মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ এবং ইউক্রেইন যুদ্ধ অবসানের আলোচনা শুরু করতে রাজি হওয়ার কথা জানানোর পর এর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইউরোপীয় নেতারা।
Published : 14 Feb 2025, 01:58 AM
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে দীর্ঘ সময় আলাপ এবং ইউক্রেইন যুদ্ধ অবসানের আলোচনা শুরু করতে তাদের সম্মতির কথা জানানোর পর ইউরোপীয় নেতারা যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দিয়েছেন।
তারা বলেছেন, ইউরোপের ‘পিঠ পিছে’ রাশিয়ার সঙ্গে কোনও ইউক্রেইন শান্তি চুক্তি করা হলে তা কাজে আসবে না।
বুধবার ট্রাম্প-পুতিনের মধ্যে ৯০ মিনিট ফোনে কথা হয়। এ সময় দুই নেতা ইউক্রেইন যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা শুরু করতে একমত হন।
ট্রাম্প পরে তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ স্যোশালে নিজেই এই সম্মতির কথা জানান। এরপর ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও জানান, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে একটি ‘স্থায়ী এবং নির্ভরযোগ্য শান্তি’ প্রতিষ্ঠার বিষয় নিয়ে আলাপ করেছেন।
ট্রাম্পের প্রথমে পুতিন এবং তারপর জেলেনস্কির সঙ্গে আলাপের এমন পদক্ষেপে চোখ কপালে উঠেছে ইউরোপীয় দেশগুলোর। কারণ, এ আলোচনা সম্পর্কে ট্রাম্প ইউরোপকে কিছু জানাননি, এমনকি তাদের কোনও পরামর্শও নেননি।
ইউরোপ চায় ইউক্রেইন যুদ্ধ প্রশ্নে কোনও চুক্তি বা সমাধানের ক্ষেত্রে আলোচনায় তারাও কেন্দ্রীয় ভূমিকা রাখুক বা জড়িত থাকুক। কারণ, তিন বছর আগে শুরু হওয়া এই ইউক্রেইন যুদ্ধের গতিপ্রকিৃতি এবং তা কীভাবে সমাধান করা হচ্ছে সে বিষয়টি ইউরোপের নিজস্ব নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কাজা কালাস বলেন, “আমাদের পিঠ পিছে করা কোনও চুক্তি কাজে আসবে না সেটি স্পষ্ট। যে কোনও চুক্তির ক্ষেত্রে ইউক্রেইন ও ইউরোপকে অবশ্যই এর অংশ হতে হবে।”
ব্রাসেলসে ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে নেটোর প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের এক বৈঠকের আগে কালাস বলেন, “আলোচনা শুরুর আগেই কেন আমরা তাদের (রাশিয়া) যা চায় তার সবই দিয়ে দিচ্ছি? এটি তো তুষ্ট করা। এমন পদক্ষেপ কখনও কার্যকর হবে না।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এরই মধ্যে বলেছেন,ইউক্রেইনের ২০১৪ সালের আগের সীমানায় ফিরে যাওয়াটা অবাস্তব এবং যুদ্ধের সমাধান হিসেবে কিইভের জন্য পশ্চিমা সামরিক জোট নেটোর সদস্যপদ পাওয়ার প্রয়োজন দেখছে না ট্রাম্প প্রশাসন।
রাশিয়া ২০১৪ সালে ইউক্রেইনের ক্রাইমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নিয়েছিল। সেটি আর ইউক্রেইন ফিরে পাবে না বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন হেগসেথ।
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিসটোরিয়াসও অন্যান্য ইউরোপীয় নেতাদের মতো বলেছেন,আলোচনা শুরুর আগেই যুক্তরাষ্ট্র মস্কোকে কোনও ছাড় না দিলেই ভাল করবে।
ইউরোপী ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কালাস বলেন, “ইউক্রেইন এবং ইউরোপের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনও শান্তি চুক্তি হলে তা ব্যর্থ হবে এবং কিইভ যদি চুক্তি মানতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে ইউরোপ তাদেরকে সমর্থন দেবে।”