আজিমপুরে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের ঘটনায় মামলা

রাজধানীর আজিমপুরে জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে হতাহতের ঘটনায় পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Sept 2016, 03:50 PM
Updated : 18 Sept 2016, 02:48 PM

রোববার রাতে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) এসআই দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেন বলে লালবাগ থানার এসআই আবদুল মোনায়েম জানিয়েছেন।

আসামিরা হলেন- অভিযানের সময় মৃত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ‘নিও জেএমবি’র সক্রিয় সদস্য’ তানভীর কাদেরি ওরফে শমসেদ ওরফে আবদুল করিম, তার স্ত্রী আবেদাতুল ফাতেমা ওরফে খাদিজা, তাদের ছেলে তাহরীন কাদির রাসেল, আফরিন ওরফে প্রিয়তী ও শায়লা আফরিন।

এদের মধ্যে তানভীর শনিবার রাতে অভিযানের সময় নিজের গলায় ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক।

এসআই মোনায়েম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আজিমপুরের একটি বাসাকে আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করে জঙ্গি সংগঠনের কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগ আনা হয়েছে।

“পুলিশের উপর হামলার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।”

শনিবার সন্ধ্যায় বিজিবি সদর দপ্তরের ২ নম্বর গেইটের কাছে আজিমপুর ২০৯/৫ নম্বর বাড়িতে অভিযানের সময় তানভীরের লাশ পাওয়া যায়। সন্দেহভাজন নারী জঙ্গিদের হামলায় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন।

ওই ঘটনায় আহত ওই তিন নারী জঙ্গি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সিটিটিসির উপকমিশনার মহিবুল বলেন, “ঘটনাস্থল থেকে তাহরীন কাদেরি নামের এক কিশোরকেও উদ্ধার করা হয়।

এর আগে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গুলশান হামলাকারীদের জন‌্য বসুন্ধরায় ‘আবদুল করিম’ নাম ব‌্যবহার করে যিনি বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন, তার ছবির সঙ্গে আজিমপুরে নিহতের চেহারার মিল পাওয়া গেছে। 

নিহত এই জঙ্গির পরিচয়পত্র যাচাই করে রাজশাহীর বোয়ালিয়ার বাসিন্দা শমসেদ হিসেবে পুলিশের পক্ষ থেকে এর আগে তার পরিচয় দেওয়া হলেও সেটা ‘ভুয়া প্রমাণিত’ হয়েছে বলে সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন জানিয়েছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বাড়ি ভাড়া নেওয়ার জন্য জমা দেওয়া পরিচয়পত্রের তথ্য যাচাই করে সত্যতা পাওয়া যায়নি। খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে, তিনি গাইবান্ধার বাসিন্দা তানভীর কাদেরি।”     

আজিমপুরের ওই বাসা থেকে ১২-১৩ বছর বয়সী যে কিশোরকে উদ্ধার করা হয়েছে তার বাবা এই তানভীর, যিনি বিভিন্ন ছদ্ম নামে জঙ্গিদের জন্য বাড়ি ভাড়া করে দিতেন।

সোমবার ওই কিশোরকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের হেফাজতে নেওয়া আবেদন করে পুলিশ।

আবেদনের শুনানি নিয়ে মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস মামলাটি শিশু আদালতে উপস্থাপন করতে নির্দেশ দেন বলে সংশ্লিষ্ট আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা রাকিবুল আলম জানান।

মহিবুল বলেন, মামলা শিশু আদালতে যাওয়ার আগে ওই কিশোর টঙ্গীর কিশোর সংশোধনাগারে থাকবে।

“যেই তিন নারী চিকিৎসাধীন আছেন সুস্থ হবার পর তাদেরও আদালতে পাঠানো হবে।”