আজিমপুরের বাসা ভাড়া নেওয়া হয় ‘শমসেদ’ নামে

ঢাকার আজিমপুরে অভিযানের সময় নিহত সন্দেহভাজন যুবক ‘শমসেদ’ নামে বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জ‌্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Sept 2016, 08:01 AM
Updated : 12 Sept 2016, 07:00 PM

অভিযানে আটক তিন নারীর একজন ওই যুবকের স্ত্রী বলেও মনে করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) মাসুদুর রহমান রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই বাসা থেকে ১২-১৩ বছর বয়সী যে কিশোরকে তারা উদ্ধার করেছিলেন, সে জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তি তার বাবা। তার নাম শমসেদ, বাড়ি রাজশাহীর বোয়ালিয়ায়।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন এ বিষয়ে বলেন, “যদ্দুর শুনেছি, ১ অগাস্ট তারা বাসা ভাড়া নিয়েছিল। বাসা ভাড়ার কাগজপত্র দেখে এ বিষয়ে আমরা বিস্তারিত বলতে পারব।”

এর আগে শনিবার রাতে পুলিশ বলেছিল, নিহত যুবক নব্য জেএমবির নেতা এবং গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাকারীদের সহযোগী ‘আব্দুল করিম’ বলে তাদের ধারণা।

শনিবার সন্ধ্যায় আজিমপুর বিজিবি সদরদপ্তরের ২ নাম্বার গেইটের ওই বাসায় পুলিশের অভিযানের সময় শমসেদ ওরফে আব্দুল করিমের লাশ পাওয়া যায়। আহত হন সন্দেহভাজন তিন নারী জঙ্গি ও পাঁচ পুলিশ সদস্য।

রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় নিহত সন্দেভাজন জঙ্গির গলা কাটা অবস্থায় পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

আটক তিন নারীর মধ্যে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বাকি দুজনও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে একজন যুগ্ম কমিশনার পর্যায়ের কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান।

আব্দুল বাতেন বলেন, “আমরা যতটুকু জেনেছি, এই তিনজনের মধ্যে একজন শমসেদের স্ত্রী, আরেকজন পলাতক জেএমবি নেতা চকলেটের স্ত্রী। আরেকজন সম্ভবত তাদেরই সঙ্গে সম্পৃক্ত কারও স্ত্রী।”

অভিযানে ওই বাসা থেকে একটি ছেলে সহ তিন শিশুকে উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের মধ্যে সবার বড় ছেলেটির বয়স ১২ থেকে ১৩ বছর। আর দুটি মেয়ের মধ্যে একজনের বয়স নয় থেকে ১০ বছর, অন্যটির বছর খানেক।

উপ কমিশনার মাসুদুর রহমান বলেন, তিন শিশুর মধ্যে ছেলেটিই নিহতের নাম ‘শমসেদ’ বলে পুলিশকে জানিয়েছে। ওই নামেই সে আজিমপুরের বাসাটি ভাড়া নিয়েছিল।

আর মেয়ে দুটির মধ‌্যে যে বয়সে বড়, সে সপ্তাহখানেক আগে রূপনগরে নিহত জঙ্গি জাহিদুল ইসলামের সন্তান বলে ধারণা করার কথা জানান মাসুদুর রহমান।

‘শমসেদ’ নব্য জেএমবির সক্রিয় সদস্য ছিলেন জানিয়ে আব্দুল বাতেন বলেন, “বাসা ভাড়া করা থেকে শুরু করে ইন্টারনেটে বিভিন্ন চ্যানেল, সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগের কাজ করতো সে। নিজেদের কার্যক্রম সম্পর্কে বিভিন্ন জায়গায় অবহিতও করত।”

গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে ওই হামলার কিছুদিন আগে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি ফ্ল্যাটে হামলাকারীরা আশ্রয় নিয়েছিল। সেই ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়া হয়েছিল ‘আব্দুল করিম’ নামে। করিম আর শমসেদ একই ব্যাক্তি বলে পুলিশের ধারণা।

গত ২৭ অগাস্ট নারায়নগঞ্জের পাইকপাড়ায় ‘নব্য জেএমবির’ শীর্ষ নেতা তামিম চৌধুরী পুলিশের এক অভিযানে নিহত হন। এরপর ২ সেপ্টেম্বর নিহত হন তামিমের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ জাহিদুল ইসলাম, যিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়া একজন মেজর।

পুলিশ মহাপরিদর্শক শহীদুল হক রাতে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “রূপনগরে অপারেশনের পরে আমরা জানতে পেরেছিলাম, রূপনগরে যে মারা গেছে জাহিদ তার ফ্যামিলি এবং আরো দুই তিনজন জঙ্গি আজিমপুর এলাকায় কোথাও লুকিয়ে আছে। আমরা বেশ কয়েকদিন যাবৎ এটা তল্লাশি করতেছি। আজকে তল্লাশিতে আমরা তাদের আশ্রয় খুঁজে পেয়েছি।”