বোলসোনারো প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় ২০২২ সালে তার দেওয়া এক বক্তব্যকে ঘিরে ক্ষমতার অপব্যবহারের এ মামলাটি আবর্তিত হয়েছে।
Published : 01 Jul 2023, 03:21 PM
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোর নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া ২০৩০ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করেছে দেশটির সর্বোচ্চ নির্বাচনী আদালত।
শুক্রবার আদালতটির বিচারকরা ৫-২ ভোটে এই নিষেধাজ্ঞার পক্ষে অবস্থান নেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে করা ক্ষমতার অপব্যবহারে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তিনি।
ইলেকট্রনিক ব্যালট ব্যবহারে হ্যাকিং ও জালিয়াতির ঝুঁকি বাড়ায়- এমন মিথ্যা দাবির মাধ্যমে ব্রাজিলের গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগ ছিল সাবেক এ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে।
বোলসোনারোর আইনজীবীরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। তাদের দাবি, সাবেক প্রেসিডেন্টের বক্তব্য নির্বাচনের ফলাফলে কোনো প্রভাব ফেলেনি।
নিষেধাজ্ঞা শুরুর তারিখ ধরা হয়েছে ২ অক্টোবর ২০২২, সেদিনই ব্রাজিলে সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয়।
রায় শেষ পর্যন্ত বহাল থাকলে বোলসোনারো ২০২৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে পারবেন না, পারবেন ২০৩০ সালের ২ অক্টোবরের পরে। তিনি ২০২৪ ও ২০২৮ সালে হতে যাওয়া পৌর নির্বাচনেও নিষিদ্ধ থাকবেন।
নির্বাচনী আদালতের এই সিদ্ধান্তকে ‘পিঠে ছুরি মারা’ অভিহিত করে বোলসোনারো বলেছেন, ব্রাজিলে ডানপন্থি রাজনীতিকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাবেন তিনি।
বোলসোনারো প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় ২০২২ সালে তার দেওয়া এক বক্তব্যকে ঘিরে এ মামলাটি আবর্তিত হয়েছে।
ওই বছরের ১৮ জুলাই রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় নিজের বাসভবনে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের ডেকে তিনি সেই ভুয়া দাবিটি করে বলেছিলেন, ব্রাজিলে যেসব ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহৃত হয় সেগুলো হ্যাকিং এবং বড় আকারের জালিয়াতির জন্য উপযোগী।
বোলসোনারো অবশ্য এরপর বারবারই বলেছেন, বিদেশি রাষ্ট্রদূতদেরকে তিনি ‘ব্রাজিলে কীভাবে নির্বাচন হয়, তা ব্যাখ্যা করেছিলেন’ এবং নির্বাচন পদ্ধতিকে আক্রমণ বা এর সমালোচনা করেননি তিনি।
কিন্তু তার ওই বক্তব্য এমন এক সময়ে এসেছিল, যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারকে ঘিরে ব্রাজিল তুমুল দ্বিধাবিভক্ত। ওই নির্বাচন শেষ পর্যন্ত ৩০ অক্টোবরের রান-অফের মাধ্যমে শেষ হয়, যেখানে বামপন্থি লুইস ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা স্বল্প ভোটের ব্যবধানে বোলসোনারোকে পরাজিত করেন।
বোলসোনারো এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে হার স্বীকার করেননি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে লুলার অভিষেকের দুইদিন আগে তিনি ব্রাজিল ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা পাড়ি দেন।
অক্টোবরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল মেনে নিতে নারাজ তার সমর্থকরা পরে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি ব্রাজিলের কংগ্রেস, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ও সুপ্রিম কোর্টে হানা দিয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালায়।