Published : 16 Mar 2025, 07:30 PM
ভেনেজুয়েলার গ্যাং ‘ত্রেন দে আরাগুয়া’–এর সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করতে ট্রাম্পের যুদ্ধকালীন আইন ব্যবহারের পদক্ষেপের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন মার্কিন একটি ফেডারেল আদালতের বিচারক।
শনিবার সাময়িকভাবে ট্রাম্পের আদেশ স্থগিত করেন বিচারক জেমস বোয়ার্সবার্গ। এর কয়েক ঘণ্টা আগে ১৭৯৮ সালের ‘বহিঃশত্রু আইন’ ব্যবহার করে ভেনেজুয়েলার গ্যাং সদস্যদের বের করে দিতে চেয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন।
তাদের যুক্তি ছিল, যুক্তরাষ্ট্র অপরাধ চক্রের আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে, যে চক্রটি অপহরণ, চাঁদাবাজি, সংঘবদ্ধ অপরাধ এবং চুক্তিভিত্তিক হত্যাকাণ্ডে জড়িত।
যুদ্ধকালীন আইনের আওতায় একজন প্রেসিডেন্ট কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের টার্গেট করা এবং তাদেরকে দ্রুত ফেরত পাঠানোর বিপুল ক্ষমতা পেয়ে যান।
যুক্তরাষ্ট্র কোনও দেশের সঙ্গে যুদ্ধাবস্থায় থাকলে বা কোনও দেশ যুক্তরাষ্ট্রে আগ্রাসন চালিয়ে বসলে কিংবা আগ্রাসনের হুমকি দিলে সেক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্যই আইনটি তৈরি করা হয়েছে।
কিন্তু বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র কোনও যুদ্ধের মধ্যে বা হুমকির মুখে নেই। এমন একটি শান্তিপূর্ণ সময়ে ট্রাম্প প্রশাসনের যুদ্ধকালীন আইন ব্যবহার করতে চাওয়ার সমালোচনা করেছে সিভিল লিবার্টিজ সংগঠনগুলো।
ট্রাম্প এই আইন ব্যবহার করে অভিবাসন আইনকে পাশ কাটাতে চাইছেন এবং গণহারে অভিবাসী বিতাড়ন করতে চাইছেন বলে অভিযোগ করেছে তারা।
আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন এবং ডেমোক্র্যাসি ফরওয়ার্ড টাম্পের বেআইনিভাবে যুদ্ধকালীন আইন ব্যবহারের বিরুদ্ধে মামলাও করেছে।
অভিযোগনামায় বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে মাত্র তিনবার যুদ্ধকালীন আইন ব্যবহার হয়েছে: ১৮১২ সালের যুদ্ধ, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
কিন্তু এখন এই আইন কোনও দেশের নাগরিকের বিরুদ্ধে ব্যবহার হতে পারে না। কারণ, ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ চলছে না। ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রে আগ্রাসন চালাচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রে তারা ধ্বংসাত্মক কোনও আগ্রাসন শুরুও করেনি।
এই মামলার পরই আদালত ট্রাম্পের আদেশ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। রায়ে বিচারক বলেছেন, আইনটি কেবল শত্রু দেশের আক্রমণ মোকাবেলার জন্য প্রনয়ণ করা হয়েছিল, যা কেবল যুদ্ধের সময়েই প্রয়োগ হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে আইনটির ব্যবহার গ্রহণযোগ্য নয়।
এই স্থগিতাদেশের ফলে ট্রাম্প ১৪ দিন তার আদেশ বাস্তবায়ন করতে পারবেন না।
এর আগে হোয়াইট হাউজ শনিবার প্রেসিডেন্টের একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করে জানিয়েছিল, ভেনেজুয়েলার ত্রেন দে আরাগুয়া একটি কুখ্যাত বিদেশি সন্ত্রসিী সংগঠন। তাদের হাজারো সদস্য রয়েছে। যাদের বেশিরভাগই বেআইনিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রে মাঝেমধ্যেই লড়াই-সংঘাতে লিপ্ত হচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বৈরি কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।”