মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, গাজার দায়িত্বে হামাসের থাকা আর চলবে না, কিন্তু ইসরায়েলও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটির পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চায় না।
Published : 01 Nov 2023, 10:12 AM
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসকে গাজার ক্ষমতা থেকে সরানো হলে ফিলিস্তিনি ছিটমহলটির ভবিষ্যতের ‘বিভিন্ন ধরনের সম্ভাব্য বিন্যাস’ কেমন হতে পারে তা যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য দেশগুলো খোঁজ করে দেখছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
মঙ্গলবার মার্কিন সিনেটের আপ্রোপ্রিয়েশন্স কমিটির শুনানিতে ব্লিনকেন বলেন, ফিলিস্তিনি ঘনবসতিপূর্ণ ছিটমহলটির দায়িত্বে হামাসের থাকা আর চলবে না, কিন্তু ইসরায়েলও গাজা পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চায় না।
এই দুই অবস্থানের মধ্যবর্তী ‘বিভিন্ন সম্ভাব্য বিন্যাসগুলো’ তারা এখন খুব নিবিড়ভাবে খুঁজে দেখছেন বলে ব্লিনকেন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হবে কার্যকর ও পুনরুজ্জীবিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে গাজা শাসনের দায়িত্ব দেওয়া, কিন্তু এটি করা যাবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। যদি সেটি না পারা যায় তাহলে অন্যান্য অস্থায়ী ব্যবস্থা আছে, যেমন এই ক্ষেত্রে ওই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশকে যুক্ত করা। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকেও নিয়োগ দেওয়া যারা নিরাপত্তা ও শাসন, উভয়ক্ষেত্রে সহায়তা করবে।”
৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাস যোদ্ধাদের নজিরবিহীন হামলার প্রতিশোধ নিতে ওই দিন থেকেই গাজায় অবিরাম হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। তারা হামাসকে নির্মূল করার প্রত্যয় ঘোষণা করেছে। কিন্তু যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে তা কীভাবে শেষ হবে তা নিয়ে পরিষ্কার কোনো ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না।
মঙ্গলবার ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাজার উত্তরাংশে ঘনবসতিপূর্ণ একটি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের বিমান হামলায় অন্তত ৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
গাজায় তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৮৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘ ও অন্য ত্রাণ কর্মকর্তারা জানান, চারদিক থেকে অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের অবিরাম হামলায় আটকা পড়া ফিলিস্তিনিরা জনস্বাস্থ্য বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে, প্রার্য় শেষ হয়ে আসা বিদ্যুৎ সরবরাহের কারণে আহতদের চিকিৎসা করতে হাসপাতালগুলোকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ইসরায়েলে যদি যুদ্ধে জয়ী হয়, তাহলে ফিলিস্তিনি ছিটমহলটি কীভাবে শাসিত হবে তা নিয়ে ওয়াশিংটন ইসরায়েলের সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছে, পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোর সঙ্গেও কথা বলছে; কিন্তু এখনও পরিষ্কার কোনো পরিকল্পনা সামনে আসেনি, জানিয়েছে রয়টার্স।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল এ পর্যন্ত যেসব বিকল্প যাচাই করেছে তার মধ্যে মার্কিন সেনাসহ একটি বহুজাতিক বাহিনী গাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে অথবা সাময়িকভাবে গাজা জাতিসংঘের তদারকিতে থাকবে, মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে ব্লুমবার্গ।
এই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, শান্তিরক্ষী বাহিনীর অংশ হিসেবে গাজায় মার্কিন সেনা পাঠানোর কথা বিবেচনা করা হচ্ছে না বা এই নিয়ে আলোচনা করাও হচ্ছে না।
ইসরায়েলকে হামাসের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি করার জন্য একটি কার্যকর পরিকল্পনা তৈরি করার পাশপাশি যুদ্ধ থেকে বের হয়ে আসার একটি কৌশলও তৈরি করতে হবে বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কয়েকজন উদ্বিগ্ন সহযোগী।
আরও পড়ুন: