উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন ‘সত্যিকারের যুদ্ধ’ প্রতিরোধ এবং প্রয়োজন হলে প্রতিক্রিয়া দেখাতে সেনাবাহিনীকে তাদের মহড়া জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন।
শত্রুপক্ষের ওপর গুলি চালানোর একটি মহড়া দেখা শেষে তিনি এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম।
এই মহড়া দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেছে তারা।
বৃহস্পতিবার উত্তর কোরিয়া তাদের পশ্চিম উপকূল থেকে একটি স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে বলে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
দক্ষিণের সামরিক বাহিনী আরও বলেছে, তারা একই এলাকা থেকে একসঙ্গে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার উত্তরের সক্ষমতাও খতিয়ে দেখছে।
উত্তর কোরিয়ার বার্তা সংস্থা কেসিএনএ-র প্রকাশিত ছবিতে একই সময়ে অন্তত ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার চিত্র দেখানো হয়েছে।
‘আক্রমণের লক্ষ্যে’ প্রশিক্ষিত একটি ইউনিট ‘সুনির্দিষ্ট জলসীমায় শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র’ ছুড়েছে এবং ‘সত্যিকারের যুদ্ধ’ মোকাবেলায় সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে, বলেছে কেসিএনএ।
“সত্যিকারের যুদ্ধের অনুরূপ নানান মহড়া ক্রমাগত জোরদারের মাধ্যমে আক্রমণকারী সাব ইউনিটগুলো যেন দুটি কৌশলগত মিশন সুচারুরূপে সম্পন্নে কঠোরভাবে প্রস্তুত হতে পারে, তার ওপর জোর দিয়েছেন কিম। মিশন দুটির প্রথমটি হচ্ছে যুদ্ধ প্রতিরোধ, দ্বিতীয়টি হচ্ছে যুদ্ধে প্রথম আঘাত হানার সক্ষমতা অর্জন করা,” বলেছে কেসিএনএ।
এদিন কিমের সঙ্গে তার ছোট মেয়েও ছিল, যাকে সাম্প্রতিক বড় বড় সব আয়োজনে উত্তর কোরিয়ার নেতার পাশে দেখা যাচ্ছে।
আগামী সপ্তাহ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে শুরু হতে যাওয়া বড় আকারের সামরিক মহড়া ‘ফ্রিডম শিল্ডের’ প্রাক্কালে বৃহস্পতিবার সর্বশেষ এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল উত্তর কোরিয়া।
ওয়াশিংটন ও সিউলের মহড়াকে পিয়ংইয়ং দীর্ঘদিন ধরেই তাদের ওপর ‘আক্রমণের মহড়া’ বলে বিবেচনা করে আসছে।
উত্তরের শীর্ষ নেতা কিম জং উনের বোন কিম ইয়ো জং গত সপ্তাহে বলেছিলেন, তাদের পরীক্ষা চালানো কোনো ক্ষেপণাস্ত্রকে গুলি করার কোনো পদক্ষেপ পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে বিবেচিত হবে।
কোরীয় অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়াকেও দোষারোপ করেছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ড বলেছে, উত্তর কোরিয়ার ছোড়া সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র তাদের বা মিত্রদের জন্য কোনো ধরনের হুমকি হিসেবে সৃষ্টি করেনি, তবে অঞ্চলজুড়ে অস্থিরতায় পিয়ংইয়ংয়ের বিধ্বংসী অস্ত্র ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ভূমিকা আছে।
যুক্তরাষ্ট্র আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্তর কোরিয়ার মানবাধিকার লংঘন নিয়ে একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করতে যাচ্ছে; তাদের এ পদক্ষেপ পিয়ংইয়ংকে ক্রুদ্ধ করার পাশাপাশি চীন ও রাশিয়ার বিরোধিতার মুখে পড়বে বলে অনুমান করা হচ্ছে।