জঙ্গিদের পেছনে অর্থ ঢালার অভিযোগে বিচারের মুখে থাকা ব্যারিস্টার সাকিলা ফারজানা বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন।
Published : 28 Nov 2018, 04:13 PM
জঙ্গি অর্থায়ন: বিএনপি নেতার মেয়েসহ ৩ আইনজীবী গ্রেপ্তার
একাদশ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে সাকিলাকে প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয়েছে।
সাকিলার বাবা প্রয়াত সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম এক সময় ওই আসনে বিএনপির সংসদ সদস্য ছিলেন। সংসদে হুইপের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদেও ছিলেন তিনি।
সোমবার বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে চট্টগ্রাম-৫ আসনে শাকিলার পাশাপাশি দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এস এম ফজলুল হককেও চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই আসনে মীর নাছিরই মূল প্রার্থী, তিনি কোনো সমস্যায় পড়লে বিকল্প রাখা হয়েছে।
চট্টগ্রাম-৫ আসনে এখন সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ; এবারও তিনি মহাজোটের প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন।
জঙ্গিবাদে মদদ দেওয়ার জন্য বিএনপিকে বরাবরই দায়ী করে আসছেন আওয়ামী লীগের নেতারা; এর মধ্যেই শাকিলাকে ধানের শীষের মনোনয়ন দেওয়া হল।
জঙ্গি সংগঠন হামজা বিগ্রেডকে অর্থায়নের অভিযোগে ২০১৫ সালের ১৮ অগাস্ট ঢাকার ধানমণ্ডি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাকিলাকে; তার দুই সহকর্মী আইনজীবীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল সেদিন।
গ্রেপ্তারের পর তাদেরকে ওই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি বাঁশখালীর লটমনি পাহাড়ে জঙ্গি আস্তানা ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়।
এরপর হাটহাজারীর আবু বকর মাদ্রাসা থেকে ২০১৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে জঙ্গিদের ‘তাত্ত্বিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ পাওয়ার ঘটনায় হাটহাজারী থানায় সন্ত্রাস ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের আরেকটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাদের।
কয়েকদফা রিমান্ড শেষে সর্বোচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে ২০১৬ সালের ৭ জুন কারাগার থেকে মুক্তি পান শাকিলা।
হেফাজতে ইসলামের দুই কর্মীর কথায় ব্যারিস্টার সাকিলা ফারজানা শহীদ হামজা বিগ্রেডের সংগঠক মনিরুজ্জামান ডনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এক কোটি আট লাখ টাকা দিয়েছিলেন বলে তার আইনজীবী দাবি করেছিলেন।
শাকিলার আইনজীবী আবদুস সাত্তার বলেছিলেন, হেফাজত নেতাদের সাড়ে তিনশ মামলা পরিচালনার জন্য তাদের কাছ থেকে শাকিলা ওই টাকা পেয়েছিলেন এবং চুক্তি অনুযায়ী কাজ করতে না পারায় তা ফেরত দেন।
ওই অর্থ সানজিদা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করেছিলেন শাকিলা। তবে অ্যাকাউন্টটি যে
মনিরুজ্জামান ডনের তা তার জানা ছিল না বলে তার আইনজীবী সাত্তারের দাবি।
চট্টগ্রামের এই মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবুল হাশেম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “মনিরুজ্জামান ডন জবানবন্দিতে বলেছেন, সানজিদা এন্টারপ্রাইজের অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে এবং এ টাকা দিয়ে বাঁশখালীতে জঙ্গি প্রশিক্ষণের জন্য অস্ত্র কেনা হয়েছে। মামলা না চালানোয় টাকা ফেরত দেওয়ার যে দাবি এখন করা হচ্ছে, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়।”
শাকিলার মা ফরিদা ওয়াহিদের দাবি, তার মেয়ে বিএনপির হয়ে অনেক মামলা লড়ায় ‘শাস্তি’ দিতে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে।