এ বিদ্রোহ অর্থবহ নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে; পুতিনের কর্তৃত্বে ফাটলকে সামনে নিয়ে এসেছে, বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
Published : 25 Jun 2023, 09:33 PM
রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনার ও এর প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের বিদ্রোহ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কর্তৃত্বের প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
তিনি বলেন, “এ বিদ্রোহ অর্থবহ নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে; পুতিনের কর্তৃত্বে ফাটলকে সামনে নিয়ে এসেছে।”
বিবিসি জানায়, রোববার সিবিএস নিউজের টক শো ‘ফেস দ্য নেশন’ -এ অংশ নিয়ে একথা বলেছেন ব্লিঙ্কেন। রাশিয়ায় যা ঘটছে সে সম্পর্কে প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এমন মন্তব্য এটিই প্রথম।
একইদিনে বেশকয়েকটি গণমাধ্যমের টক শো তে ব্লিনকেন বলেছেন, রাশিয়ার এই সংকট ক্রেমলিন কিংবা ইউক্রেইন যুদ্ধের ওপর কী প্রভাব ফেলবে সে সম্পর্কে এখনই কিছু অনুমান করা যাচ্ছে না।
তবে তিনি মনে করেন, ওয়াগনারের বিদ্রোহ অভাবনীয় ঘটনা, যেখানে পুতিনের একজন ঘনিষ্ঠ মিত্র ভাড়াটে সেনা পাঠিয়েছে ইউক্রেইনে তুমুল লড়াইয়ের মোকাবেলা করতে- আর তারপর অতিদ্রুতই আবার তিনি ঘুরে দাঁড়িয়েছেন রাশিয়ার নেতার বিরুদ্ধে এবং ক্রেমলিনের ক্ষমতার কেন্দ্রকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছেন।
এবিসি নিউজকে ব্লিনকেন বলেন, ১৬ মাস আগে রুশ বাহিনী কিইভের দোরগোড়ায় ছিল। গোটা ইউক্রেইনই দখল করে নেওয়ার হুমকি সৃষ্টি করেছিল তারা। আর এখন এ সময়ে এসে তাদেরকে রাশিয়ারই রাজধানী মস্কোকে সুরক্ষা দিতে হচ্ছে ভাড়াটে সেনাদের হাত থেকে, যে সেনাদল গড়ে উঠেছিল প্রেসিডেন্ট পুতিনেরই পৃষ্ঠপোষকতায়।
প্রিগোজিন নিজেই এই পুরো বিদ্রোহের ঘটনায় অর্থবহ নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছেন, বিশেষত ইউক্রেইনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রেক্ষপট নিয়ে। তার ভাষ্য, ইউক্রেইন এবং নেটো রাশিয়ার জন্য হুমকি নয়। অথচ পুতিন এই হুমকির দোহাই দিয়েই ইউক্রেইনে যুদ্ধ শুরু করেছিলেন।
২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের ক্রাইমিয়া উপদ্বীপ দখলের সময় তাতে অংশ নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছিল ওয়াগনার সেনাদল। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরুর পর তাতে এই বাহিনীকে কাজে লাগান পুতিন। ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলীয় বাখমুত নগরীতে ওয়াগনার ইউক্রেইনের সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছিল।
শনিবার হঠাৎ করেই ওয়াগনারের সেনারা রাশিয়ায় ঢুকে একাধিক শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিন রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্ব উৎখাতের হুমকি দেন। ওয়াগনার সেনাদের একটি অংশ রাশিয়ার মস্কোর দিকে যাত্রা করে।
পরিস্থিতি এমন জায়গায় রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ঠেলে দেয়, যে তিনি তার একসময়ের মিত্র প্রিগোজিনকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ দায়েও অভিযুক্ত করেন, এই সশস্ত্র বিদ্রোহকে অভিহিত করেন ‘রাশিয়ার পিঠে ছুরিকাঘাত’ হিসেবে।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য ঘটনা বেশি দূর আগায়নি। কয়েকঘণ্টার উত্তেজনার পর বেলারুশের প্রেসিডেণ্টের মধ্যস্থতায় তা প্রশমিত হয়। শনিবার দিনের শেষভাগে ওয়াগনার প্রধান বিদ্রোহে ক্ষ্যান্ত দেন এবং সেনাদের ঘাঁটিতে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন।