আজিমপুরের আস্তানায় অভিযানের সময় মৃত উদ্ধার ‘জঙ্গি’র পরিচয় রাজশাহীর বোয়ালিয়ার শমসেদ বলে জানানো হলেও পুলিশ এখন বলছে, সেটা তার প্রকৃত পরিচয় নয়।
Published : 13 Sep 2016, 12:40 AM
তিনি আসলে গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাটিকামারি গ্রামের এস এম বাতেন কাদেরির ছেলে তানভীর কাদেরি ওরফে সিপার।
তার বাবা ও বোনসহ তিন জনকে সোমবার আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে এই পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মেহেদী হাসান জানিয়েছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বেলা আড়াইটার দিকে বাতেন, তার মেয়ে তানজিলা কাদেরি ও মেয়েজামাই জিয়াউল ইসলামকে আটক করে থানায় আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকাল ৫টার দিকে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।”
শনিবার সন্ধ্যায় বিজিবি সদরদপ্তরের ২ নম্বর গেইটের কাছে আজিমপুর ২০৯/৫ নম্বর বাড়িতে অভিযানের সময় সেখানে এক যুবকের লাশ পাওয়া যায়। সেসময় পাল্টাপাল্টি আঘাতে সন্দেহভাজন তিন নারী জঙ্গি ও পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন।
দুদিন আগের ওই ঘটনায় রোববার রাতে লালবাগ থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলার করার কথা সোমবারই বিকালে জানায় পুলিশ।
মামলায় যে পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তার মধ্যেই প্রথমেই রয়েছেন তানভীর কাদেরি ওরফে শমসেদ ওরফে আবদুল করিম।
তার সঙ্গে তার স্ত্রী আবেদাতুল ফাতেমা ওরফে খাদিজা, তাদের ছেলে তাহরীন কাদির রাসেল, আফরিন ওরফে প্রিয়তী ও শায়লা আফরিনকেও আসামি করা হয়। এদের মধ্যে তাহরীন ছাড়া সবাই হাসপাতালে রয়েছেন।
এর আগে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গুলশান হামলাকারীদের জন্য বসুন্ধরায় ‘আবদুল করিম’ নাম ব্যবহার করে যিনি বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন, তার ছবির সঙ্গে আজিমপুরে নিহতের চেহারার মিল পাওয়া গেছে।
আজিমপুরের ওই বাসা থেকে উদ্ধার ১২-১৩ বছর বয়সী এক কিশোর নিহত ওই ব্যক্তিকে তার বাবা রাজশাহীর বোয়ালিয়ার বাসিন্দা শমসেদ হিসেবে পরিচয় দিয়ে পুলিশকে বলেছে, তিনি বিভিন্ন ছদ্ম নামে জঙ্গিদের জন্য বাড়ি ভাড়া করে দিতেন। আজিমপুরের ওই বাসা ‘শমসেদ’ নামে তিনিই ভাড়া নিয়েছিলেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, রাজশাহীর বোয়ালিয়ায় শমসেদ নামে কাউকে পাওয়া যায়নি। খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে, তিনি গাইবান্ধার বাসিন্দা তানভীর কাদেরি।
গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে ওই হামলার কিছুদিন আগে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি ফ্ল্যাটে হামলাকারীরা আশ্রয় নিয়েছিল। সেই ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়া হয়েছিল ‘আব্দুল করিম’ নামে। করিম আর শমসেদ একই ব্যক্তি বলে পুলিশের ধারণা।
গত ২৭ অগাস্ট নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় ‘নব্য জেএমবির’ শীর্ষ নেতা তামিম চৌধুরী পুলিশের এক অভিযানে নিহত হন। এরপর ২ সেপ্টেম্বর নিহত হন তামিমের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ জাহিদুল ইসলাম, যিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়া একজন মেজর।
পুলিশ মহাপরিদর্শক শহীদুল হক রাতে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “রূপনগরে অপারেশনের পরে আমরা জানতে পেরেছিলাম, রূপনগরে যে মারা গেছে জাহিদ তার ফ্যামিলি এবং আরো দুই তিনজন জঙ্গি আজিমপুর এলাকায় কোথাও লুকিয়ে আছে। আমরা বেশ কয়েকদিন যাবৎ এটা তল্লাশি করতেছি। আজকে তল্লাশিতে আমরা তাদের আশ্রয় খুঁজে পেয়েছি।”