ভেনেজুয়েলার গ্যাং সদস্যদের এল সালভাদরে পাঠানোয় মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তারা ফৌজদারি আদালত অবমাননার অভিযোগের মুখে পড়তে পারেন, বলেছেন ওয়াশিংটনের ডিস্ট্রিক্ট জাজ।
Published : 17 Apr 2025, 05:31 PM
মার্কিন ফেডারেল আদালতের আদেশ অমান্য করে ভেনেজুয়েলার গ্যাং সদস্যদের এল সালভাদরে পাঠানোয় ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা ফৌজদারি আদালত অবমাননার অভিযোগের মুখে পড়তে পারেন বলে জানিয়েছেন ওয়াশিংটনের ডিস্ট্রিক্ট জাজ জেমস বোয়াসবার্গ।
বুধবার বোয়াসবার্গ তার লিখিত রায়ে বলেন, কর্মকর্তাদেরকে ফৌজদারি আদালত অবমাননার মুখোমুখি করার ‘সম্ভাব্য কারণ’ পেয়েছেন তিনি। ভেনেজুয়েলার গ্যাং সদস্যদের ১৭৯৮ সালের যুদ্ধকালীন আইনের আওতায় এল স্যালভাদরে নিয়ে যাওয়ার ফ্লাইট আটকে দিয়ে গত ১৫ মার্চে দেওয়া আদেশ ‘ইচ্ছাকৃত অমান্য’ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এ কারণেই প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা যেতে পারে।
আল সালভাদরে পাঠানো ওই অভিবাসীদের আইনজীবী ও পরিবারের সদস্যরা বলছে, যাদের পাঠানো হয়েছে তারা গ্যাং সদস্য নন, বরং সরকারের অভিযোগ চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ না পেয়েই তারা দেশছাড়া হয়েছেন।
ট্রাম্প ২০ জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা নেওয়ার পর তার প্রশাসনকে সাজার মুখোমুখি করতে অন্য কোনও আদালতের চেয়ে বোয়াসবার্গের রায়েই সরাসরি কঠোর বার্তা এসেছে এবং বিচারিক ও নির্বাহী শাখার মধ্যে সংঘাত বেড়েছে।
বোয়েসবার্গ বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন চাইলে এখনও তার নির্দেশ মেনে আদালত অবমাননার অভিযোগ এড়াতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রশাসনকে ভেনেজুয়েলার ওই অভিবাসীদেরকে তাদের বিতাড়নের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আদালতে লড়ার সুযোগ দিতে হবে।
বিচারক এজন্য প্রশাসনকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে জানাতে হবে আদেশ পালনে তারা কী পদক্ষেপ নেবে অথবা আদেশ অমান্যের জন্য কে বা কারা দায়ী, যাতে তাদের বিচার করা যায়।
বিচারক উল্লেখ করেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও আদালতের আদেশ নিয়ে এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলের একটি পোস্ট পুনরায় শেয়ার করেন এবং লেখেন, “ওহ! বড্ড দেরি হয়ে গেছে।”
বিচারক লেখেন, “এ ধরনের আচরণ থেকে বোঝা যায়, সরকারের পক্ষ থেকে ইচ্ছাকৃতভাবেই আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করা হয়েছে।”
হোয়াইট হাউজের যোগাযোগ পরিচালক স্টিভেন চেয়ুং জানিয়েছেন, বিচারকের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে। অন্যদিকে, বিচার বিভাগের একজন মুখপাত্র এই মামলায় বোয়েসবার্গের ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টাকে ‘বিচারিক ক্ষমতা কুক্ষিগত করা’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, বিচার বিভাগ প্রয়োজনীয় সব পন্থায় এর বিরুদ্ধে লড়বে।
সম্প্রতি আদালত এবং নির্বাহী বিভাগের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। গত জানুয়ারিতে ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তার প্রশাসনের নীতির বিরুদ্ধে ১৫০টিরও বেশি মামলা চলছে।