বিদ্রোহীদের তৎপরতাকে ‘পিঠে ছুরি মারা’ বলে বর্ণনা করে ‘রাশিয়ার ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
Published : 24 Jun 2023, 01:44 PM
রাশিয়ার মিলিশিয়া বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের কথিত ‘বিদ্রোহী’ তৎপরতাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
শনিবার টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে তিনি ওয়াগনার যোদ্ধাদের কোনো উল্লেখ না করে বলেছেন, রুশদের ‘প্রতারণার মাধ্যমে অপরাধমূলক দুঃসাহসিক কাজে জড়ানো হয়েছে’।
বিদ্রোহীদের তৎপরতাকে ‘পিঠে ছুরি মারা’ বলে বর্ণনা করে তিনি বলেন, “রাশিয়ার ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে। কারও কারও উচ্চ আকাঙ্ক্ষা তাদের গভীর রাষ্ট্রদ্রোহীতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।”
ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান প্রিগোজিনের দিকে ইঙ্গিত করে একথা বললেও তার নাম উল্লেখ করেননি তিনি।
রাশিয়ার সমাজকে যারা বিভক্ত করছে তাদের ‘অনিবার্য শাস্তির’ বিষয়ে সতর্ক করেন তিনি। রাজধানী মস্কো ও অন্য বেশ কয়েকটি শহরে এখন সন্ত্রাসবিরোধী শাসন জারি আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাশিয়াকে রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি জানান, সংকট মোকাবেলার জন্য সব ‘প্রয়োজনীয় আদেশ এরই মধ্যে দেওয়া হয়েছে’।
আর এ কথার মাধ্যমেই তার সংক্ষিপ্ত টেলিভিশন ভাষণ শেষ হয় বলে বিবিসি জানিয়েছে। ভাষণে তিনি একবারের জন্য প্রিগোজিনের নাম নেননি।
ওয়াগনারের ভাড়াটে যোদ্ধাদের কথা উল্লেখ করেছেন পুতিন, কিন্তু রাশিয়ার হয়ে লড়াই করার জন্য শুধু তাদের প্রশংসা করেছেন।
ওয়াগনার মিলিশিয়া বাহিনীর প্রধান প্রিগোজিন রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে অপসারণ করার প্রত্যয় জানিয়ে তৎপরতা শুরু করার পর এই প্রথম কথা বললেন পুতিন।
ভাষণে তিনি রাশিয়ার জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে দেশটির সব বাহিনীগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে বলেন আর যা হচ্ছে তা দেশের সঙ্গে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে মন্তব্য করেন।
গত মাসে ইউক্রেইনের বাখমুত শহর দখল করার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেওয়া ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান প্রিগোজিনের অভিযোগ, রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্ব শুক্রবার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে তার বাহিনীর বহু সেনাকে হত্যা করেছে, তাই তিনি তাদের নিজ নিজ পদ থেকে অপসারণ করে শাস্তি দিতে চান।
এ অভিযোগ জানানোর কয়েক ঘণ্টা পর শনিবার ভোররাতে প্রিগোজিন জানান, তার ওয়াগনার বাহিনীর যোদ্ধারা ইউক্রেইন থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে রাশিয়ার রস্তোভ অঞ্চলে প্রবেশ করেছে এবং তারা মস্কোর সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যেতে প্রস্তুত। তার বাহিনীর ২৫ হাজার যোদ্ধা তার সঙ্গে আছে বলে জানান তিনি।
টেলিগ্রাম অ্যাপে পোস্ট করা এক অডিও রেকর্ডিংয়ে প্রিগোজিন বলেন, তিনি ও তার লোকেরা তাদের পথে যেই দাঁড়াবে তাকেই ধ্বংস করে দেবে।
আরেকটি ভিডিওতে প্রিগোজিন বলেন, তারা সেনারা রোস্তভ-অন-ডন শহর অবরোধ করবে এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেগেই শোইগু ও জেনারেল ভ্যালেরি গেরাসিমোভ এসে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ না করা পর্যন্ত তার সেনারা মস্কোর দিকে এগোতে থাকবে।
পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা কয়েকটি ভিডিওতে তাকে রোস্তভ-অন-ডন শহরে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সামরিক বাহিনীর সদরদপ্তরে দুই জেনারেলের মাঝে বসে থাকতে দেখা যায়। এ সময় রোস্তভ-অন-ডন শহরটি ওয়াগনার বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ছিল বলে দাবি করা হয়।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, সর্বশেষ খবর অনুযায়ী ওয়াগনারের কিছু ইউনিট ‘মস্কোর দিকে রওনা হয়েছে’।
আরও পড়ুন: