তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চীন সকালে এবং বিকালে যৌথ যুদ্ধ প্রস্তুতি টহল চালিয়েছে। এতে ৫৪টি চীনা যুদ্ধবিমান এবং ড্রোন তাইওয়ানের কাছ দিয়ে উড়েছে।
Published : 18 Mar 2025, 12:38 AM
তাইওয়ানের কাছে সোমবার সামরিক মহড়া চালিয়েছে চীন। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই ছিং-তের বিচ্ছিন্নতাবাদ প্রচারের শাস্তি হিসাবেই এ মহড়া চালানো হয়েছে বলে কড়া ভাষার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে বেইজিং।
চীনকে ‘সমস্যা সৃষ্টিকারী’ আখ্যা দিয়ে তাইওয়ানও এর পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
চীন স্বায়ত্তশাসিত তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড বলে দাবি করে এবং প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করে তাইওয়ান দখলে নেওয়ার সম্ভাবনাও নাকচ করেনি। অন্যদিকে, তাইওয়ান নিজেদের স্বতন্ত্র পরিচয় বজায় রাখতে চায়।
সম্প্রতি কয়েক বছরে তাইওয়ানের বিরুদ্ধে সামরিক এবং রাজনৈতিক চাপ বেড়েছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চীন সকালে এবং বিকালে যৌথ যুদ্ধ প্রস্তুতি টহল পরিচালনা করেছে। এ মহড়ায় ৫৪টি চীনা যুদ্ধবিমান এবং ড্রোন তাইওয়ানের কাছ দিয়ে উড়েছে।
বিমানগুলো তাইওয়ানের উত্তর, পশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিম এবং পূর্ব আকাশসীমায় উড়েছে। আর তাইওয়ানের বিমান ও নৌবাহিনীকে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করতে পাঠানো হয়েছিল।
এর মধ্যে ৪২টি বিমান তাইওয়ান প্রণালীর মধ্যরেখা (দুই পক্ষের মধ্যকার অনানুষ্ঠানিক বাফার জোন) অতিক্রম করেছে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
এ নিয়ে চীনের তাইওয়ান বিষয়ক দপ্তরের এক মুখপাত্র হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “লাই প্রশাসন যদি উসকানি দেয় এবং আগুন নিয়ে খেলার সাহস দেখায় তবে এটি কেবল তাদের ধ্বংসই ডেকে আনবে।”
রয়টার্স লিখেছে, তাইওয়ান প্রায়ই চীনের সামরিক তৎপরতার খবর প্রকাশ করে, তবে এসব বিষয়ে বেইজিং সাধারণত প্রকাশ্যে মন্তব্য করে না।
তাইওয়ানের ‘মেইনল্যান্ড অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল’ বলেছে, বেইজিং দ্বীপটির বিরুদ্ধে সামরিক হুমকি অব্যাহত রেখেছে; যা তাইওয়ান প্রণালীতে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বিপন্ন করছে।
তারা চীনা কমিউনিস্ট পার্টিকে ‘প্রকৃত অশান্ত সৃষ্টিকারী’ উল্লেখ করে মিত্র দেশগুলোকে চীনের সামরিক সম্প্রসারণ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে, তাইওয়ানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চীন দ্বীপটির আশপাশে নিয়মিত সামরিক মহড়া চালানোর চেষ্টা করছে এবং প্রতি ৭-১০ দিন পরপর সামরিক টহল দিচ্ছে।
গত সপ্তাহে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই বলেন, চীন দ্বীপটির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার ও অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টা জোরদার করেছে। তিনি বেইজিংয়ের “তাইওয়ানকে শোষণের” প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
বেইজিং তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে দাবি করে, তবে তাইপে সরকার সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
প্রেসিডেন্ট লাই বারবার বেইজিংয়ের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিলেও প্রতিবারই চীন তা প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি বলেছেন, শুধুমাত্র তাইওয়ানের জনগণই তাদের ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত নিতে পারে।