যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্প্রসারিত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তির (ইডিসিএ) আওতায় হওয়া নতুন চারটি সামরিক ঘাঁটির অবস্থান দক্ষিণ চীন সাগরমুখী একটি প্রদেশসহ ফিলিপিন্সের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র।
২০১৪ সালে স্বাক্ষরিত ইডিসিএ-র আওতায় ফিলিপিন্সের ৫টি ঘাঁটিতে আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশাধিকার ছিল; দক্ষিণ চীন সাগরে এবং তাইওয়ান নিয়ে চীনের ক্রমাগত জোরালো অবস্থানের প্রেক্ষিতে গত মাসে মার্কোস আরও ৪টি ঘাঁটিতে এ প্রবেশাধিকারের অনুমতি দেন।
“ফিলিপিন্সের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবে অতিরিক্ত এ চারটি ঘাঁটি। কয়েকটি হবে উত্তরে, কিছু হতে পারে পালাওয়ানের আশপাশে, আরও দক্ষিণেও হতে পারে,” ফিলিপিন্সের সামরিক বাহিনীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের ফাঁকে মার্কোস সাংবাদিকদের এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ইডিসিএ চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ওই ঘাঁটিগুলোতে যৌথ প্রশিক্ষণ, সামরিক সরঞ্জাম রাখা এবং রানওয়ে, জ্বালানি সংরক্ষণাগার ও ঘরসহ নানান সামরিক স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি পায়। তবে এসব ঘাঁটিগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্থায়ী হবে না।
ফিলিপিন্স এবং যুক্তরাষ্ট্র শিগগিরই নতুন ঘাঁটিগুলা কোথায় হবে তা জানাবে; এগুলো দেশটির বৃহত্তম দ্বীপ লুজনের ‘পূর্ব দিকের’ প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াবে, বলেছেন মার্কোস।
লুজন হচ্ছে তাইওয়ানের সবচেয়ে কাছে অবস্থিত ফিলিপিন্সের একটি মূল দ্বীপ।
ফিলিপিন্সের সামরিক বাহিনীর সাবেক এক প্রধান প্রকাশ্যে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র লুজন দ্বীপের ইসাবেলা, জাম্বালেস ও কাগায়ানে এবং দক্ষিণপশ্চিমের পালাওয়ানের ঘাঁটিগুলোতে প্রবেশাধিকার চাইছে। পালাওয়ান দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জের কাছেই অবস্থিত।
তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে কোনো সংঘাত বাধলে তাতে তাদেরও জড়ানো হতে পারে, এ নিয়ে উদ্বেগ থেকে সম্ভাব্য যেসব স্থানে এই ইডিসিএ-র আওতাধীন ঘাঁটিগুলো হবে, সেসব এলাকার স্থানীয় সরকারের অনেক নেতাই মার্কোসের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন।
কিন্তু মার্কোস বলেছেন, তার সরকার ঘাঁটিগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তৃত প্রবেশাধিকারের গুরুত্ব এবং ‘কেন এই সিদ্ধান্ত তাদের প্রদেশগুলোর জন্য উপকারী’ তা নিয়ে ওই নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছে।
যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে বিদ্যমান ৫টি ঘাঁটি- পালাওয়ানের আন্তোনিও বাতিস্তা বিমানঘাঁটি, পামপাঙ্গার বাসা বিমানঘাঁটি, নুভা এসিজার ফোর্ট ম্যাগসেসাই, চেবুর বেনিতো এবুন বিমানঘাঁটি ও মিন্দানাওর লুম্বিয়া বিমানঘাঁটিতে অবকাঠামো নির্মাণে ৮ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ফিলিপিন্সের সেনাদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে মার্কোস দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বহিঃস্থ হুমকি ক্রমেই আরও ‘জটিল’ ও ‘অনিশ্চিত’ হয়ে উঠছে জানিয়ে সেনাদের সর্বদা সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।