বন্যায় বিচ্ছিন্ন পাকিস্তানের কোয়েটা, হড়কা বানে ৫ মৃত্যু

চলতি বর্ষা ঋতুতে বেলুচিস্তান প্রদেশ বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসের মতো বিভিন্ন ঘটনায় ১৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 August 2022, 11:45 AM
Updated : 17 August 2022, 11:45 AM

পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে নজিরবিহীন বন্যায় রেললাইন ডুবে যাওয়ায় ও মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রাদেশিক রাজধানী কোয়েটা সারাদেশ থেকে আংশিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

প্রদেশটির পিশিন জেলার সারানান এলাকায় হড়কা বানে ভেসে যাওয়ার পর এক বিয়ের অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া ৫ অতিথির মৃত্যু হয়েছে।

পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন জানিয়েছে, সোমবার ওই রেলপথ ডুবে যাওয়ার পর থেকে রেলওয়ের পরিষেবা স্থগিত আছে আর কোয়েটা-করাচি মহাসড়কের ওপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হতে থাকায় রাস্তাটিতে যান চলাচল ৪ দিন ধরে বন্ধ আছে।

কোয়েটামুখি রেলপথ কয়েকটি স্থানে বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে এমন প্রতিবেদন অস্বীকার করেছেন বেলুচিস্তানের সিবি জেলার ডেপুটি কমিশনার মনসুর কাজি। লাইনটি পানিতে ডুবে গেছে এবং ওই এলাকাকে পানিমুক্ত করে কোয়েটার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ আবার শুরু করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বন্যার পানি বেশি হওয়ায় কোয়েটা-সিবি-সুক্কুর মহাসড়কও বন্ধ আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বন্যায় কোয়েটা-করাচি মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জনতাকে সড়কটি এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছেন বোলান জেলার ডেপুটি কমিশনার।

পিশিন জেলার সারানান এলাকায় হড়কা বানে ভেসে গিয়ে যারা মারা গেছেন তাদের তিন জন নারী ও দুটি শিশু বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। গাড়িবহর নিয়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় পানির তোড়ে তাদের গাড়িটি ভেসে যায়।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অন্য গাড়িগুলোতে থাকা পরিবারের পুরুষ সদস্যরা নারী ও শিশুসহ ১১ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। উদ্ধারকারীরা পরে মৃতদেহগুলো উদ্ধার করে।

গত দুই দিন ধরে ভারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় প্রদেশটির অন্তত সাতটি জেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছ্নে, পাঁচটি জেলায় ও অন্যান্য এলাকায় কয়েকশত মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় আটকা পড়া লোকজনকে উদ্ধার করতে সেনাবাহিনী, আধা-সামরিক বাহিনী ও উদ্ধারকারী দলগুলো কাজ করছে।

প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ডনকে জানিয়েছেন, মুসাখালি এলাকায় বাঁধ ভেঙে ভেসে যাওয়া এক ব্যক্তিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করার পর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

মুসাখালি জেলায় বৃষ্টিজনিত বিভিন্ন দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে ট্রেন চলাচল ১১ দিন বন্ধ থাকার পর ফের শুরু হয়েছে। বন্যার পানির তোড়ে কোয়েটা-তাফতান রেলপথ ছয়টি পয়েন্টে ভেসে যাওয়ার পর থেকে এ লাইনে রেল চলাচল বন্ধ ছিল।

চলতি বর্ষা ঋতুতে বেলুচিস্তান প্রদেশ বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসের মতো বিভিন্ন ঘটনায় অন্তত ১৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।