পোল্যান্ডে যে ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরিত হয়েছে সেটা ‘ইচ্ছাকৃত হামলা ছিল’ এমন কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন নেটো প্রধান ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ।
তিনি বলেন, ‘‘রাশিয়ায় নেটোর বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নেয়ার কোনো ইঙ্গিত নেই।”
তবে তদন্ত এখনো চলছে এবং ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে বলেও জানান তিনি।
পোল্যান্ডে ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরণের বিষয়ে নেটো রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে স্টলটেনবার্গ এ কথা বলেন বলে জানায় বিবিসি।
এর আগে পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দজেই দুদাও একই কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, গত রাতে পোল্যান্ডের শস্য ক্ষেতে ক্ষেপণাস্ত্র পড়ার কারণ ‘খুব সম্ভবত ইউক্রেইনের আকাশ সুরক্ষা ব্যবস্থা’।
মঙ্গলবার রাতে ইউক্রেইন সীমান্তের কাছে পোল্যান্ডের একটি গ্রামে ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরিত হয়ে দুই জন নিহত হন। পোল্যান্ড নেটো সামরিক জোটভুক্ত দেশ হওয়ায় ওই ঘটনায় ইউক্রেইন যুদ্ধ দেশটির সীমান্ত পেরিয়ে আশপাশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।
ঘটনার পরপরই ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, ‘‘রাশিয়ার দুটি ক্ষেপণাস্ত্র পোল্যান্ডে আঘাত হেনেছে।’’
কিন্তু রাশিয়া হামলার দায় অস্বীকার করে বলেছে, “যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার উস্কানি তৈরির লক্ষ্যে সচেতনভাবে এ অভিযোগ করা হচ্ছে।”
ক্ষেপণাস্ত্র পড়ার কয়েক ঘণ্টা পরই পোল্যান্ড জানায়, তারা নেটো জোটের অনুচ্ছেদ ৪ কার্যকর করতে যাচ্ছে। এই অনুচ্ছেদে নিরাপত্তা হুমকির মুখে আলোচনার জন্য জোটের মিত্রদের আনুষ্ঠানিকভাবে ডাকা হয়।
ইন্দোনেশিয়ায় বিশ্বের শক্তিশালী অর্থনীতির দেশগুলোর জোট জি২০’র চলমান সম্মেলনের মধ্যে পোল্যান্ডের ঘটনা ব্যাপক গুরত্ব পায়। মঙ্গলবার ওই সম্মেলন শুরু হয় এবং সেদিন থেকেই রাশিয়া ইউক্রেইনের উপর নতুন করে তীব্র ক্ষেপণাস্ত হামলা চালাচ্ছে।
তার মধ্যেই পোল্যান্ডে ক্ষেপণাস্ত্র পড়ার ঘটনায় বালিতে জরুরি বৈঠকে বসেন বিশ্বনেতারা।
জি৭ ভুক্ত যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স, কানাডা, ইতালি, ব্রিটেন ও জাপানের নেতাদের পাশাপাশি স্পেন ও নেদারল্যান্ডের নেতারাও ওই জরুরি বৈঠকে যোগ দেন। জি২০ সম্মেলন উপলক্ষ্যে তারা সবাই এখন বালিতে আছেন। জাপান ছাড়া বাকি দেশগুলো নেটোর সদস্য।
এ বৈঠকের পর বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাংবাদিকদের বলেন, ওই ক্ষেপণাস্ত্রটি ‘সম্ভবত’ রাশিয়া থেকে ছোড়া হয়নি।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ও তার নেটো মিত্ররা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে।
রাশিয়া থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার প্রমাণ না পাওয়া যাওয়ায় আপাতত স্বস্তি দেখা গেলেও নেটো প্রধান স্পষ্ট করেই বলেছেন, "ইউক্রেইনে অবৈধ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ায় চূড়ান্ত দায় রাশিয়াকেই বহন করতে হবে।”