যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্বে ৩৩ জিম্মিকে হামাসের মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল, এই ছয়জনকে ফেরত দেওয়ার মাধ্যমে তা সম্পূর্ণ হল।
Published : 22 Feb 2025, 10:06 PM
ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী গাজা থেকে আরও ছয় ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে ভূখণ্ডটি শাসনকারী রাজনৈতিক সংগঠনটি।
এই ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগার ও আটককেন্দ্রগুলো থেকে কয়েকশ ফিলিস্তিনির মুক্তি পাওয়ার কথা।
চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্বে দুই পক্ষের মধ্যে এটিই শেষ বন্দি বিনিময় বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।
শনিবার ছয় ইসরায়েলি জিম্মির মধ্যে প্রথম দুইজনকে ছাড়া হয়েছে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফা থেকে। হামাসের সশস্ত্র যোদ্ধারা জিম্মি তাল শোহাম ও আভেরা মেঙ্গিস্তুকে একটি মঞ্চে হাজির করার পর রেড ক্রসের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
পরে আরও তিন জিম্মি- এলিয়া কোহেন, ওমের ভেঙ্কার্ট ও ওমের শেম টভকে গাজার মধ্যাঞ্চলীয় নুসেইরাত শিবির এলাকায় পৃথক আরেক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুক্তি দিয়ে রেড ক্রসের কর্মকর্তাদের কাছে তুলে দেওয়া হয়।
এখানে তিন ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির অনুষ্ঠানের সাক্ষী হতে বহু ফিলিস্তিনি জড়ো হয়েছিলেন। ভিড় সামলাতে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসাম বিগ্রেডের অতিরিক্ত সদস্যদের এনে ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়।
প্রথমে নুসেইরাত থেকে চার জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল হামাস। পরে শেষ মুহূর্তে তারা পরিকল্পনা পরিবর্তন করে যার কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
পরে শনিবার মুক্তি দেওয়া শেষ জিম্মি হিশাম আল সাঈদকে রেড ক্রসের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ৩৭ বছর বয়সী বেদুইন ইসরায়েলি সাঈদ ২০১৫-র এপ্রিলে গাজায় প্রবেশ করার পর তাকে বন্দি করা হয়েছিল।
১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্বে যে ৩৩ জন জিম্মিকে হামাসের মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল এই ছয়জনকে ফেরত দেওয়ার মাধ্যমে তা পূর্ণ হল।
শনিবার ইসরায়েলের তাদের কারাগারগুলোতে বন্দি থাকা ৬২০ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা। এই ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৪৪৫ জনকে যুদ্ধ চলাকালে গাজা থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী। বাকিরা দীর্ঘ সময় ধরে বা কেউ কেউ আজীবন কারাদণ্ড পেয়ে বন্দি ছিলেন বলে জানিয়েছে হামাস।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলা ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি বৃহস্পতিবার লাইনচ্যুত হওয়ার হুমকির মুখে পড়েছিল। এদিন হামাসের চার ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা যে চারটি মরদেহ ফেরত দেয় তার মধ্যে তালিকা অনুযায়ী শিরি বিবাস নামের একটি নারীর মরদেহ ছিল না, তার বদলে অন্য একটি মরদেহ চলে যায়।
শিরির মরদেহ নিয়ে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল। এ নিয়ে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলে হামাস নিজেদের ভুল স্বীকার করে নেয়। নির্ধারিত সময়ের একদিন পর শুক্রবার সকালে হামাস শিরি বিবাসের মৃতদেহ হস্তান্তর করলে উত্তেজনা প্রশমিত হয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালানোর পর শিরি বিবাসকে তার স্বামী ও তার দুই ছেলেসহ বন্দি করে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে রাখে হামাস। কিন্তু ২০২৩ সালের নভেম্বরে গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় শিরি ও তার দুই ছেলে নিহত হন বলে জানায় হামাস।
আরও পড়ুন: