ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের শহরগুলোতে রকেট হামলা চালানোর পর লেবাননে শিয়া রাজনৈতিক ও সামরিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর বিভিন্ন অবস্থান ও স্থাপনায় পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
সোমবার এসব হামলা চালানো হয়েছে বলে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে।
ইসরায়েরি বাহিনীর শীর্ষ মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল দানিয়েল হ্যাগারি সাংবাদিকদের জানান, ইসরায়েলি জঙ্গি বিমানগুলো হিজবুল্লাহর বিস্তৃত লক্ষ্যে হামলা চালিয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, ইসরায়েলে যতবার হামলা চালানো হবে ততবারই ‘উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া’ জানানো অব্যাহত থাকবে।
রোববার ইসরায়েলের ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে দক্ষিণ লেবাননে তিন শিশু ও তাদের দাদী নিহত হন। গুরুতর আহত হয় শিশুদের মা। নিহত তিনজনই মেয়ে শিশু। তাদের বয়স ১০ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে।
ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের এই হামলার জবাব দেওয়ার কথা তখনই জানিয়েছিল।
এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানায়, তারা কখনোই বেসামরিক নাগরিকদের উপর হামলার ঘটনা সহ্য করবে না এবং তাদের জবাব হবে ‘কঠোর ও শক্তিশালী’। এ বিষয়ে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান ফাদলাল্লাহ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের মূল্য শত্রুদের চুকাতে হবে।”
এরপর হিজবুল্লাহ জানায়, তারা এ হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় শহর কিরিয়াত শমোনা লক্ষ্য করে বেশ কিছু গ্রাড রকেট ছুড়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে চার সপ্তাহ ধরে চলা সংঘর্ষে এই প্রথম একটি নির্দিষ্ট অস্ত্র ব্যবহার করার কথা জানাল হিজবুল্লাহ।
লেবাননের রাষ্ট্রায়ত্ত ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি সোমবার জানিয়েছে, দক্ষিণ লেবাননে শত্রুর একটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে হিজবুল্লাহ, এর ধ্বংসাবশেষ ইসরায়েল-লেবানন সীমান্ত থেকে ৩০ কিলোমিটার ভেতরে জেবদাইন ও হারউফ গ্রামের ওপর পড়েছে।
তবে এই প্রতিবেদনের বিষয়ে হিজবুল্লাহ কোনো মন্তব্য করেনি, কিন্তু তারা ইসরায়েলে সঙ্গে চলমান সংঘাতে প্রথমবারের মতো বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করার কথা ঘোষণা করেছে।
লেবাননের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় প্রায় ৬০ জনের মতো হিজবুল্লাহ যোদ্ধা এবং অন্তত ১০ বেসামরিক নিহত হয়েছেন।
লেবানন সীমান্তে ইসরায়েলের সঙ্গে হিজবুল্লাহার এসব হামলা, পাল্টা হামলায় গাজার যুদ্ধ বিস্তৃত হয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
এর আগে ২০০৬ সালে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সংক্ষিপ্ত একটি যুদ্ধ হয়েছিল। ওই যুদ্ধে লেবাননের দিকে ১২০০ জন (যাদের অধিকাংশ বেসামরিক) এবং ইসরায়েলের পক্ষের ১৫৮ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই সেনা।
আরও পড়ুন: