চাঁদের একদিন সমান পৃথিবীর ১৪ দিন। একইভাবে এক রাত সমান পৃথিবীর ১৪ রাত। রাতে চন্দ্রপৃষ্ঠে তাপমাত্রা মাইনাস ১৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায়।
Published : 25 Aug 2023, 04:36 PM
ভারত বিশ্বের প্রথম দেশে হিসেবে সফলভাবে চাঁদের রহস্যঘেরা দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছাতে পেরেছে। গত বুধবার ভারতের চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করে। সেটির পেট থেকে বেরিয়ে আসা রোবটযান প্রজ্ঞান এখন চাঁদের মাটিতে পানির খোঁজাসহ আরো কিছু বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান চালাবে।
চাঁদের একদিন জুড়ে প্রজ্ঞান এই অনুসন্ধান কার্যক্রম চালাবে। যা পৃথিবীর ১৪ দিনের সমান। এরপর চাঁদের রাত শুরু হবে। যেটাও পৃথিবীর ১৪ রাতের সমান।
চাঁদে এই একদিনের ডেডলাইন রোবটযান প্রজ্ঞানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, প্রজ্ঞান সৌরশক্তি চালিত রোবটযান। ফলে চাঁদে রাত নেমে এলে সেটি আর কাজ করতে পারবে না।
তার উপর রাতে চন্দ্রপৃষ্ঠে তাপমাত্রা কমে মাইনাস ১৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যাবে। হিমাঙ্কের এতটা নিচের এই তাপমাত্রায় বিক্রম এবং প্রজ্ঞানকে গুরুতর সংকটে পড়তে হবে। এই সময়ে রোবটযান প্রজ্ঞান ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে সংযোগ রাখতে পারলেও ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) সঙ্গে সেটির সরাসরি কোনো যোগাযোগ থাকবে না।
চাঁদে ২৩ অগাস্ট থেকে দিন শুরু হয়েছে। যে কারণে ল্যান্ডার বিক্রমকে চাঁদের মাটিতে নামার জন্য এই দিনটি বেছে নিয়েছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। যদি কোনো কারণে বিক্রম ওই দিন চন্দ্রপৃষ্ঠে নামতে না পারতো তবে পরদিন ‘ব্যাকআপ ডে’ রাখা ছিল।
বিক্রম তার কাজ ঠিকঠাক মত করেছে, প্রজ্ঞানও নিজের কাজ শুরু করেছে।
শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স এ ইসরো থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। ল্যান্ডার বিক্রমের তোলা ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ল্যান্ডারটির পেট থেকে গড়িয়ে চাঁদের মাটিতে নেমে যাচ্ছে প্রজ্ঞান। পাশেই বিক্রমের দীর্ঘ ছায়া দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।
ভিডিওটি শেয়ার করে ইসরো লেখে, “এবং এখানে দেখা যাচ্ছে কীভাবে চন্দ্রযান-৩ এর রোভারটি ল্যান্ডার থেকে চাঁদের মাটিতে নেমে যাচ্ছে।”
... ... and here is how the Chandrayaan-3 Rover ramped down from the Lander to the Lunar surface. pic.twitter.com/nEU8s1At0W
— ISRO (@isro) August 25, 2023
নিজ নিজ অনুসন্ধান কাজ শেষে বিক্রম এবং প্রজ্ঞান চাঁদেই থেকে যাবে। চাঁদের রাত শুরু হলে শক্তির অভাবে যন্ত্র দুটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। সেই সময়ে তাদের পুনরুজ্জীবিত করার কোনো পরিকল্পনা ইসরোর নেই। তবে তাদের আশা, দীর্ঘ চন্দ্ররাত যন্ত্র দুটি টিকে থাকবে এবং আবার যখন দিন শুরু হবে তখন তারা সৌর প্যানেলের সাহায্যে শক্তি পেয়ে পুনরায় চালু হতে পারবে।