পশ্চিমা কয়েকজন নেতা গাজায় হাসাপাতালে হামলা প্রসঙ্গে বাইডেনের মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন।
Published : 18 Oct 2023, 09:01 PM
হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইসরায়েলকে সমর্থন জানাতে বুধবার তেল আবিব পৌঁছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেখানে পৌঁছেই তিনি গাজার একটি হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দায় ইসরায়েলের শত্রুপক্ষের উপর চাপান।
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুকে পাশে নিয়ে বুধবার তিনি বলেন, “গতকাল গাজায় হাসপাতালে যে বিস্ফোরণ হয়েছে তাতে আমি গভীরভাবে দুঃখিত এবং ক্ষুব্ধ হয়েছি, এবং আমি যা দেখেছি তার উপর ভিত্তি করে মনে হচ্ছে এটি অন্য দল করেছে, আপনি এজন্য দায়ী নন।”
মঙ্গলবার রাতে গাজার আল-আহলি আল-আরাবি হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হামলায় ৪৭১ জন নিহত হয়েছে বলে বুধবার জানিয়েছে ফিলিস্তিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আহত হয়েছে ৩১৪ জন।
ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের দাবি, ইসরায়েল ওই হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে, ইসরায়েল বলছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাসের একটি ব্যর্থ রকেট হামলার কারণে হাসপাতালে বিস্ফোরণ ঘটেছে। হামাস ইসরায়েলের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
গাজার হাসপাতালে হামলার পর আরব নেতারা বাইডেনের সঙ্গে তাদের পরিকল্পিত শীর্ষ বৈঠক বাতিল করে দিয়েছে। হামাস-ইসরায়েল সংঘাতের বিষয়ে আলোচনার জন্য হোয়াইট হাউজ থেকে মধ্যপ্রাচ্যে জরুরি কূটনৈতিক মিশনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
মূলত ওই অঞ্চলে কিভাবে শান্তি ফেরানো যায় তা নিয়ে আলোচনার জন্যই বাইডেনের এই মধ্যপ্রাচ্য সফর সাজানো হয়েছিল।
গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলি বিমান হামলা, নিহত কয়েকশ
ওআইসির প্রতি ইসরায়েলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান ইরানের
এজন্য ইসরায়েল থেকে বাইডেনের জর্ডান যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গাজায় হাসপাতালে ভয়াবহ ওই হামলার পর জর্ডানের আম্মানে বাইডেনের সঙ্গে জর্ডান, মিশর ও ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের পরিকল্পিত বৈঠক বাতিল করে দেয় জর্ডান সরকার।
এদিকে ‘দ্ব্যর্থহীন সমর্থন’ দিয়ে যাওয়ার জন্য বাইডেনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, “বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে যেতে ইসরায়েল যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।”
জবাবে বাইডেন বলেন, “আপনি যখন আপনার জনগণের সুরক্ষায় কাজ করবেন তখন যুক্তরাষ্ট্রকে সব সময়ই ইসরায়েলের পেছনে পাবেন।”
কোনো তদন্ত ছাড়াই হুট করে ‘ইসরায়েল গাজার হাসপাতালে হামলার জন্য দায়ী নয়’ বলে যে মন্তব্য বাইডেন করেছেন তা পশ্চিমা অনেক নেতার পছন্দ হয়নি। তারা বাইডেনকে মন্তব্য করার বিষয়ে আরো সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স এ ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি লেখেন, “গতরাতে আল আহলি হাসপাতালে দুঃখজনক যে প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে কেউ কেউ লাফিয়ে পড়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিচ্ছেন।
“এমন ভুলভাল কথা এমনকি আরো অনেক মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিতে পারে। তথ্যের জন্য অপেক্ষা করুন, স্পষ্ট এবং সঠিকভাবে রিপোর্ট করুন। মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে।"
জাতিসংঘের মহাসচিব থেকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ অনেক বিশ্বনেতা গাজায় হাসপাতালে হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন। কিন্তু তারা কেউই এ হামলার দায় কার তা নিয়ে মন্তব্য করেননি।