দুটি প্রদেশের নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশনকে অর্থ দেওয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বিপাকে পড়েছে শাহবাজ শরিফের সরকার।
Published : 09 Apr 2023, 03:23 PM
পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্ব ব্যাংকের শীতকালীন বৈঠকে অংশ নিতে ওয়াশিংটন যাওয়ার কথা থাকলেও, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তিনি ওই সফর বাতিল করেছেন।
তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত পাকিস্তান এখন আইএমএফের বেইলআউট প্যাকেজের অর্থ পেতে তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করছে। এদিকে নির্বাচন কমিশনকে অর্থ দেওয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের এক নির্দেশের পর পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত ও সরকারও মুখোমুখি হয়ে পড়েছে।
শারীরিকভাবে উপস্থিত না থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বৈঠকগুলোতে তিনি ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকবেন এবং ওয়াশিংটনে পাকিস্তানের একটি প্রতিনিধি দলও উপস্থিত থাকবে, শনিবার দার এমনটাই বলেছেন বলেও জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
শাহবাজ শরিফের সরকার ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মধ্যে তুমুল রাজনৈতিক বিরোধের মধ্যে নভেম্বর থেকে আইএমএফের বেইলআউট কর্মসূচিও থমকে থাকায় পাকিস্তান ঋণখেলাপি হওয়ার বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়েছে।
দার জানিয়েছেন, পাকিস্তানে দুটি প্রদেশের নির্বাচন আগামী মাসে হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে অক্টোবরে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়, কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করে মে-তেই নির্বাচন করার নির্দেশ দিলে রাজনৈতিক সংকট জটিল আকার ধারণ করে।
“দেশ হিসেবে এক অদ্ভূত জঞ্জালের ভেতর আটকে গেছি আমরা, এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমি সেখানে সরাসরি উপস্থিত থাকার পরিকল্পনা বাদ দিয়েছি,” টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে বলেন দার।
সফর বাতিলের সঙ্গে আইএমএফের বেইল আউট কর্মসূচির অর্থ আটকে থাকার সম্পর্ক নিয়ে যেসব প্রতিবেদন এসেছে মন্ত্রী সেগুলোও খারিজ করে দিয়েছেন।
নির্বাচন অনুষ্ঠানে সোমবারের মধ্যে কর্তৃপক্ষকে দুই হাজার ১০০ কোটি রুপি দিতে সরকারকে নির্দেশ দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট একটি ‘সাংবিধানিক সংকট’ সৃষ্টি করেছে বলেও মন্তব্য করেন দার।
তিনি জানান, আইএমএফের ১১০ কোটি ডলার পেতে নিজেদের অংশে থাকা সব শর্তই পূরণ করেছে পাকিস্তান। বাকি আছে কেবল একটি দেশ তাদেরকে ১০০ কোটি ডলার সহায়তা দেবে সে নিশ্চয়তা পাওয়া।
এর বাইরে অন্য একটি দেশ তাদেরকে ২০০ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েও দিয়েছে, বলেছেন পাকিস্তানের এই অর্থমন্ত্রী।
দার দেশদুটির নাম না বললেও পাকিস্তানের অর্থ প্রতিমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, পাকিস্তানকে অর্থ সহায়তা দেওয়ার অঙ্গীকারের বিষয়টি সৌদি আরব আইএমএফকে জানিয়ে দিয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, ২০০ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়ার অঙ্গীকার করা দেশটি হচ্ছে সৌদি আরব, আর সংযুক্ত আরব আমিরাতের ১০০ কোটি ডলার সহায়তার নিশ্চয়তা এখনও পাওয়া যায়নি।
এই ১০০ কোটি ডলার সহায়তার নিশ্চয়তা মেলার পরপরই কর্মী পর্যায়ের চুক্তি হয়ে যাবে। এর বাইরে আইএমএফের অর্থ পেতে আর কোনো শর্ত বাকি নেই বলেই দাবি তার।
পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৪২০ কোটি ডলারের কাছাকাছি ঘোরাফেরা করছে, যা দিয়ে তাদের এক মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোও কষ্টসাধ্য।