মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর চলমান সহিংসতার প্রেক্ষাপটে দেশটির নেতা অং সান সু চির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়িপ এরদোয়ান।
Published : 05 Sep 2017, 10:06 PM
শান্তিতে নোবেলজয়ী দেশটির গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রীর কাছে রোহিঙ্গাদের উপর নিপীড়নে মুসলিম বিশ্বের গভীর উদ্বেগের তুরস্কের প্রেসিডন্ট তুলে ধরেছেন বলে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে।
সেই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে পাঠাবেন বলেও জানান তিনি।
তুরস্কের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের এক সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার টেলিফোন আলাপের সময় এরদোয়ান বলেন, রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতা গণহত্যার শামিল। সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। তাই মুসলিম বিশ্বগভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
রোহিঙ্গাদের উপর সর্বশেষ সহিংসতার শুরু হয় গত ২৪ অগাস্ট থেকে। ওই রাখাইনে পুলিশ পোস্ট ও সেনা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর নতুন করে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এর পর থেকে অন্তত ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বলে ইউএনএইচসিআরের তথ্য।
এর আগে বিভিন্ন সময়ে রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা ও নিপীড়নের মুখে সীমান্ত পেরিয়ে আসা আরও প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। শুধু বাংলাদেশ নয় থাইল্যান্ডসহ আরও কয়েকটি দেশেও তারা আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়া ও তুরস্কের মত মুসলিমপ্রধান দেশগুলো রোহিঙ্গা সংকটের অবসানের পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমারের নেত্রী নোবেলজয়ী সু চির প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে। বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থীর ভার সামলানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশকেও তারা সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সহিংসতা বন্ধের সম্ভাব্য সমাধান ও এই অঞ্চলে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনার বিষয় নিয়েও এরদোয়ান ও সুচির মধ্যে কথা হয়েছে।
সূত্রগুলো বলছে, এরদোয়ান সন্ত্রাসবাদ ও বেসামরিক নাগরিকদের উপর অভিযানের নিন্দা জানান।এভাবে চলতে থাকলে গুরুতর মানবিক সংকট তৈরি হবে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করতে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাসাভুগলুর বুধবার ঢাকা সফরে আসার কথা রয়েছে।
রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের ঘটনায় সবচেয়ে বেশি মুসলিম জনসংখ্যার দেশ ইন্দোনেশিয়ায় তীব্র ক্ষোভ তৈরি হওয়ার প্রেক্ষাপটে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি এর মধ্যে মিয়ানমার সফর করে চলমান সহিংসতা বন্ধে সু চির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধের দাবিতে বেশি কিছুদিন ধরেই ইন্দোনেশিয়ায় বিক্ষোভ হচ্ছে। রোববার জাকার্তায় মিয়ানমারের দূতাবাসের দিকে ককটেল ছোড়ারও ঘটনা ঘটেছে।