যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের একটি সেনা ইউনিটকে দেওয়া সহায়তা কাটছাঁটের পরিকল্পনা করছে- এমন খবরের প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এমন অঙ্গীকার করেন।
Published : 23 Apr 2024, 12:56 AM
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তার দেশের সেনাবাহিনীর ওপর কোনও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে, ইসরায়েল তা প্রত্যাখ্যান করবে।
যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের একটি সেনা ইউনিটকে দেওয়া সহায়তা কাটছাঁটের পরিকল্পনা করছে- এমন খবরের প্রতিক্রিয়ায় নেতানিয়াহু ওই মন্তব্য করেন। রোববার তিনি বলেন, “আমি আমার সর্বশক্তি দিয়ে এর বিরুদ্ধে লড়াই করব।”
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাক্সিওস নিউজ ওয়েবসাইট এক খবরে জানিয়েছিল, অধিকৃত পশ্চিম তীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর নেৎজা ইয়েহুদা ব্যাটালিয়নের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে।
মানবাধিকার লঙ্ঘন করলে বিদেশি ইউনিটগুলোকে দেওয়া সাহায্য নিষিদ্ধকরণ নিয়মের আওতায় যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের কোনও পদক্ষেপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
অধিকৃত পশ্চিম তীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী ‘ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস’ (আইডিএফ) এর ইউনিটগুলোতে মার্কিন সামরিক সহায়তা কমানো হতে পারে- এমন খবর সম্পর্কে গত সপ্তাহে জানতে চাওয়া হলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, “আমি সংকল্প নিয়েছি, সামনের দিনগুলোয় আপনারা তা দেখার প্রত্যাশা করতে পারেন।”
ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এর আগে কখনও আইডিএফ ইউনিটের জন্য সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করেনি। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলছে, নেৎজা ইয়েহুদা আন্তর্জাতিক আইন মেনেই তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
ইসরায়েলের সামরিক বার্তা সংস্থার বরাত দিয়ে রয়টার্স বলেছে, “ব্যাটালিয়নের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের যে খবর প্রকাশ হয়েছে, সে বিষয়ে আইডিএফ কিছু জানে না।আইডিএফ আইন মেনেই কাজ করে এবং কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটে থাকলে, তারা সেটি আইনিভাবেই তদন্ত করে দেখবে।”
নেৎজা ইয়েহুদা ইউনিটের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের মধ্যকার সম্পর্ককে বিশ্ববাসী আগের যে কোনও সময়ের চেয়ে এখন আরও নিবিড়ভাবে লক্ষ্য করছে।
এক বিবৃতিতে গ্যালান্ত বলেন, “একটি ইউনিটের কাজের সমালোচনা করার যে কোনও প্রচেষ্টা গোটা আইডিএফ এর কার্যক্রমের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে”, তিনি আরও বলেন, “এটি অংশীদার এবং বন্ধুদের জন্য সঠিক পথ নয়।”
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাক্সিওস নিউজ সাইট গত শনিবার তিন মার্কিন সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছিল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন কয়েক দিনের মধ্যেই আইডিএফ এর নেৎজা ইয়েহুদা ইউনিটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
খবরে আরও বলা হয়, ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আইডিএফ এর ওই ব্যাটালিয়নকে টার্গেট করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলোর মধ্যে আছে, ফিলিস্তিন বংশদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ৮০ বছর বয়সী ওমর আসাদ হত্যার ঘটনা।
২০২২ সালের জানুয়ারিতে অধিকৃত পশ্চিম তীরে এক তল্লাশি অভিযানের সময় আসাদকে বেঁধে ইসরায়েলি সেনারা তার কণ্ঠরোধ করে হত্যা করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
সে সময় যুক্তরাষ্ট্র এ ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে দোষীদের জবাবদিহি করার আহ্বান জানিয়েছিল।