এমন ঘটনায় দুই যুগ আগে প্যারিসে নিহত হয়েছিলেন হ্যারির মা প্রিন্সেস ডায়ানা।
Published : 17 May 2023, 09:09 PM
যুক্তরাষ্ট্রের সড়কে প্রিন্স হ্যারি ও মেগানের গাড়ির পেছনে পাপারাজ্জিদের তাড়া ফিরিয়ে আনল দুই যুগ আগে প্যারিসে প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যুর স্মৃতি।
১৯৯৭ সালে পাপারাজ্জিদের তাড়ার মুখে প্যারিসের টানেলে গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন হ্যারির মা ডায়ানা।
মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে তেমন এক ঘটনায় প্রিন্স হ্যারি ও তার স্ত্রী মেগান মার্কল অল্পের জন্য ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি, রয়টার্স, সিএনএনসহ আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।
মেগানকে বিয়ে করার পর যুক্তরাজ্যের রাজকীয় সব দায়িত্ব ছেড়ে হ্যারি যুক্তরাষ্ট্রে আবাস গেঁড়েছেন।
সেদেশে মঙ্গলবার রাতে একটি পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে পাপারাজ্জিদের কবলে এই দম্পতি পড়েন বলে প্রিন্স হ্যারির মুখপাত্র জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে ওই মুখপাত্র বলেন, পাপারাজ্জি চক্রের গাড়িগুলো প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে টানা ধাওয়া করতে থাকে প্রিন্স হ্যারি ও তার পরিবারকে বহনকারী ট্যাক্সিকে। এই ধাওয়ার সময় বেশ কয়েকটি ভয়াবহ সংঘর্ষ থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পান তারা।
ম্যানহাটনে মিজ ফাউন্ডেশন ফর উইমেনের একটি অনুষ্ঠানে হ্যারির স্ত্রী মেগানকে তার কাজের জন্য সম্মাননা দেওয়া হয়।
ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বের হয়ে আসার পর এই ঘটনা ঘটে। সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে একটি ট্যাক্সিতে ছিলেন হ্যারি, মেগান ও মেগানের মা ডোরিয়া র্যাগল্যান্ড।
হ্যারির মুখপাত্র বিবৃতিতে বলেন, “তাদের বহনকারী ট্যাক্সিটি ধাওয়া থেকে বাঁচতে গিয়ে রাস্তার অন্য গাড়ির সঙ্গে প্রায় মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়ায় এবং পথচারী ও দুইজন পুলিশ সদস্যকে প্রায় চাপা দেওয়ার উপক্রম হয়েছিল।”
বিবিসি জানিয়েছে, এই ঘটনাটিকে ‘বিপজ্জনক’ বলেছেন নিউ ইয়র্ক সিটি মেয় এরিক অ্যাডামস।
তিনি বলেছেন, “আমাদের শহরে অনেক গাড়ি, অনেক ব্যস্ত, অনেক মানুষের চলাচল; এখানে ১০ মিনিটও যদি দ্রুতগতিতে কাউকে ধাওয়া করা হয়, সেটাও গ্রহণযোগ্য নয়।”
মেয়র অ্যাডামস প্যারিসে প্রিন্সেস ডায়নার মৃত্যুর কথাও স্মরণ করেন।
হ্যারির বাবা প্রিন্স চার্লসের (বর্তমানে ব্রিটেনের রাজা) সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটার পর দুনিয়াজুড়ে পাপারাজ্জিদের মনোযোগের কেন্দ্রে ছিলেন ডায়ানা।
আর ১৯৯৭ সালের ৩১ অগাস্ট পাপারাজ্জিদেন এড়াতে দ্রুত গতিতে চলার সময় প্যারিসের একটি টানেলে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ডায়ানা। তার সঙ্গী ডোডি আল ফায়াদ ও গাড়িচালকও মারা যান সেই দুর্ঘটনায়।
প্রিন্স হ্যারি তার মায়ের মৃত্যুর জন্য পাপারাজ্জিদের দায়ী করে আসছেন। আলোকচিত্রীদের আচরণ নিয়ে বিভিন্ন সময় উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি।
মঙ্গলবারের ঘটনার হ্যারির মুখপাত্র যে বিবৃতি দিয়েছেন, তাতে কারও আহত, কোনো সংঘর্ষ, কাউকে গ্রেপ্তার হওয়ার কোনো তথ্য নেই।
নিউ ইয়র্ক মেট্রোপলিটান পুলিশ বিবিসির জিজ্ঞাসায় বলেছে, এই ঘটনার বিষয়ে তারা এখনও কিছু জানে না।
এদিকে নিউ ইয়র্কের সেই সড়কে এমন হওয়া সম্ভব কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন আমেরিকান সাংবাদিক ও টিভি উপস্থাপক মেগান কেলি।
তিনি এক টুইটে লিখেছেন, “আমি ১৭ বছর ধরে ম্যানহাটনে থাকি। এখানে দুই ঘণ্টা ধরে গাড়িতে কাউকে তাড়া করা যাবে, এমন ঘটনা ঘটার সুযোগই নেই। এখানে অনেক বেশি সড়ক বাতি, অনেক সিগন্যালে আটকে পড়তে হয়,অনেক গাড়ি-মানুষের চলাচল। আর এমন ঘটনার শুরুতেই নিরাপদ আশ্রয় নেওয়ার অনেক জায়গা আছে।”
২০২০ সালে যুক্তরাজ্যের রাজপদবী থেকে সরে দাঁড়ান হ্যারি ও মেগান দম্পতি। এরপর থেকে তারা যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় উঠেছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, নিউ ইয়র্কে তারা সম্ভবত কোনো বন্ধুর বাসায় উঠেছেন।
এদিকে হ্যারির এই সম্ভাব্য দুর্ঘটনার বিষয়ে যুক্তরাজ্যের রাজ পরিবার থেকে কোনো বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে না বলে বিবিসি জানিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের বাড়ি ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে হ্যারি-মেগানকে