ভারতের পঞ্চদশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েই দেশকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দেয়ার নতুন যাত্রাপথে জনগণকে পাশে চাইলেন নরেন্দ্র মোদি।
Published : 26 May 2014, 08:08 PM
সোমবার সন্ধ্যায় শপথ নেয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে এক বার্তায় মোদি বলেন, “আমরা ভারতের উন্নয়নকে নতুন শিখরে নিয়ে যাওয়ায় নিবেদিতপ্রাণ। আর তাই আমরা আপনাদের সহায়তা চাই। চাই আপনাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং আশীর্বাদ। একসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করলে আমরা ভারতের জন্য গৌরবজ্জ্বল ভবিষ্যত নিয়ে আসতে পারব”।
তিনি আরো বলেন, “আসুন আমরা বিশ্ব শান্তি ও উন্নয়নকে সামনে রেখে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাওয়ার মতো একটি শক্তিশালী, উন্নত এবং পূর্ণাঙ্গ দেশ হিসাবে ভারতকে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখি”।
ওয়েবসাইটের কল্যাণের দিকটি উল্লেখ করে মোদি বলেন, “বিশ্বব্যাপী জনগণের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য প্রযুক্তি এবং সামাজিক মাধ্যমের শক্তিতে আমি দৃঢ়বিশ্বাসী। আশা করি এর ফলে একে অপরের কথা শোনা, শেখা এবং মত বিনিময় করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।”
ভারতের ১৬তম লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে লজ্জাজনক পরাজয়ের স্বাদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন এক সময়ের চা বিক্রেতা নরেন্দ্র মোদি। এ থেকেই বোঝা যায়, দু’দশকেরও বেশি আগে সময় আগে মোদির শুরু করা সংস্কারকাজ সম্প্রতি কয়েক বছরে থমকে গেলেও এখন তা এগিয়ে নেয়ার যথেষ্ট সুযোগ তার সামনে আছে।
কর্মকতারা বলছেন, মঙ্গলবার সকাল ৮ টায় সাউথ ব্লক অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন মোদি। তার আগেই নিজদেশের জনগণ এবং বিশ্ববাসীর উদ্দেশে এক বার্তায় তিনি বলেন, “এ নির্বাচন উন্নয়ন, সুশাসন এবং স্থিতিশীলতা নিয়ে আসারই ম্যান্ডেট”।
মোদির অনেক সমর্থকই তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগান কিংবা ব্রিটিশ নেতা মার্গারেট থ্যাচারের সংস্কার কর্মসূচির জবাব দেয়ার মত উন্নয়নের অবতার হিসাবেই দেখে।
চীনা নেতা দেং জিয়াওপিং যেমন দেশকে বিস্ময়কর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন মোদিও ভারতে সেইরকম রূপান্তর ঘটাতে পারেন বলেও বিশ্বাস করেন অনেকে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বধীন নতুন সরকার দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে আস্থা ফেরাতে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গতি ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে এরই মধ্যে আশাবাদী হয়ে উঠেছে ভারতের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো।
‘ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (এফআইসিসিআই) প্রেসিডেন্ট সিদ্ধার্থ বিড়লা বলেন, “নতুন সরকার পরিচালনার মধ্য দিয়ে আবার ব্যবসায়ে সুদিন এবং নতুন করে আস্থা ফিরে আসার দিকেই আমরা চেয়ে আছি।”
ব্যবসায়ে আস্থা গড়ে তোলা, কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য পরিবেশ তৈরি করা, খাদ্যে মূল্যস্ফীতির রাশ টেনে ধরা, পুষ্টিমান বাড়ানো এবং স্যানিটেশন সরকারের শীর্ষ অগ্রধিকার হওয়া দরকার। এ বিষয়গুলো সামগ্রিকভাবে সমাধান করা গেলে তা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি সামজিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আসতে সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেন বিড়লা।
মোদির প্রধানমন্ত্রী হওয়াকে ভারতের ইতিহাসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসাবেই দেখছেন কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির (সিআইআই) প্রেসিডেন্ট অজয় শ্রীরাম। মোদি শপথ নিয়েই উন্নয়ন এবং অর্থনীতির ওপর যে জোর দিয়েছেন তা পরিবর্তনেরই সুষ্পষ্ট লক্ষণ এবং সবাই সেই সুদিনের দিকেই চেয়ে আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।