চীনে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে আসছে না। বরং তা আরও এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। গত ১০ দিনে তিনশতাধিক মানুষের দেহে এই ধরন শনাক্ত হয়েছে। ১৫টি প্রদেশে ডেল্টা ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ বাড়ছে।
Published : 02 Aug 2021, 11:28 PM
বিবিসি জানায়, চীনের গণমাধ্যমগুলোতে এখন শিরোনাম হচ্ছে ডেল্টা। দেশটির শ্বাসতন্ত্রের রোগ বিষয়ক শীর্ষ বিশেষজ্ঞ ডেল্টা সংক্রমণ বাড়া নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এ পরিস্থিতিতে সরকার নতুন করে ভ্রমণ বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। পরীক্ষা করা হচ্ছে লাখ লাখ মানুষকে। চীনের সব নাগরিককে কোভিড টিকা দেওয়া হয়েছে কিনা তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সরকারের দাবি, এখন পর্যন্ত একশ ৬০ কোটি ডোজের বেশি টিকা দেওয়া হয়েছে।
গত জুলাই মাসে জিয়াংসু প্রদেশের রাজধানী নানজিং শহর থেকেই ডেল্টা ধরন ছড়িয়েছে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ। বলা হচ্ছে, নানজিংয়ের লুকোউ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একজন কর্মী একটি উড়োজাহাজ পরিষ্কারের সময় যথেষ্ট সুরক্ষা ব্যবস্থা না নেওয়ায় তার মাধ্যমেই সেখানে ডেল্টা ধরন ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে মোট ১৫ টি প্রদেশে মানুষের দেহে ডেল্টা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১২ টি প্রদেশেই ডেল্টা ছড়িয়ে পড়েছে নানজিং থেকে। চীনে অভ্যন্তরীন পর্যটন মৌসুমের কারণে ডেল্টার এই বিস্তার বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।
ফলে নানজিংয়ের ৯২ লাখ বাসিন্দার কোভিড পরীক্ষা করা হয়েছে। পাশাপাশি শহরটিতে লকাডাউনও জারি করা হয়েছে। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে মানুষ। তবে সপ্তাহান্তে কর্তৃপক্ষের নজর পড়েছে হুনান প্রদেশের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র ঝাংজিয়াজিতে। সেখানে বহু মানুষের কোভিড শনাক্ত হয়েছে।
সম্প্রতি নানজিং থেকে অনেকে ঝাংজিয়াজি ভ্রমণ করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদেরকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। ওদিকে, হুনান প্রদেশের কেন্দ্রীয় ঝুঝোউ শহরে সোমবার ১০ লাখের বেশি বাসিন্দাকে তিনদিন বাড়িতে থাকার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। এ সময়ের মধ্যে সেখানে গণহারে লোকজনকে কোভিড পরীক্ষা করানো এবং টিকা দেওয়া হবে।
প্রাদেশিক সরকার সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ এবং জটিল’ বলে বর্ণনা করেছে। অন্যান্য শহরে ডেল্টার প্রাদুর্ভাব ঘটায় গোটা কমিউনিটিকেই জরুরি লকডাউনের আওতায় রাখা হয়েছে।
কয়েকমাসের মধ্যে চীনে এই ডেল্টার প্রাদুর্ভাবই সবচেয়ে বড় সংক্রমণ ঘটিয়েছে। ‘উহানের পর এটিই করোনাভাইরাসের সবচেয়ে ব্যাপক মাত্রার সংক্রমণ’ বলে অভিহিত করেছে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। ২০১৯ সালের শেষদিকে চীনের উহান শহরেই প্রথম করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটার পর তা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।
ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে প্রথম থেকেই কঠোর অবস্থান নিয়ে চীন এর রাশ টেনে ধরতে অনেকটা সফলও হয়েছে। ২০২০ সালের মার্চ থেকে দেশটিতে সরকারি হিসাবে শনাক্তের সংখ্যা কম রয়েছে। মাঝে মাঝে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করামাত্র ত্বরিৎ নানা পদক্ষেপ নিয়ে চীন ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রেখে আসছে।