জুলাইয়ে বেলারুশ যাচ্ছে পুতিনের পারমাণবিক অস্ত্র

এখন পর্যন্ত যুদ্ধে প্রতিপক্ষকে আঘাত হানতে কেবল মাত্র যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার করেছে।

রয়টার্স
Published : 9 June 2023, 05:16 PM
Updated : 9 June 2023, 05:16 PM

আগামী ৭-৮ জুলাইয়ের মধ্যে বিশেষ অস্ত্রভাণ্ডার প্রস্তুত হয়ে যাবে। তার পরই রাশিয়া প্রতিবেশী দেশ বেলারুশে কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন শুরু কবে বলে শুক্রবার জানিয়েছেন খোদ ভ্লাদিমির পুতিন।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর এই প্রথম রাশিয়া নিজ ভূখণ্ডের বা্ইরে কোথায়ও পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন করতে যাচ্ছে।

পরমাণু অস্ত্রে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর দেশ রাশিয়া গত বছর ফেব্রুয়ারিতে প্রতিবেশী ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরু করে। যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সবচেয়ে বড় যুদ্ধে পরিণত হয়েছে।

শুক্রবার পুতিন বলেন, যু্ক্তরাষ্ট্র এবং তাদের পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়াকে মাথানত করতে বাধ্য করতে ইউক্রেইনে ক্রমাগত অস্ত্র সরবরাহ করে এই ‘প্রক্সি ওয়ার’ এর বিস্তার ঘটিয়ে চলেছে।

গত মার্চে পুতিন প্রথম ঘোষণা দেন, তিনি মিত্রদেশ বেলারুশে কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন করতে চান। যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটো-র ইউক্রেইনকে সমর্থন করার ইচ্ছার বিষয়ে সতর্কবার্তা দিতেই পুতিনের ওই ঘোষণা ছিল।

নেটো জোটের নেতৃত্বে থাকা দেশগুলো বলেছে, কিইভ যতদিন চায় ততদিন তারা ইউক্রেইনকে সমর্থন এবং নিজেদের প্রতিরক্ষায় প্রয়োজনীয় সামরিক সহায়তা প্রদান করে যাবে।

সোচিতে কৃষ্ণ সাগরের পাড়ে পুতিনের গ্রীষ্মকালীন অবকাশ যাপন ভবনে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট অলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে পরমাণু অস্ত্রের মোতায়েনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনার সময় পুতিন বলেন, ‘‘সবকিছু পরিকল্পনা মাফিকই চলছে।

‘‘৭-৮ জুলাইয়ের মধ্যে যথাযথ অবকাঠামোর নির্মাণ কাজ শেষ হবে এবং আমরা অবিলম্বে আপনার ভূখণ্ডে উপযুক্ত ধরণের অস্ত্র স্থাপনের সাথে সম্পর্কিত কার্যক্রম শুরু করব।”

ক্রেমলিন থেকে দুই নেতার এসব বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।

জবাবে লুকাশেঙ্কো বলেন, ‘‘ধন্যবাদ আপনাকে, ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ।”

৭০ বছর বয়সী পুতিন ইউক্রেইন যুদ্ধকে নেটোর ক্রামগত বিস্তারের বিরুদ্ধে রাশিয়ার অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই বলে মনে করেন। তিনি পশ্চিমাদের সতর্ক করে বলেছেন, মস্কো কিছুতেই পিছু হটবে না।

এদিকে, ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদেমির জেলেনস্কিও পণ করেছেন, ইউক্রেইনের ভূখণ্ড থেকে শেষ রুশ সেনাকে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত তারা থামবেন না। এমনকি ২০১৪ সালের যুদ্ধে রাশিয়ার দখল করে নেওয়া ক্রিমেয়াও এবার তারা উদ্ধার করে তবেই ক্ষান্ত হবেন।

বেলারুশে পুতিনের পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের বিষয়টি গভীর মনযোগে লক্ষ্য করছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের নেটো মিত্ররা। চীনও খানিকটা নিরবে বিষয়টির উপর নজর রাখছে। দেশটি যুদ্ধে পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহারের ভয়াবহ পরিণামের বিষয়ে বার বার সব পক্ষকে সতর্ক করে যাচ্ছে।

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার নেতারা বলতে গেলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কঠোর পরিশ্রম করে সোভিয়েত ইউনিয়নের মোতায়েন করা পরমাণু অস্ত্রগুলো অস্ত্রাগারে ফিরেয়ে নিয়েছিল। ওই সময় সদ্য স্বাধীন হওয়া ইউক্রেইন, কাজাখস্তান, বেলারুশ ও রাশিয়ায় পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছিল।

এখন পর্যন্ত যুদ্ধে প্রতিপক্ষকে আঘাত হানতে কেবল মাত্র যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার করেছে। ১৯৪৫ সালে দেশটি জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে পরমাণু অস্ত্রের হামলা চালায়।