বিতর্কিত নাগারনো-কারাবাখ অঞ্চলকে ঘিরে শুরু হওয়া সংঘাতে সাময়িক বিরতি দিতে রাজি হয়েছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান।
Published : 10 Oct 2020, 10:35 AM
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে টানা ১০ ঘণ্টার আলোচনা শেষে দুই দেশ এ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
মস্কোর স্থানীয় সময় রাত ৩টার আগে আগে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তির ঘোষণা দেন।
দুই দেশ এখন বিবদমান বিষয়গুলো নিয়ে ‘অর্থপূর্ণ আলোচনা’ শুরু করছে, বলেছেন ল্যাভরভ।
নাগোরনো-কারাবাখকে কেন্দ্র করে ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া সংঘাত এরইমধ্যে হাজার হাজার লোককে বাস্তুচ্যুত করেছে, প্রাণ নিয়েছে ৩০০র বেশি মানুষের।
মস্কোতে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী, শনিবার স্থানীয় সময় বেলা ১২টা থেকে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হবে। সুযোগ মিলবে বন্দি বিনিময় এবং মৃতদেহ উদ্ধারের।
রাশিয়ার রাজধানীতে আলোচনা শুরুর পরও শুক্রবার দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল লড়াই হয়েছে বলে জানিয়েছে আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
আগেরদিন দেশটি আজারবাইজানের বিরুদ্ধে নাগারনো-কারাবাখের একটি ঐতিহাসিক ক্যাথেড্রালে ইচ্ছাকৃতভাবে গোলাবর্ষণেরও অভিযোগ করেছিল। গোলায় শুশা শহরের হোলি স্যাভিয়ার ক্যাথেড্রালের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার আজারবাইজানও তাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর গাঞ্জে ও গ্রোনবয় অঞ্চলে আর্মেনীয় বাহিনীর গোলাবর্ষণ এবং অন্তত একজন বেসামরিক নাগরিক নিহতের কথা জানায়।
সাম্প্রতিক এ সংঘাতে ৭০ হাজার জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত নাগারনো-কারাবাখ অঞ্চলের অর্ধেক বাসিন্দাই বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে সেখানকার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
অঞ্চলটির প্রধান শহর স্তেপানাকের্তের অনেক বাসিন্দা গোলার হাত থেকে বাঁচতে টানা কয়েকদিন নিজেদের বাড়ির বেজমেন্টে ছিলেন; শহরটির বেশিরভাগ অংশই এখন বিদ্যুৎহীন।
নাগোরনো-কারাবাখকে আজারবাইজান নিজেদের বলে দাবি করে এলেও আর্মেনীয় নৃগোষ্ঠীর লোকজন অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করে আসছে; আর্মেনিয়াও তাদের সমর্থন দিচ্ছে।
১৯৮৮-৯৪ সাল পর্যন্ত এ অঞ্চলকে ঘিরে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ চললেও পরে একটি যুদ্ধবিরতি হয়।
কয়েক দশকের মধ্যে এবারই দেশদুটি নাগারনো-কারাবাখকে ঘিরে সবচেয়ে বড় সংঘাতে জড়িয়েছিল। সাবেক এ দুই সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র যুদ্ধ শুরুর জন্য একে অপরকে দায়ীও করছে।
আর্মেনিয়াতে রাশিয়ার একটি সামরিক ঘাঁটি আছে। আজারবাইজানের সঙ্গেও মস্কোর সম্পর্ক ভালো।