চীন সরকারের পক্ষ থেকে দৈনিক শনাক্ত ও মৃত্যুর যে পরিসংখ্যান দেওয়া হচ্ছে তাতে জনগণ আস্থা রাখতে পারছে না।
Published : 19 Dec 2022, 07:24 PM
গণবিক্ষোভের মুখে চীন সরকার তাদের ‘জিরো-কোভিড’ নীতি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেওয়ার পর দেশটিতে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর খবর প্রকাশ পেয়েছে।
কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে দুইজন মারা যাওয়ার খবর চীন সোমবার জানিয়েছে বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
টিকা আবিষ্কারের পর পুরো বিশ্ব যখন করোনা ভাইরাসকে সঙ্গে নিয়েই স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সিদ্ধান্ত নেয় তখনও চীন সরকার তাদের ‘জিরো-কোভিড’ নীতিতে অটুট ছিল। কিন্তু গত কয়েকমাসে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে সরকারের কঠোর লকডাউনের বিরুদ্ধে জনগণ সড়কে নেমে বিক্ষোভ দেখালে এ মাসের শুরুর দিকে বিধি অনেকটাই শিথিলের ঘোষণা দেওয়া হয়।
লকডাউন বিধি শিথিল করার পরও গত মাসের তুলনায় এ মাসে চীনে দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। যা দেশটির প্রকৃত অবস্থা নয় বলেই বিশ্বাস সাধারণ মানুষ ও বিশেষজ্ঞদের।
তাদের আশঙ্কা, চীনে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিস্তারের গতি সবচেয়ে বেশি। কিন্তু লকডাউন বিধি শিথিলের অংশ হিসেবে সেখানে গণহারে কোভিড পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দৈনিক শনাক্ত কম পাওয়া যাচ্ছে। যদিও হাসপাতালগুলোতে জ্বর আক্রান্ত রোগীর লাইন দীর্ঘ হচ্ছে।
সোমবার সেখানে কোভিড আক্রান্ত হয়ে দুই জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে ন্যাশনাল হেল্থ কমিশন (এনএইচসি)। বলেছে, গত ৩ ডিসেম্বরের পর এটাই সেখানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা।
কোভিড-১৯ মহামারীতে মৃত্যু আটকাতে টানা তিন বছর ধরে চীনে কঠোর লকডাউন জারি ছিল। যা দেশটির অর্থনীতিতেও বিরূপ প্রভাব ফেলেছে।
এখন তড়িঘড়ি কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার কারণে চীনে ২০২৩ সালে রোগীর ব্যাপক উল্লম্ফন হবে এবং ১০ লাখের বেশি মৃত্যু দেখা যেতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড অ্যাভালুয়েশন ইনস্টিটিউট (আইএইচএমই) পূর্বানুমান করেছে।
রয়টার্সের সাংবাদিকরাও গত শনিবার বেইজিংয়ে কোভিডে মৃতদের সৎকারের জন্য নির্ধারিত একটি শ্মশানের বাইরে মৃতদেহ বহনকারী গাড়ি সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে এবং শ্মশানের কর্মীদের সুরক্ষা স্যুট পরে মৃতদেহগুলি নিয়ে যেতে দেখেছে। তবে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মৃত্যুর কারণ কোভিড কিনা তা রয়টার্স নিশ্চিত হতে পারেনি।
তবে সোমবার দুইজনের মৃত্যুর যে খবর পাওয়া গেছে সেটা চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উইবো তে দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়।
একজন লেখেন, ‘‘অসম্পূর্ণ পরিসংখ্যান প্রকাশের কী কোনো মানে আছে?”
আরেকজন লেখেন, ‘‘এটা কী জনগণের সঙ্গে প্রতারণা নয়?”
এ বিষয়ে এনএইচসি-র কোনো মন্তব্য পায়নি রয়টার্স।