প্রাক্তন পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের ঘটনা ধামাচাপা দিতে গোপনে তাকে অর্থ প্রদানের অভিযোগে হওয়া মামলায় আগামী মঙ্গলবার গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্প নিজের ট্রুথ সোস্যাল প্ল্যাটফর্মে এ সংক্রান্ত এক পোস্টে তেমন কিছু হলে সমর্থকদের বিক্ষোভ দেখাতে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বানও জানিয়েছেন বলে জানায় বিবিসি।
‘এ মামলায় আগামী সপ্তাহে ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করা হতে পারে’, বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ ধরণের খবর প্রকাশের ভিত্তিতেই ট্রাম্প এ আশঙ্কা করছেন বলে জানান তার একজন আইনজীবী।
যদি সত্যিই ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করা হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সাবেক কোনো প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এটাই হবে প্রথম কোনো ফৌজদারি মামলা।
যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যে স্বপ্ন ট্রাম্প দেখছেন, সেটির উপরও এটি গুরুতর আঘাত হানবে।
আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ড্যানিয়েলসের দাবি, ট্রাম্পের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক ছিল এবং ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ওই বিষয়ে মুখ না খুলতে তাকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়েছিলেন ট্রাম্পের এক আইনজীবী।
পরবর্তীকালে বেশ কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাম্পের সেই আইনজীবী মাইকেল কোহেনের জেল হয়েছিল; তবে শুরু থেকেই সেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন ট্রাম্প।
মূলত পর্ন তারকার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ হওয়ার ঘটনাটি অনেক আগের বলে দাবি করা হলেও সর্বমহলে বিষয়টি চাউর হয় ২০১৮ সালে। ওই ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে বিভিন্নভাবে চাপ, হুমকি ও নির্বাচনের আগ মুহূর্তে উৎকোচ প্রদানের ঘটনাবহুল তথ্য উঠে আসে বিবিসির প্রতিবেদনে।
স্টর্মি ড্যানিয়েলসের মামলা ছাড়াও ৭৬ বছর বয়সের এই রাজনীতিকের বিরুদ্ধে আরো বেশ কয়েকটি মামলার তদন্ত চলছে। যদিও এখনো ওইসব মামলার কোনোটিতেই তিনি অভিযুক্ত হননি।
ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন।
শনিবার ট্রাম্প ট্রুথ সোস্যালে লেখেন, ম্যানহাটান ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির কার্যালয় থেকে একটি ‘অবৈধ তথ্যফাঁসের’ ঘটনা ‘ইঙ্গিত করছে’ তিনি আগামী মঙ্গলবার গ্রেপ্তার হতে পারেন।
এ বিষয়ে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির কার্যালয় থেকে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা হয়নি বলে জানায় বিবিসি।
তবে ট্রাম্পের আইনজীবী সুজান নেশেলেস সিবিএস নিউজকে বলেন, ‘‘যেহেতু এটি একটি রাজনৈতিক মামলা, তাই ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির কার্যালয় থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরিবর্তে প্রেসে সবকিছু ফাঁস করার একটি অনুশীলন শুরু করেছে। অথচ, একটি সাধারণ মামলার ক্ষেত্রে এমনটাই করা হয়।”
যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের নিয়ে খবর প্রকাশ হয়েছে। সব খবরেই অনেকটা একইরকম করে বলা হয়, নিউ ইয়র্কের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য অভিযোগ দায়ের এবং ম্যানহাটানের একটি আদালতকক্ষে তাকে উপস্থিত করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
গ্র্যান্ড জুরির সামনে সাক্ষ্য দিতে এই মাসের শুরুর দিকে ট্রাম্পকে ডাকা হয়েছিল। হয়তো তার বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ দায়েরের মত যথেষ্ট প্রমাণ আছে কিনা সেটা দেখতেই তাকে ডাকা হয়েছিল।
একটি গোপন কক্ষে ওই সাক্ষ্য গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ট্রাম্পের সাবেক বেশ কয়েকজন সহযোগীও এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এটাই ইঙ্গিত করছে, স্টর্মি ড্যানিয়েলসের মামলার কার্যক্রম অগ্রসর হচ্ছে।
যদি ট্রাম্প অভিযুক্ত হন তবে ‘স্বাভাবিক নিয়মেই আইনী কার্যক্রম অনুসরণ করো হবে’ বলে জানিয়েছেন তার আরেক আইনজীবী জোসেফ তাকোপিনা।