেদ পড়ে।
বর্তমান কমিশন এরপর আর ইভিএম ব্যবহার না করলেও মেয়াদের শেষ পর্যায়ে এসে গতবছর নতুন করে তৎপর হয়। এর কারিগরি দিক ও ব্যবহার পর্যালোচনা করতে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ১৯ সদস্যের একটি কমিটিও করা হয়।
সংলাপের পর আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমাম বলেন, “বর্তমান প্রযুক্তিতে ই-ভোটিং ব্যবস্থা চালুর সামর্থ্য নির্বাচন কমিশনের আছে। ই-ভোটিং ব্যবস্থা আগামীতে চালু করা যেতে পারে। আর এ জন্যই আমরা এই প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির কাছে রেখেছি।”
ইভোটিং চালুর বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের কাজ হলেও রাষ্ট্রপতির কাছে কেন এই প্রস্তাব রাখা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রপতি ইসি গঠন করেন। উনি যেভাবে নির্দেশ দিবেন সেভাবে ইসি কাজ করবে। তাই আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে এ প্রস্তাব দিয়েছি।”