গাজা সিটি ঘিরে ফেলার পর হামাসের টানেলে নজর ইসরায়েলের

ইসরায়েলের কমব্যাট ইঞ্জিনিয়ারিং কোর হামাসের টানেল নেটওয়ার্ক ধ্বংসে বিস্ফোরক ডিভাইস ব্যবহার করছে বলে জানিয়েছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2023, 05:07 AM
Updated : 8 Nov 2023, 05:07 AM

ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার হাজার হাজার বাসিন্দাকে হত্যা করার পর ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি আক্রমণ নতুন এক পর্বে প্রবেশ করেছে। ইসরায়েলের স্থল বাহিনী গাজার ভূগর্ভে হামাসের বিস্তৃত টানেল নেটওয়ার্ক খুঁজে বের করে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করার দিকে নজর দিয়েছে।

৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজায় অবিরাম ব্যাপক বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল, তাদের স্থল সেনারা ছোট্ট ফিলিস্তিনি ছিটমহলটিকে দুই ভাগে বিভক্ত করে ফেলেছে।

এই ছিটমহলটির বৃহত্তম শহর ও হামাসের মূল শক্তিকেন্দ্র গাজা সিটি ঘিরে ফেলেছে তারা। ইসরায়েল দাবি করেছে, তাদের সেনারা নগরীটির প্রাণকেন্দ্রের দিকে অগ্রসর হয়েছে। অপরদিকে হামাস বলেছে, তাদের যোদ্ধারা দখলদার বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করছে।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি জানিয়েছেন, ইসরায়েলের কমব্যাট ইঞ্জিনিয়ারিং কোর হামাসের তৈরি করা টানেল নেটওয়ার্ক ধ্বংসে বিস্ফোরক ডিভাইস ব্যবহার করছে। এসব নেটওয়ার্ক গাজার মাটির নিচে কয়েকশ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওভ গ্যালান্ট বলেছেন, “ইসরায়েলের লক্ষ্য একটাই, গাজায় হামাসের সন্ত্রাসীরা, তাদের অবকাঠামো, তাদের কমান্ডাররা, বাংকার, যোগাযোগ কক্ষগুলো।”  

হামাসের দুটি সূত্র ও পৃথক ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ রয়টার্সকে জানিয়েছে, ইসরায়েলি ট্যাংকগুলো হামাস যোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখোমুখি হচ্ছে, তারা চোরাগোপ্তা হামলা চালাতে টানেল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছে।

তবে দুই পক্ষের যুদ্ধক্ষেত্রের এসব দাবী যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে রয়টার্স জানিয়েছে।

ইসরায়েল জানিয়েছে, তাদের সামরিক অভিযান হামাসের হাতে বন্দি জিম্মিদের আরও বিপদে ফেলতে পারে বলে শঙ্কা তাদের। জিম্মিদের টানেলের ভেতরে বন্দি করে রাখা হয়েছে বলে বিশ্বাস ইসরায়েলের। এসব জিম্মিকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত তারা যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সম্মত হবে না বলে জানিয়েছে তেল আবিব। হামাস বলেছে, গাজায় আক্রমণ অব্যাহত থাকলে তারাও লড়াই বন্ধ করবে না।

হামাসের ঊর্ধ্বতন নেতা গাজি হামাদ আল জাজিরা টেলিভিশনকে বলেছেন, “আমি চ্যালেঞ্জ জানাই (ইসরায়েলকে) তারা বেসামরিকদের হত্যা করা ছাড়া এই মুহূর্তে আর কোনো সামরিক অর্জন রেকর্ড করতে যদি সক্ষম হয়। গাজাকে ভাঙ্গা যাবে না এবং এটি আমেরিকান ও জায়নিস্টদের গলার কাঁটা হয়ে রয়ে যাবে।”

আক্রমণে ইসরায়েল গাজার উত্তরাংশের দিকে মূল মনযোগ দিলেও তারা দক্ষিণেও হামলা চালাচ্ছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার খান ইউনিস ও রাফায় দু’দফা ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৩ জন নিহত হন।   

৭ অক্টোবর থেকে একমাস ধরে ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে আর তাদের ৪০ শতাংশ শিশু, জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। 

আরও পড়ুন:

Also Read: সেনারা ‘গাজা সিটির প্রাণকেন্দ্রে’ পৌঁছে গেছে: ইসরায়েল

Also Read: গাজায় প্রতিদিন ১৬০ শিশু নিহত হচ্ছে: ডব্লিউএইচও

Also Read: ইসরায়েলে বেসামরিক মানুষ হত্যা না করার দাবি হামাস নেতার

Also Read: ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়ায় কোকা-কোলা নিষিদ্ধ করল তুরস্ক