যুক্তরাজ্যের বাড়ি ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে হ্যারি-মেগানকে

প্রয়াত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ফ্রগমোর কটেজটি তাদের উপহার দিয়েছিলেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2023, 05:37 AM
Updated : 2 March 2023, 05:37 AM

ব্রিটিশ রাজপরিবারের সঙ্গে সম্পর্কের আরো একটি তার কাটছে। প্রিন্স হ্যারি ও তার স্ত্রী মেগানকে তাদের যুক্তরাজ্যের বাড়িটি খালি করে দিতে বলা হয়েছে।

এ দম্পতির একজন মুখপাত্র বুধবার খবরটি নিশ্চিত করেন বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স

যুক্তরাজ্যে থাকার সময় হ্যারি-মেগান দম্পতি ফ্রগমোর কটেজে বসবাস করতেন। বাড়িটি ব্রিটিশ রাজা কিং চার্লস এর উইন্ডসর ক্যালেসের ভেতরে ‍অবস্থিত।

রাজা চার্লস তার ভাই প্রিন্স অ্যান্ড্রুকে ফ্রগমোর কটেজে থাকার প্রস্তাব দিয়েছেন বলে এর আগে খবর প্রকাশ করেছিল দ্য সান।

জানুয়ারিতে প্রিন্স হ্যারি লেখা স্মৃতিকথা ‘স্পেয়ার’ প্রকাশ পেয়েছে। যেখানে হ্যারি তার বড় ভাই ব্রিটিশ সিংহাসনের পরবর্তী উত্তরাধিকারী প্রিন্স উইলিয়াম, বাবা কিং চার্লস এবং রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে তার ও তার স্ত্রীর নানা দ্বন্দ্ব নিয়ে বেশ খোলামেলা কথা বলেছেন।

এছাড়া, নেটফ্লিক্সে তাদের নিয়ে তথ্যচিত্র এবং টেলিভিশনে দেওয়া এ দম্পতির বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকার নিয়েও বিশ্বজুড়ে হইচই পড়ে গিয়েছিল।

এসবের পরিপ্রেক্ষিতেই রাজা চার্লস এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে সানের খবরে দাবি করা হয়। বলা হয়, জানুয়ারিতে ‘স্পেয়ার’ প্রকাশের কয়েকদিন পরই ফ্রগমোর কটেজ খালি করতে বলা হয়।

রাজা চার্লসের ছোট ভাই প্রিন্স অ্যান্ড্রুও অবশ্য কম বিতর্কিত নন। যৌন নিপীড়নের দায়ে দোষীসাব্যস্ত হয়ে সাজা পাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের জেফরি এপস্টাইনের সঙ্গে বন্ধুত্ব থাকার কারণে প্রিন্স অ্যান্ড্রুকে তার রাজকীয় দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল।

সানের খবরে আরো বলা হয়, প্রিন্স অ্যান্ড্রু ফ্রগমোর কটেজে যেতে আগ্রহী নন। তিনি বরং নিজের বর্তমান বাড়িতেই থেকে যেতে চান।

সান পত্রিকায় ওই খবর প্রকাশের পর বিবিসি থেকে বাকিংহাম প্যালেসের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা কোনো মন্তব্য করেনি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ পরিবারের একজন কর্মী বলেছেন, এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নিতান্তই ব্যক্তিগত পারিবারিক বিষয়।

বাকিংহাম প্যালেস থেকে কোনো মন্তব্য না এলেও বুধবার হ্যারি-মেগানের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘‘আমরা নিশ্চিত করে বলছি, ডিউক অ্যান্ড ডচেস অব সাসেক্সকে তাদের ফ্রগমোর কটেজ খালি করে দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।”

২০১৮ সালে বিয়ের পর হ্যারি ও মেগান ফ্রগমোর কটেজে বসবাস শুরু করেন। গ্রেড-২ তালিকার ১০ বেডরুমের এই বাড়িটি প্রয়াত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ তাদের উপহার দিয়েছিলেন।

২০২০ সালে রাজকীয় দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর পর বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় দুই সন্তান আর্চি ও লিলিবেটকে নিয়ে স্থায়ী হয়েছেন এই দম্পতি। তবে যুক্তরাজ্যে গেলে তারা ফ্রগমোর কটেজেই উঠতেন।

ফ্রগমোর কটেজে ওঠার পর সেখানে বেশ কিছু সংস্কার কাজ করেন তারা। এজন্য প্রায় ২৪ লাখ পাউন্ড ব্যয় হয় এবং পুরো ব্যয়ভার সরকার বহন করে। রাজকীয় দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর তারা ওই অর্থ ফেরত দেন বলে জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ার পর হ্যারি-মেগান যুক্তরাজ্যে খুব একটা আসেন না। তবে রাজকীয় নানা অনুষ্ঠানে যে কয়বার তারা যুক্তরাজ্য গেছেন, তখন ফ্রগমোর কটেজেই উঠেছেন।

নিজের বই ‘স্পেয়ারে’ হ্যারি যেভাবে ব্রিটিশ রাজপরিবারের দিকে আঙুল তুলেছেন তাতে জনসম্মুখে কিছু প্রকাশ না পেলেও তাদের সম্পর্কের যে চরম অবনতি হয়েছে, তা স্পষ্ট। আগামী মে মাসে বাবা রাজা চার্লসের রাজ অভিষেক অনুষ্ঠানে হ্যারি থাকবেন কিনা তা নিয়েও বড় ধরণের সংশয় রয়েছে।

Also Read: প্রিন্স হ্যারির ‘স্পেয়ার’: রাজপরিবারের রহস্যের পর্দা উন্মোচন