ইসরায়েলে বেসামরিক মানুষ হত্যা না করার দাবি হামাস নেতার

৭ অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর বিবিসি’র সঙ্গে গত শনিবার কথা বলেন গোষ্ঠীটির সবচেয়ে ঊর্ধ্বতন নেতা মুসা আবু মারজুক।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Nov 2023, 05:41 PM
Updated : 7 Nov 2023, 05:41 PM

গাজার মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা মুসা আবু মারজুক তার দলের যোদ্ধাদের হাতে ইসরায়েলের বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেছেন, কেবল ইসরায়েলি সেনা ও রিজার্ভ সেনারা হামলার নিশানা হয়েছে।

বিবিসি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “নারী, শিশু ও বেসামরিক লোকজন হামাসের হামলার নিশানায় ছিল না।”

যদিও তার এ দাবির সঙ্গে বাস্তব চিত্রের কোনও মিল নেই বলে জানিয়েছে বিবিসি। বরং গত ৭ অক্টোবর চালানো হামাসের ওই হামলার ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, হামাস যোদ্ধারা নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা করছে।

সেসব প্রমাণের মধ্যে হামাসের বডি ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিও এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে হামলায় অংশ গ্রহণ করা ব্যক্তিদের দেওয়া সাক্ষ্যও রয়েছে।

ওই দিন হামাসের কয়েক ঘণ্টার হামলায় ১৪শ’র বেশি মানুষ নিহত হওয়ার কথা বলেছে ইসরায়েল, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক মানুষ।

মুসা আবু মারজুক হামাসের দ্বিতীয় প্রধান রাজনৈতিক নেতা। সন্ত্রাস-দমন আইনের অধীনে যুক্তরাজ্যে তার সম্পদ বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

বিবিসি শনিবার তার সাক্ষাৎকার নিয়েছে। ৭ অক্টোবরের হামলার পর তিনিই হামাসের সবচেয়ে ঊর্ধ্বতন নেতা যিনি বিবিসি’র সঙ্গে কথা বলেছেন।

বিবিসি তাকে গাজায় চলমান যুদ্ধ, বিশেষ করে সেখানে জিম্মিদের অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করে। জবাবে তিনি বলেন, ইসরায়েল যেহেতু গাজায় বোমা হামলা অব্যাহত রেখেছে তাই তারা জিম্মিদের মুক্তি দিতে পারছেন না।

“আমরা তাদের মুক্তি দেব। তবে আগে আমাদের যুদ্ধ বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।”

গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত সেখানে ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

বিবিসি জানায়, সম্প্রতি মারজুক মস্কো সফর করেছেন। তিনি সেখানে হামাসের ধরে নিয়ে যাওয়া আটজন রাশান-ইসরায়েলি দ্বৈত নাগরিকের বিষয়ে কথা বলেন।

তিনি বলেন, হামাস সদস্যরা গাজা ‘খুঁজে দুই জন রুশ নারী জিম্মি পেয়েছে’। কিন্তু যুদ্ধের কারণে তাদের মুক্তি দিতে পারছে না। “যদি ইসরায়েল লড়াই বন্ধ করে তবে আমরা রেড ক্রসের হাতে তাদের (জিম্মি) তুলে দিতে পারি,” বলেন মারজুক।

বিবিসি’র প্রশ্নের জবাবে বেসামরিক মানুষদের উপর হামলা না করার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, হামাসের যোদ্ধা বাহিনী কাসাম ব্রিগেডস মিলিটারি উইং এর প্রধান মোহাম্মদ এল-দেইফ তার যোদ্ধাদের স্পষ্ট করেই বেসামরিক মানুষদের উপর হামলা না করার নির্দেশ  দিয়েছিলেন।

“এল-দেইফ স্পষ্ট করেই তার যোদ্ধাদের বলেছিলেন, এজন নারীকেও হত্যা করো না, একটি শিশুকেও হত্যা করো না এবং একজন বৃদ্ধকেও হত্যা করো না।” বরং ইসরায়েলের রিজার্ভ সেনারা ‘হামলার লক্ষ্যবস্তু’ হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

মারজুক বলেন, “শুধুমাত্র রিজার্ভ সেনা অথবা ইসরায়েলি সেনাদের হত্যা করা হয়েছে। নারী, শিশু  ও বেসামরিক মানুষদের ছাড় দেওয়া হয়েছে।”