ভারতীয় সেনা সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর বেসামরিক কর্মকর্তারা তাদের স্থলাভিষিক্ত হবেন বলে উভয় দেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
Published : 03 Feb 2024, 11:39 PM
ভারত আগামী মে মাসের মধ্যে মালদ্বীপ থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার করে নেবে বলে শনিবার জানিয়েছে মালদ্বীপের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
দুই পক্ষের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কয়েক দফা আলোচনার মধ্যে এ ঘোষণা এল।
মালদ্বীপে ভারতের প্রায় ৮০ জন সেনা সদস্য নানা দায়িত্বে রয়েছেন। মে মাসে সেনা সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর বেসামরিক কর্মকর্তারা তাদের স্থলাভিষিক্ত হবেন বলেও উভয় দেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ভারতীয় সেনাদের প্রথম দলটি আগামী ১০ মার্চ এবং শেষ দলটি ১০ মে মালদ্বীপ ছেড়ে যাবে বলেও দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়।
ইন্দো-প্যাসেফিক অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারে ভূরাজনৈতিক কারণে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে মালদ্বীপ। তাই দুই বৃহৎ প্রতিবেশী ভারত এবং চীন উভয়ই ভারত মহাসাগরের ছোট্ট এই দেশটিকে নিজেদের বলয়ে রাখতে চায়।
ঐতিহ্যগতভাবে দিল্লির সঙ্গে মালের বরাবরই সুসম্পর্ক বিরাজমান থেকেছে। কিন্তু এবার মালদ্বীপে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন চীনঘেঁষা মোহামেদ মুইজ্জু। যিনি ‘ভারত খেদাও’ প্রচার দিয়েই ভোটারদের ভোট জিতেছেন এবং নির্বাচিত হওয়ার পরপরই নিজের প্রতিশ্রুতি পালনে জোর তোড়জোড় শুরু করে দেন।
গত বছর নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের পরদিনই তিনি ভারতকে তার দেশ থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন।
মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্টরা সাধারণত দিল্লি সফর দিয়ে নিজেদের আন্তর্জাতিক সফর শুরু করেন। নিজেদের এই ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট পলিসি’ দিয়ে এতদিন মালে ভারতের প্রতি তাদের বন্ধুত্ব অটুট থাকা বার্তা দিয়ে এসেছে।
তবে মুইজ্জু এর ব্যতিক্রম তৈরি করেন। তিনি নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক সফরে ভারতে না গিয়ে চীনে যান।
চীন সফর থেকে ফিরেই গত মাসের মাঝামাঝিতে তিনি ভারতকে আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার সময় বেঁধে দেন।
ভারতকে সেনা সরিয়ে নিতে বলল মালদ্বীপ
ভারতকে ১৫ মার্চের মধ্যে সেনা সরাতে বলেছে মালদ্বীপ
ভারতীয় সেনারা মূলত ভারত থেকে মালদ্বীপকে দেওয়া সামরিক সরঞ্জাম বিষয়ে সহায়তা প্রদান এবং দেশটির প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানবিক কার্যক্রমে সহায়তা করে থাকেন। ভারতীয় ওই সেনাদের মধ্যে একটি বড় অংশ চিকিৎসাকর্মী বলে জানিয়েছে ভারত।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, দুই দেশ ‘বেশ কিছু ক্ষেত্রে যৌথভাবে কাজ করতে রাজি হয়েছে। যাতে ভারতীয় বিমান পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে মালদ্বীপে মানবিক পরিষবা প্রদান অভিযান অব্যাহত রাখা সম্ভব হয়’।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স থেকে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে কবে নাগাদ মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার করা হবে সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তারা সময়ের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। বরং বলেছে, বিবৃতিতে সময়ে বিষয়ে কোনো উল্লেখ ছিল না।
ভারত মালেকে দুইটি হেলিকপ্টার এবং একটি ডর্নিয়ার বিমান দিয়েছে, যেগুলি বেশিরভাগ সময় সামুদ্রিক নজরদারি, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান এবং চিকিৎসা উদ্ধারের জন্য ব্যবহৃত হয়। ভারতীয় সেনারা এসব অভিযান পরিচালনা করেন।